শনিবার , ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ , ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ , ১০ই শাওয়াল, ১৪৪৫

হোম > গ্যালারীর খবর > সামাজিক অগ্রযাত্রা রুখতেই মৌলবাদীদের নারীবিরোধী কর্মসূচি

সামাজিক অগ্রযাত্রা রুখতেই মৌলবাদীদের নারীবিরোধী কর্মসূচি

শেয়ার করুন

লন্ডন করেসপন্ডেন্ট ॥ আধুনিক সমাজের অগ্রযাত্রা রুখতেই মৌলবাদীরা ১৩ দফার নামে নারী বিরোধী কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নেমেছে। আর তাদের এ তৎপরতাকে সমর্থন দিচ্ছে দেশের নারীবিরোধী পুরুষদের একটি অংশ।

বৃহস্পতিবার লন্ডনে হল্যান্ডভিত্তিক সংগঠন দ্য ইন্টারন্যাশনাল কমিটি ফর ডেমোক্রেসি ইন বাংলাদেশ (আইসিডিবি) এবং একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি (ইন্টারন্যাশনাল ফোরাম ফর সেক্যুলার বাংলাদেশ) যুক্তরাজ্য শাখার যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘ডেমোক্রেসি, ওয়ারক্রাইম ট্রায়াল অ্যান্ড শাহবাগ মুভমেন্ট’ শীর্ষক এক কনফারেন্সে অন্যতম মূল আলোচকের বক্তৃতায় সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা মানবাধিকার কর্মী সুলতানা কামাল উপরোক্ত মন্তব্য করেন।

পূর্ব লন্ডনের মন্টিফিউরি সেন্টারে অনুষ্ঠিত এ কনফারেন্সে আরও দুই মূল আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নির্বাহী সভাপতি শাহরিয়ার কবির ও সারভাইব্যাল ফাউন্ডেশনের পরিচালক ডেভিড রাসেল। কনফারেন্স সঞ্চালনায় ছিলেন আইসিডিবি’র প্রেসিডেন্ট হল্যান্ডের নাগরিক ড. পিটার কাস্টার।

অনুষ্ঠানে মূল আলোচকদের বক্তৃতা পর্বের শেষে ছিল উপস্থিত সুধীজনের প্রশ্নোত্তর পর্ব। এতে গণজাগরণ মঞ্চ, যুক্তরাজ্যের নেতাকর্মীরা ছাড়াও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণকারী বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

অন্যতম মূল আলোচকের বক্তৃতায় সুলতানা কামাল আরও বলেন, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকই নারী। এই নারীদের যদি গৃহবন্দি করে রাখা যায় তবে পুরো সামাজিক অগ্রযাত্রাই রুখে দেওয়া সম্ভব। এমন চিন্তা থেকেই মৌলবাদীরা নারীবিরোধী ১৩ দফা নিয়ে মাঠে নেমেছে।

তিনি বলেন, আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশও অবিরত হাঁটছে। এই হাঁটা কতিপয় মৌলবাদী গোষ্ঠি স্তব্ধ করে দেবে, মুক্তিযুদ্ধ করা জাতি হিসেবে বাঙালি এটি কখনই মেনে নিতে পারে না। আর তাই মৌলবাদীদের এ অপতৎপরতা রুখতে সচেতন সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

সুলতানা কামাল দু:খ প্রকাশ করে বলেন, নারী বিদ্বেষী একটি গোষ্ঠি, যারা আধুনিকতার লেবাস ধরে সমাজে চলাফেরা করেন তারাও মৌলবাদীদের নারী বিদ্বেষী কর্মসূচিকে সমর্থন দিচ্ছেন। তাদের বুঝতে হবে, পশ্চাৎপদতা আর আধুনিকতা একসঙ্গে চলতে পারে না। আলো ও অন্ধকার দু’পক্ষকে হাতে রেখে সুস্থ রাজনীতিও করা যায় না।

আরেক মূল আলোচক একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নির্বাহী সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেন, একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও বিচারের রায় কার্যকর না হওয়া পরযন্ত বাংলাদেশে মৌলবাদীদের তাণ্ডব চলবেই। সুতরাং এ বিচার ও বিচারের রায় যাতে যতো দ্রুত সম্ভব কার্যকর হয় সে জন্যে আমাদের মাঠে থাকতে হবে। কয়েকজন যুদ্ধাপরাধীর বিচার ট্রাইব্যুনালে সম্পন্ন হওয়ার পর সুপ্রীম কোর্টে গিয়ে এর নিষ্পত্তি প্রক্রিয়া অনেকটা শ্লথ হয়ে গেছে।

এক্ষেত্রে সরকারের ভূমিকা সম্পর্কে অনুষ্ঠানের প্রশ্নদাতাদের উত্তর দিতে গিয়ে শাহরিয়ার কবির বলেন, আপিল নিষ্পত্তির জন্যে সরকার একটি নির্ধারিত সময় বেধে দিলেও সুপ্রিম কোর্ট বলছেন, এটি সরকারের এখতিয়ারের বিষয় নয়। উচ্চ আদালত তার নিয়মেই আপিল নিষ্পত্তি করবেন। সরকার ও উচ্চ আদালতের এ মতপার্থক্যের কারণেই হয়তো দণ্ডপ্রাপ্ত যুদ্ধপরাধীদের আপিল নিষ্পত্তি কার্যক্রম শ্লথ হয়ে গেছে।