শনিবার , ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ , ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ , ১০ই শাওয়াল, ১৪৪৫

হোম > শীর্ষ খবর > ১০০ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছি

১০০ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছি

শেয়ার করুন

স্টাফ রিপোর্টার ॥

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বেসরকারি খাতকে দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি ধরে স্বচ্ছ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এ খাতের উন্নয়নে আর্থিক নীতি নির্ধারণ ও ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ গঠনে আমাদের সরকারের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। বিদেশী বিনিয়োগ আনতে আমরা ব্যাপক কর্মসুচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। সমগ্র বাংলাদেশ জুড়ে আমরা একশত বিশেষ অর্থনৈতিক আঞ্চল গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছি। যেখানে দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ হবে। শিল্প কলখারখানা গড়ে উঠবে এবং কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে।

বুধবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে টেবিলে উত্থাপিত সংসদ সদস্য দিদারুল আলমের (চট্টগ্রাম-৪) এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, দেশে শিল্প বিকাশ ও বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়াতে আওয়ামী লীগ সরকার বিদ্যমান বিনিয়োগ পরিবেশ আরও উন্নত করার লক্ষ্যে অবকাঠামো উন্নয়ন, শিল্পে বিভিন্ন পরিসেবা, ভূমির নিশ্চয়তা, প্রতিযোগিতামূলক প্রণোদনা এবং ওয়ান স্টপ সার্ভিস প্রদানসহ বিনিয়োগ বান্ধব আইন ও নীতিমালা প্রণয়ন করেছে।

প্রধানমন্ত্রী জানান, এ পর্যন্ত মোট ৪টি বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলের চূড়ান্ত লাইসেন্স প্রদান করা হয়েছে। এগুলো হল: ১. মেঘনা ইকোনমিক জোন, সোনারগাঁও, নারায়ণগঞ্জ, ২. আবদুল মোনেম অর্থনৈতিক অঞ্চল, গজারিয়া, মুন্সিগঞ্জ, ৩. আমান ইকোনমিক জোন, সোনারগাঁও, নারায়ণগঞ্জ, ৪. বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চল, কোনাবাড়ী, গাজীপুর।

এছাড়া ১০টি বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রি-কোয়ালিফিকেশন লাইসেন্স প্রদান করা হয়েছে। এগুলো হল: ১. মেঘনা ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইকোনমিক জোন, সোনারগাঁও, নারায়ণগঞ্জ, ২. এ কে খান বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চল, পলাশ, নরসিংদী, ৩. আরিশা বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চল, কেরানীগঞ্জ-সাভার, ঢাকা, ৪. ইউনাইটেড আইটি পার্ক সিটি লিঃ, বাড্ডা, ঢাকা, ৫. ইষ্ট-ওয়েষ্ট স্পেশাল ইকোনমিক জোন, কেরানীগঞ্জ, ঢাকা, ৬.বসুন্ধরা স্পেশাল ইকোনমিক জোন, কেরানীগঞ্জ, ঢাকা, ৭. সোনারগাঁও ইকোনমিক জোন, সোনারগাঁও, নারায়ণগঞ্জ, ৮. আকিজ ইকোনমিক জোন, ত্রিশাল, ময়মনসিং, ৯. কুমিল্লা ইকোনমিক জোন, মেঘনা, কুমিল্লা, ১০. সিটি ইকোনমিক জোন, রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ।

সংসদ সদস্য মামুনুর রশীদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের মে মাস হতে ২০১৭ পর্যন্ত বিভিন্ন সরকারের মেয়াদে দেশে মোট ১৩ হাজার ৫৯৬ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপিত হয়েছে। পুরানো বিদ্যুৎ কেন্দ্র বিভিন্ন সময়ে অবসরে যাওয়ার কারণে বর্তমানে জাতীয় গ্রীডে ১৩ হাজার ১৭৯ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যুক্ত হয়েছে। বর্তমানে বিদ্যুৎতের স্থাপিত ক্ষমতা ক্যাপটিভসহ ১৫ হাজার ৩৫১ মেগয়াওয়াটে উন্নীত হয়েছে।

বিভিন্ন সরকারের মেয়াদে জাতীয় গ্রীডে যুক্ত হওয়ার বিদ্যুতের পরিমাণ তুলে ধরেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭২-১৯৮১ সালে ২৮৬ মেগাওয়াট, ১৯৮২-১৯৯০ সালে ১ হাজার ৫৮৮ মেগাওয়াট, ১৯৯১ সালের মার্চ-১৯৯৬ সালের মার্চ পর্যন্ত ৫৮৮ মেগাওয়াট, ১৯৯৬ সালের জুন হতে ২০০১ সালের জুলাই পর্যন্ত ১ হাজার ২০৮ মেগাওয়াট, ২০০১ সালের অক্টোবর হতে ২০০৬ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ১ হাজার ২৪০ মেগাওয়াট, ২০০৬ সালের অক্টোবর হতে ২০০৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩৪৬ মেগাওয়াট এবং ২০০৯ সালের জানুয়ারী হতে ২০০৭ সালের মে পর্যন্ত ৮ হাজার ৩৪০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রীডে যুক্ত হয়েছে।

তিনি বলেন, বর্তমান সরকার দেশের বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণ ও ২০২১ সালের মধ্যে সবার জন্য বিদ্যুৎ সুবিধা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে প্রায় ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা অর্জনের লক্ষ্যে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এ পরিকল্পনায় জানুয়ারি ২০১৭ হতে ২০২১ সাল পর্যন্ত ১৬ হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতার নতুন বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের লক্ষ্যে কার্যক্রম অব্যাহত আছে।

বিদ্যুতের চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে গৃহিত পরিকল্পনার অগ্রগতি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী জানান, বর্তমানে সরকারি খাতে ৬ হাজার ৭০৭ মেগাওয়াট ক্ষমতার ১৬টি এবং বেসরকারি খাতে ৪ হাজার ৬৫৬ মেগাওয়াট ক্ষমতার ১৮টি বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ মোট ১১ হাজার ৩৬৩ মেগাওয়াট ক্ষমতার ৩৪টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণাধীন রয়েছে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রসমূহ ২০১৭ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে পর্যায়ক্রমে চালু হবে বলে আশা করা যায়।

তিনি বলেন, সরকারি খাতে ২ হাজার ৭৩ মেগাওয়াট ক্ষমতার ৮টি এবং বেসরকারি খাতে ২ হাজার ৮৪৪ মেগাওয়াট ক্ষমতার ২৬টি বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ সর্বমোট ৪ হাজার ৯১৭ মেগাওয়াট ক্ষমতার ৩৪টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের উদ্দেশ্যে দরপত্র প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সরকারি খাতে ৬ হাজার ৪১৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার ১১টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ পরিকল্পনাধীন রয়েছে। আগামী জুলাই ২০১৮ নাগাদ ভারত থেকে আরও ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির কার্যক্রম চলছে। রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র হতে ২০২৩ সালের মধ্যে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট এবং ২০২৪ সালের মধ্যে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট মোট ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রীডে যুক্ত হবে।