শুক্রবার , ২৯শে মার্চ, ২০২৪ , ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ , ১৮ই রমজান, ১৪৪৫

হোম > Uncategorized > হেফাজত নির্বাচনে কোন জোটে শরিক হবে না

হেফাজত নির্বাচনে কোন জোটে শরিক হবে না

শেয়ার করুন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আগামী সংসদ নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যেও শক্তিশালী নির্বাচনী জোট গড়ে তোলার চেষ্টা করছে ক্ষমতাসীন ও ক্ষমতাপ্রত্যাশী বড় দুই দলই। এমনকি সম্ভাব্য আসন বণ্টন নিয়েও প্রাথমিক পর্যায়ে কথাবার্তা হচ্ছে। নির্বাচন সামনে রেখে ১৪ দল সমপ্রসারণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ মাসেই ১৪ দলের সভা আহ্বান করা হবে। বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর জেপি এবং আ.স.ম রবের নেতৃত্বাধীন জাসদকে ১৪ দলে সম্পৃক্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টিকে ১৪ দলে আনার জোর চেষ্টা করা হলেও আদর্শিক কারণেই সিপিবি’র এতে শরিক হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। জাসদ (রব)-এর ব্যাপারে ১৪ দলের বড় শরিকের অনাগ্রহ রয়েছে। আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য মোহাম্মদ নাসিম বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল রাজনৈতিক দলকেই আমরা এক প্লাটফরমে আনার চেষ্টা করছি।
বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী ও আ.স.ম রবের সঙ্গে বিএনপির নেতাদের বিচ্ছিন্ন কথাবার্তা হলেও জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে ১৮ দলীয় জোটে শরিক হতে তাদের সীমাবদ্ধতার কথা জানানো হয়েছে। একই অবস্থা আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর জেপি’র। বিএনপি’র পক্ষে জামায়াতকে ছাড়া সম্ভব নয় বলে তাদের ১৮ দলে যাওয়াটাও অনিশ্চিত।
এদিকে সাবেক প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ মহাজোট ত্যাগ করার ব্যাপারে সিদ্ধান্তে এসেছেন বলে জাতীয় পার্টির শীর্ষস্থানীয় দু’জন নেতা জানিয়েছেন। এরশাদের ঘনিষ্ঠ এই নেতারা বলেন, পরাজয়ের, বিশেষ করে সরকার গঠন করার মতো আসনে জয়ী না হওয়ার সম্ভাবনাময় কারও সঙ্গে এরশাদ যাবেন না। আওয়ামী লীগের আগামীতে ক্ষমতায় আসার ক্ষীণতম সম্ভাবনাও না থাকার ব্যাপারে এরশাদের আঞ্চলিক মিত্রও ধারণা করছে। এরশাদের মহাজোটে থাকা না থাকার ব্যাপারেও তাদের সামপ্রতিক মনোভাব নমনীয়। পার্টি ভাঙার ঝুঁকিও তিনি শেষ বেলায় নিতে চান না।
বিএনপি’র নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটে এরশাদের শরিক হওয়ার বিষয়টিও নিশ্চিত নয়। এরশাদকে নিয়ে বিএনপি নেতৃত্বের আস্থাহীনতা রয়েই গেছে। সর্বশেষ গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এরশাদের ভূমিকাকে তারা মেনে নেননি। হেফাজতে ইসলামও যাতে এরশাদের দিকে না ঝোঁকে সে ব্যাপারে সতর্ক রয়েছেন বিএনপি’র নেতৃবৃন্দ। ১৮ দলীয় জোটে থাকা হেফাজত নেতাদের সঙ্গে তাদের নিয়মিত কথা হয়। হেফাজত, চরমোনাইর পীরের ইসলামী আন্দোলন, খেলাফত মজলিসসহ ইসলামী দলগুলোকে নিয়ে নির্বাচনী জোট করতে উদ্যোগী হয়েছেন এরশাদ। হেফাজতের কয়েকজন নেতার সঙ্গে তার কথা হয়েছে। তারা অবশ্য এর আগেই বিএনপির সঙ্গে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হওয়ার কথা জানিয়েছেন। হেফাজত রাজনৈতিক দল নয়। রাজনৈতিক দল হিসেবে নিজেদের আত্মপ্রকাশ ঘটাতেও চায় না। হেফাজত নির্বাচনে কোন দল বা জোটে শরিক হবে না। নিজস্ব নির্দলীয় অবস্থানে থেকেই তারা আন্দোলন, নির্বাচনে বিএনপিকে সমর্থন দেয়ার কথা বিএনপি নেতাদের জানিয়েছেন।
জাতীয় পার্টির দু’জন জাতীয়তাবাদী নেতার মাধ্যমে এবং তৃতীয় মাধ্যমেও বিএনপি’র সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা করছেন এরশাদ। বিএনপি নেতাদের কাছে আগামী নির্বাচনে তারা জাতীয় পার্টিকে সত্তরটি আসন দেয়ার কথাও বলেছেন। বিএনপি’র দিক থেকে এ নিয়ে যথাসময়ে আলোচনার কথা জানিয়ে এরশাদের ওপর আস্থা রাখতে না পারার কথা বলা হয়েছে। এ পর্যায়ে বিএনপি এরশাদের জাতীয় পার্টির সঙ্গে ফাংশনাল সম্পর্ক রাখার পক্ষে। এদিকে বিএনপি ভেতরে ভেতরে নির্বাচনী প্রস্তুতি যেমনি নিচ্ছে, সরকারকে অন্তর্র্বতী নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় বাধ্য করার লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে কার্যকর চাপ প্রয়োগের উপরও তেমন গুরুত্ব দিচ্ছে।