বৃহস্পতিবার , ১৮ই এপ্রিল, ২০২৪ , ৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ , ৮ই শাওয়াল, ১৪৪৫

হোম > Uncategorized > সিরিয়ার উত্তেজনা রাশিয়ায় মুখোমুখি বসবেন না ওবামা-পুতিন

সিরিয়ার উত্তেজনা রাশিয়ায় মুখোমুখি বসবেন না ওবামা-পুতিন

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥ সিরিয়ার উত্তেজনা এখন রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবুর্গে। শীতল যুদ্ধের পর থেকে এই প্রথমবার যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। রাশিয়ার এ শহরে শুরু হয়েছে ২০ জাতির শীর্ষ সম্মেলন জি-২০। এই সম্মেলনে সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে সামরিক হামলার প্রসঙ্গ প্রাধান্য পাবে। তাই একেবারে মুখোমুখি বা পাশাপাশি যাতে বসতে না হয়, উত্তেজনা যাতে প্রশমন করা যায়, তাই শেষ সময়ে এ সম্মেলনে সিট প্লান বা আসন ব্যবস্থা পরিবর্তন করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের আসন আগের অবস্থান থেকে সরানো হয়েছে, যাতে তাদের মধ্যে দূরত্ব থাকে। এসব আয়োজনের কারণ, ওই সিরিয়া হামলা। সিরিয়ায় সামরিক হামলা চালাতে মুখিয়ে আছে যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স ও তাদের কিছু মিত্র। কিন্তু এতে সায় দিচ্ছেন না ভ্লাদিমির পুতিন। সর্বশেষ তিনি বলেছেন, সিরিয়ায় হামলা চালানো হলে তাতে পারমাণবিক বিপর্যয় সৃষ্টি হবে। সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ তার জনগণের ওপর রাসায়নিক অস্ত্র (সারিন গ্যাস) ব্যবহার করেছেন এ মর্মে অকাট্য প্রমাণ না পেলে পুতিন সিরিয়া হামলার বিপক্ষে। এ নিয়ে ওয়াশিংটন ও ক্রেমলিনের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে নতুন এক ঠাণ্ডা লড়াই। সেই লড়াই এবার আক্রান্ত করেছে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনকে। এ সম্মেলন মূলত বিশ্বের অর্থনীতি নিয়ে আয়োজন করা হয়েছে। কিন্তু সে প্রসঙ্গ ঢাকা পড়ে যাচ্ছে সিরিয়া ইস্যুতে। জি-২০ সম্মেলন শুরুর আগে মস্কোতে পুতিনের সঙ্গে পূর্বনির্ধারিত একটি মিটিং বাতিল করেছেন বারাক ওবামা। ফলে উত্তেজনার পারদ যে উপরের দিকে উঠছে তা স্পষ্ট। গতকাল শুরু হওয়ার কথা রয়েছে এ সম্মেলন। এর আগেই ভ্লাদিমির পুতিন যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করেছেন। বলেছেন, জাতিসংঘের অনুমোদন ছাড়া সিরিয়ায় হামলা চালানো হলে তা হবে আগ্রাসন। গতকাল লন্ডনের ডেইলি মেইল লিখেছে, এ নিয়ে শীতল যুদ্ধের পর দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক সর্বনিম্ন অবস্থানে এসে দাঁড়িয়েছে। পুতিন যা-ই বলুন, প্রেসিডেন্ট ওবামা স্পষ্ট করে বলছেন, সিরিয়া যে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করেছে, প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ নীতি লঙ্ঘন করেছেন তার বিশ্বাসযোগ্যতা রয়েছে আন্তর্জাতিক সমপ্রদায়ের কাছে। এবার জি-২০ শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে পিটার্সবুর্গের কনস্টানটিনে প্যালেসে। এতে যোগ দিতে গতকাল সকালে গিয়ে রাশিয়া পৌঁছেন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। গত সপ্তাহে বৃটিশ হাউজ অব কমনস সিরিয়ায় হামলা চালানো নিয়ে তার প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছে। তা নিয়ে তাকে নানা রকম প্রশ্নের মুখে পড়তে হতে পারে। প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সঙ্গে তিনিও গাঁটছড়া বেঁধে নামতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পার্লামেন্টের ওই সিদ্ধান্তের কারণে তিনি আর এ উদ্যোগে শরীক হতে পারছেন না। আনুষ্ঠানিকভাবে এ সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট ওবামার সঙ্গে হচ্ছে না তার কোন দ্বিপক্ষীয় বৈঠকও। ওদিকে, প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা সিরিয়ায় হামলা চালাতে প্রথম বাধা পার হয়েছেন। বুধবার রাতে তিনি কংগ্রেসের প্রথম সমর্থন পেয়েছেন। সিনেট ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটি তাকে এই সমর্থন দিয়েছে। সেখানে সিরিয়ায় হামলা প্রশ্নে তাকে সমর্থন করে ভোট দিয়েছেন ১০ জন। বিরোধিতা করেছেন ৭ জন। এ প্রস্তাবে সিরিয়ায় ৬০ দিনের জন্য সেনা পাঠানোর কথা বলা হয়েছে। তবে তা প্রয়োজন হলে ৩০ দিন বাড়ানো যেতে পারে। এ বিষয়ে প্রেসিডেন্ট ওবামা বলেছেন, সিরিয়া ইস্যুতে কংগ্রেস তাকে অনুমোদন দেবে বলে তিনি আস্থাশীল। সিরিয়ার সরকার সারিন গ্যাস ব্যবহার করেছে এ বিষয়ে তিনি নিশ্চিত। হোয়াইট হাউজের দাবি এতে কমপক্ষে ১৪০০ মানুষ নিহত হয়েছে। এর মধ্যে ৪০০ শিশু। ওদিকে জি-২০ নিয়ে রিপোর্টে লন্ডনের দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট লিখেছে, জি-২০ সম্মেলন যে উদ্দেশ্যে শুরু হয়েছে সে বিষয়কে ছাপিয়ে উঠবে সিরিয়া সঙ্কট। এতে আন্তর্জাতিক এ সম্মেলন অস্বস্তিকর হয়ে উঠতে পারে। আর এর মধ্যমণি হয়ে উঠতে পারেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সবার নজর থাকবে তাদের দিকে। এর আগে এ দুই নেতার মধ্যে পরিকল্পিত একটি পৃথক সম্মেলন আয়োজন করা হয়েছিল কয়েক সপ্তাহ আগে। ওয়াশিংটন-এর আয়োজক হলেও তা বাতিল করা হয়েছিল। ওদিকে সিরিয়ার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল আলী হাবিব প্রেসিডেন্ট বাশারের পক্ষ ত্যাগ করে তুরস্কে গিয়েছেন। সেখানে তিনি বিরোধীদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন।