বৃহস্পতিবার , ২৮শে মার্চ, ২০২৪ , ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ , ১৭ই রমজান, ১৪৪৫

হোম > রাজনীতি > হেরে যাওয়ার ভয়ে ক্ষমতাসীনরা সুষ্ঠু নির্বাচনের চিন্তা করে না: নাজমুল হুদা

হেরে যাওয়ার ভয়ে ক্ষমতাসীনরা সুষ্ঠু নির্বাচনের চিন্তা করে না: নাজমুল হুদা

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি ডেস্ক ॥
বাংলাদেশ জাতীয় জোট (বিএনএ) চেয়ারম্যান, সাবেক মন্ত্রী ও ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা বলেছেন, যারা শাসন ক্ষমতায় থাকেন, তারা কিন্তু চাননা একটা সুষ্ঠু নির্বাচন হোক। তারা চিন্তা করে আমি তো জনগণের আস্থার বাইরে চলে গেছি। সেখানে যদি আমি নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ করি এবং জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলনে যদি ভোট প্রয়োগ হয় তাহলে তো আমি পাস করবো না। পাস না করলে অবস্থাটা কি হবে, এই ভয়ভীতির কারণে যারা শাসন করে তারা কোনো সময় কোনো রকমের সুষ্ঠু নির্বাচনের চিন্তাভাবনা করে না। বরং পারলে নির্বাচন ব্যবস্থাটাকে নিজের আয়ত্তে নিয়ে আবার যাতে ক্ষমতায় আসতে পারে সে চ্ষ্টোই করে। এটাই বাস্তবতা।

চ্যানেল আই এর তৃতীয় মাত্রা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, রাজনীতিবিদরা কোনো স্পেশাল ক্লাসের না। পেশাজীবিদের মধ্যে রাজনীতিবিদ রয়েছে। সুশীল সমাজ ও আইনজীবিদের মধ্যে রাজনীতিবিদ রয়েছে। আমাদের দেশটা সম্পূর্ণভাবে রাজনীতি। রাজনীতির এপিট ওপিট নিয়েই আমাদের সমাজ।

নাজমুল হুদা বলেন, জনগণের ইচ্ছাই যদি আমরা নির্বাচন চাই, তাহলে আমাদের তত্ত্ব দিয়ে কোনো লাভ হবে না। মানুষ বুঝে যে তার ভোট যেন, সে নিজে গিয়ে পছন্দের পক্ষকে দিতে পারে। এটা নিশ্চিত করতে হবে। সংসদের আলোচনার ভিত্তিতে দেশ চলে। অথচ সেখানে বেশিরভাগই অপ্রয়োজনীয় আলোচনা দেখা গেছে টিআইবির রিপোর্টে। সংসদে আলোচনা হয় কে স্বাধীনতার ঘোষক, কে জাতির পিতা হবে না হবে। একই বিষয় বহু বার আলোচনা হয়। একজন একটি বলবে, তার পাল্টা জবাব দিতে দিতে সংসদের যথেষ্ট সময় নষ্ট হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, আমাদের দেশে অনেক আইন রয়েছে। কিন্তু বাস্তবায়ন নেই। এখন দেশের জনগণ দুই নেত্রীকেই চেনে। তাদেরকে ঘিরেই সারাদেশের রাজনীতি। এখানে তৃতীয় ব্যক্তি জনগণের রাজনীতির বিষয় নয়। জনগণ দুই নেত্রীকেই বুঝেন। দুই নেত্রীকে ঘিরেই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ চিন্তাভাবনা করতে হবে। দুইনেত্রীকে চিন্তা-ভাবনা করতে হবে কিভাবে দেশকে কাঙ্খিত লক্ষ্যে নিয়ে যাওয়া যায়। দুর্ভাগ্যে বসত এটা হয়নি। কারণ আমরা যে রাজনীতিটা তাদের মধ্যে দেখেছি যে রাজনীতিটা প্রতিহিংসা পরায়ণ। এটা সব সময় প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়েই আসছিল। যার কারণে দুই দলের সমর্থকরা মুখোমুখি অবস্থানে সব সময় থেকেছে। যে কারণে অন্য কোনো কিছু তাদের কাছে প্রাধান্য পায়নি। সবারই চিন্তা করা উচিত কিভাবে নির্বাচন ব্যবস্থাটাকে সত্যিকার অর্থে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়া যায়। নির্বাচন কমিশনার নির্বাচনকে সুষ্ঠু করতে পারে। তাকে সে ক্ষমতাও দেয়া হয়েছে। তারমধ্যেও অনেক কিন্তু রয়েছে।

ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা বলেন, দেশে দলীয়করণের বাইরে কোনো কিছু নেই। আমি যখন ক্ষমতায় থাকি আমি আমার দলের কথা চিন্তা করি। আমার কথা চিন্তা করে যে লোকদের দিয়ে কাজ করতে হবে, তাদের আমার মতো করে নিতে হবে। যাতে আমার স্বার্থটা সফল হয়। ক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখার জন্য সমস্ত কিছু করবো। দলীয়করণটা দেশের জন্য সবচেয়ে বড় অভিশাপ। আজ যদি সরকারি কর্মকর্তাদের তাদের মতো করে ছেড়ে দেয়া হতো, যারা সরকারি কর্মকর্তা তারা রাষ্ট্রেরও কর্মকর্তা। তারা রাষ্ট্রের চাকরি করে। তারা কোনো রাজনৈতিক দলের চাকরি করে না। তাহলে বিষয়টি অন্য রকম হতো।

তিনি বলেন, আমি নিজে দুই নেত্রীকে এক টেবিলে বসানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু আমার নেত্রী (তৎকালীন নেত্রী) খুশি হননি। কিন্তু এখন চেষ্টা করেও সে আলোচনা পাচ্ছেন না। স্বদিচ্ছা একটি বিষয়। আজ দুই নেত্রীকেই বুঝতে হবে যে একে অপরকে প্রতিরোধ করে কিংবা মুখোমুখি অবস্থান নিয়ে, এদেশকে কোনো জায়গায় নিয়ে যেতে পারবো না। তারা একত্রে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। নির্বাচনকে নিজস্ব গতিতে চলতে দিতে পারলেই সম্ভব হবে। কিন্তু আমার মনে যদি আতঙ্ক থাকে যে আমি এখন নির্বাচন দিলে পরাজিত হবো, তাহলে চামড়াটা থাকবে না। এই আতঙ্ক অত্যন্ত ভয়ঙ্কর একটি আতঙ্ক। আমাদের দেশে পরাজিত হলে স্লোগান বের হয়। কিন্তু আইন দিয়ে এই স্লোগান রোধ করা যায়। একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতার মধ্যে থাকতে হবে ফলাফল যাই হোক না কেন আমি যদি হেরেও সম্মনজনকভাবে যেন বিদায় নিতে পারি। এবং যিনি বিজয়ী হলেন তার গলায় মালা পরাতে পারি। নির্বাচনের ইভিএম ব্যবস্থাটা বাদ দেয়া উচিত।

আমাদেরসময়