শনিবার , ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ , ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ , ১০ই শাওয়াল, ১৪৪৫

হোম > তথ্যপ্রযুক্তি > সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধে ফিল্টারিং প্রযুক্তি

সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধে ফিল্টারিং প্রযুক্তি

শেয়ার করুন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধে বিশেষ উদ্যোগ নিচ্ছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি। প্রায় তিন কোটি ইন্টারনেট আর ৩ লাখের বেশি ফেসবুক ব্যবহারকারীর ওপর নজরদারি বসাতে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। এরই অংশ হিসেবে ইন্টারনেটে নজরদারি (ফিল্টারিং) প্রযুক্তি বসানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এজন্য সাতটি প্রতিষ্ঠানকে বাছাই করেছে বিটিআরসি। ওই সাত প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ছয়টি বাংলাদেশের, একটি হংকংয়ের। সমপ্রতি বিটিআরসি পরিচালক (স্পেকট্রাম ম্যানেজমেন্ট) লেফটেন্যান্ট কর্নেল  মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন স্বারিত এক চিঠিতে যোগ্য প্রতিষ্ঠানগুলোর নাম উল্লেখ করা হয়। এ প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে ক্রয় প্রক্রিয়ার পরবর্তী ধাপ হিসেবে আরএফপি (বিস্তারিত প্রস্তাব আহ্বান) পাঠাবে বিটিআরসি।  যোগ্য বিবেচিত প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে- বেইজ টেকনোলজিস, পার্কি গ্লোবাল লিমিটেড, ইজি কমিউনিকেশন লিমিটেড, প্যানাসিয়া সিস্টেম লিমিটেড, ইনফ্রা বিল্ডার্স, আইটি কনসালটেন্ট লিমিটেড এবং হংকংয়ের সেমটিয়ান ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড। প্রতিটি ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট  গেটওয়েতে (আইআইজি) বিশেষ প্রযুক্তি বসানোর পর ইন্টারনেটের নজরদারি বা নিয়ন্ত্রণের মূল মতা থাকবে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি’র হাতে। এ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে বাংলাদেশ  টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) গত ৮ই এপ্রিল আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে ‘ইন্টারনেট সেফটি সলিউশন’  চেয়ে ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপন  দেয়। আগ্রহপত্র জমা দেয়ার শেষ দিন ছিল ২০শে মে। এতে নয়টি প্রতিষ্ঠানের সাড়া মিললেও সাতটিকে বাছাই করা হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, এতদিন সাইবার ক্রাইম নিয়ে খুব বেশি মনোযোগ দেয়া না হলেও এবার বিষয়টি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফেসবুক ও ব্লগ বন্ধ নিয়ে বিটিআরসি’র ওপর একদিকে রয়েছে সরকারের উপর মহলের চাপ, অন্যদিকে রয়েছে রাজনৈতিক দলগুলোর আলটিমেটাম। এরই মধ্যে ইসলামপন্থি বেশ ক’টি দল ফেসবুক ও ব্লগে ধর্ম নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য রুখতে জোর দাবি জানিয়েছে। কোন কোন দল এ নিয়ে বেশ কিছু কর্মসূচিও পালন করেছে। এসব নিয়ে অনেকটা চাপের মুখে পড়ে বিটিআরসি। প্রতিষ্ঠানটির প থেকে জানানো হয়েছে, সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধে যে ধরনের দ লোকবল ও যন্ত্রপাতি প্রয়োজন তার সীমাবদ্ধতা রয়েছে। গত বছর ২৫শে জানুয়ারি সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধে একটি বিশেষ টিম গঠন করে প্রতিষ্ঠানটি। বাংলাদেশ কম্পিউটার সিকিউরিটি ইনসিডেন্ট  রেসপন্স টিম (বিডি-সিএসআইআরটি) নামে এই টিম  সে সময় থেকে সাইবার ক্রাইম শনাক্তে কাজ শুরু করে। রাষ্ট্রীয়, সমাজ, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ায়- ওয়েবসাইটগুলোতে এমন বিষয় শনাক্ত করে ব্যবস্থা  নেয়াই এই দলের মূল কাজ। সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধে বিটিআরসি’র তিন জন সাইবার ক্রাইম (বিটিআরসি সহকারী পরিচালক পদমর্যাদা) বিশেষজ্ঞ পুরোদমে কাজ করছেন। ওই কমিটি গঠন হওয়ার পর ১২টি  ফেসবুক পেজ ও ব্লগ বন্ধ করে দেয়া হয়। সংশ্লিষ্টরা জানান, ফেসবুক পেজ নিয়ে অনেকটা অসহায় বিটিআরসি। আপত্তিকর পেজ বন্ধে বিটিআরসি ফেসবুক কর্তৃপকে জানালে সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে দীর্ঘ সময় পার হয়ে যায়। কারণ সব কিছু নির্ভর করে ফেসবুক কর্তৃপরে ওপর, তারা চাইলে বন্ধ করে আবার না-ও করতে পারে। তবে কোন পেজ বন্ধ করে দিলেও আপত্তিকর প্রচারণাকারী আবার সেই ধরনের পেজ খুলে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে।
গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলা নিয়ে কড়াকড়ি
গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে কথা বলা নিয়ে প্রশাসনিকভাবে কড়াকড়ি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিটিআরসি। বিষয়টি নিয়ে বৈঠকেও বসে প্রতিষ্ঠানটি। এতে বিটিআরসি’র কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মৌখিকভাবে কথা না বলার নির্দেশনা দেয়া হয়। ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, চেয়ারম্যান, ভাইস-চেয়ারম্যান, কমিশনার ও জনসংযোগ কর্মকর্তা ছাড়া আর কেউই গণমাধ্যমে কোন তথ্য দিতে পারবেন না কিংবা কথা বলতে পারবেন না। তবে বিশেষ প্রয়োজনে চেয়ারম্যান কর্তৃক নির্দেশিত হয়ে বক্তব্য দেয়া যাবে বলে সিদ্ধান্ত হয়। এসব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেয়া হয় প্রতিষ্ঠানটির প্রশাসন বিভাগকে। সুনীল কান্তি বোস স্বারিত গত ১২ই জুনের কার্যবিবরণীতে এ তথ্য পাওয়া যায়। বৈঠকে বলা হয়, বিটিআরসি টেলিযোগাযোগ খাতের বিভিন্ন নীতিমালা, আইন, ট্যারিফসহ এ সংক্রান্ত বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে থাকে। সমপ্রতি ল্য করা যাচ্ছে, এসব সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করার আগেই এ নিয়ে সকল তথ্য বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে। এর ফলে কমিশনকে অহেতুক বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এতে আরও বলা হয়, কতিপয় সাংবাদিক কর্তৃপরে অনুমতি ব্যতীত কমিশনের বিভিন্ন শ্রেণীর কর্মকর্তা-কর্মচারীর কাছ থেকে তথ্য, সংবাদ সংগ্রহ করে গণমাধ্যমে প্রকাশ করছে। ফলে মাঝে-মধ্যে গণমাধ্যমে অসত্য, অসমপূর্ণ ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্য প্রকাশিত হচ্ছে- যা কোনভাবেই কাম্য হতে পারে না।