বুধবার , ১৭ই এপ্রিল, ২০২৪ , ৪ঠা বৈশাখ, ১৪৩১ , ৭ই শাওয়াল, ১৪৪৫

হোম > রাজনীতি > সাধরণ মানুষের বিশেষ কিছু পাবার নেই : অধ্যাপক লুৎফুর রহমান

সাধরণ মানুষের বিশেষ কিছু পাবার নেই : অধ্যাপক লুৎফুর রহমান

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি ডেস্ক ॥
বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল অব্দুল মুহিত ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরের বাজেট জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করেছেন। প্রস্তাবিত এই বাজেটে অনেক পণ্য ভ্যাটের আওতার বাইরে রাখা হয়েছে। কমানো হয়েছে করপোরেট করও।

এবারের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ৪ লাখ কোটি টাকারও বেশি। কিন্তু এই বাজেট থেকে সাধারণ মানুষ কি পাবে এ বিষয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক লুৎফুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বাজেটে সাধারণ মানুষের জন্য বড় ধরনের কোন আশার কিছু দেখা যাচ্ছে না। কারণ, বাজেটের আকার বেড়ে যাওয়ার মানে হলো সরকারকে সেই পরিমাণ আয় করতে হবে। যার ফলে ধরে নিতে হবে আমাদের সাধারণ মানুষের আয় বেড়েছে। সাধারণ মানুষের আয় যদি বাড়ে তাহলে কর্মকৃত আয়ের সীমাটাও বাড়ানো উচিত ছিলো। কিন্তু আমরা এখানে দেখতে পাচ্ছি কর্মকৃত আয় আড়াই লাখের মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছে। আর এটা অনেককেই পীড়া দিয়ে থাকবে।

অধ্যাপক লুৎফুর রহমান বলেন, বাজেটে আমরা দেখচ্ছি শিক্ষা-প্রযুক্তি খাতে সবচেয়ে বেশি ব্যয়, ১৬.৪%। আদৌ কি আমাদের সাধারণ মানুষের যে শিক্ষা, প্রাথমিক, মাধ্যমিক বা কারিগরি শিক্ষা তাতে বাজেটের এই বড় অংশটা ব্যয় হবে কিনা সেটা প্রশ্ন সাপেক্ষ। কারণ শিক্ষাখাতে সামরিক খাতের শিক্ষা ও প্রযুক্তিও অন্তর্ভুক্ত।

অনেক পণ্য ভ্যাটের আওতার বাইরে রাখা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমার মনে হয় ভ্যাটের ক্ষেত্রে সরকার যে ছাড়গুলো দিয়েছে, বিশেষ করে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য- চাল, ডাল, চিনি, দেশীয় শিল্পসুরক্ষার জিনিশগুলো ভ্যাটের আওতামুক্ত থাকবে। এছাড়াও সাধারণ মানুষ যেসব হোটেল রেস্তরায় খেতে যায় সেইগুলো ভ্যাটের আওতা মুক্ত। এছাড়া একটা জিনিষ লক্ষনীয়- সরকার একটি নির্দিষ্ট অংকের টার্নওভারের ক্ষেত্রে একটা টার্গেট দিয়ে দিয়েছে। ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা পর্যন্ত যারা ব্যবসায়ীক লেন-দেন করে তাদের একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা দিলেই হবে। অর্থাৎ তাদের ক্ষেত্রে ১৫ ভাগ ভ্যাট কার্যকর নয়। আমি এক্ষেত্রে একটু সন্দিহান যে, সত্যিকারার্থে এই উপকারটা সাধারণ মনুষ পাবে কিনা। যদি সাধারণ মানুষ পায় তাহলে অনেক ভালো হবে।

আবগারি শুল্ক প্রসঙ্গে লুৎফুর রহমান বলেন, আমি একটু অবাক হয়েছি, যেখানে বাংলাদেশসহ পুরো বিশ্ব বিভিন্ন ধরনের আর্থিক অসামঞ্জস্যতার ভিতর দিয়ে যাচ্ছি, অর্থাৎ জঙ্গি থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের অর্থায়নের কথা বলে মানুষদেরকে উৎসাহিত করছি। আমাদের প্রপার চ্যানেলের মধ্যে টাকা হস্তান্তর করা, বিশেষকরে প্রত্যেকের যেন ব্যাংক একাউন্ট থাকে এবং ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা লেনদেন করে। এক্ষেত্রে মাত্র ১ লাখ টাকা যাদের ব্যাংকে জমা থাকবে তার উপর যে আবগারি শুল্ক ৮শ’ বসিয়েছে, সেটা খুবই ঋণাত্মক প্রভাব পড়বে অর্থনীতিতে। আমি মনে করি এটা ভালো সিদ্ধান্ত হবেনা সরকারের জন্য। সার্বিকভাবে বাজেট নিয়ে অনেক সমালেচনা থাকবে, অনেক আশাবাদের কথা থাকবে। তবে আমি মনেকরি- বাংলাদেশ যেহেতু অগ্রসরমান অর্থনীতির একটি দেশ সেক্ষেত্রে বাজেটের আকার ঠিক আছে। কিš‘ শেষবেলায় দেখতে হবে যে সত্যিকারার্থে বাজেটটা আমরা কতটুকু বাস্তবায়ন করতে পারি।

তথ্যসূত্র : বিবিসি থেকে নেয়া