স্টাফ রিপোর্টার ॥ টানা ৪৩ দিন অবরুদ্ধ রাখার পর উচ্চ আদালতের নির্দেশে অবশেষে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন থেকে অবরোধ তুলে নিয়েছে শিক্ষক সমিতি।
আদালতের নির্দেশনা কপি হাতে পাবার পর শিক্ষকরা অবরোধ তুলে নিলে নিজ কার্যালয়ে প্রবেশ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা কর্মচারীরা।নিজ উদ্যোগেই নিজেদের ব্যানার সরিয়ে ফেলেন আন্দোলনকারী শিক্ষকরা। যে চেয়ারগুলোতে বসে তারা অবরোধ করে রেখেছিলেন প্রশাসনিক ভবন সেগুলোও ফাঁকা পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
দীর্ঘদিন পর প্রশাসনিক ভবনে ঢুকে ভিন্ন রকম আমেজ দেখা গেছে কর্মকর্তা কর্মচারীদের।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক কর্মকর্তা জানান,মনে হয় দীর্ঘদিন ছুটির পর অফিসে আসলাম। অনেকে আবার দুঃখ করে বলেন, ঈদ পর্যন্ত আন্দোলন চললে বেশ ভালোই ছুটি কাটানো যেত।
তবে কর্মকর্তাদের একাংশ আবার বলছেন ভিন্ন কথা।তাদের ভাষায় দীর্ঘ অবরুদ্ধের পর প্রশাসনিক ভবন খুলে দেয়ায় ঈদের আগেই জমে থাকা কাজের চাপ সামাল দিতে বিপাকে পড়তে হবে সবাইকে।
গণমাধ্যমে ছাত্র ও শিক্ষকদের সম্পর্কে অনাকাঙ্ক্ষিত বক্তব্য প্রদান, শিক্ষক লাঞ্ছনার যথাযথ বিচার না হওয়াসহ ১২টি অভিযোগে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে গত ২০ জুন থেকে প্রশাসনিক ভবন অবরোধ করে রাখেন শিক্ষক সমিতির সদস্যরা। দৈনন্দিন প্রশাসনিক কাজ যাতে বাধাগ্রস্ত না হয় সে জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে গত বুধবার নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি জাফর আহমেদের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট ওই বেঞ্চ চার শিক্ষক ও এক শিক্ষার্থীর দায়ের করা রিটের শুনানি শেষে অন্তর্র্বতীকালীন এ আদেশের সঙ্গে রুলও দেন। উচ্চ আদালতের এ নির্দেশনা প্রতিপালন করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, সহ-উপাচার্য (প্রশাসন), প্রক্টর ও রেজিস্ট্রারের প্রতি নির্দেশ দেয়া হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রমে অচলাবস্থা নিরসনে নির্দেশনা চেয়ে গত ৭ জুলাই রিটটি করা হয়। রুলে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তারা যাতে অবাধে প্রশাসনিক ভবনে প্রবেশসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য সুবিধা নিতে পারেন এবং সিনেট, সিন্ডিকেট সভা, একাডেমিক কাউন্সিল, ফিন্যান্স কমিটির সভাসহ অন্যান্য সভা অনুষ্ঠান এবং এতে অংশগ্রহণ নিশ্চিতে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে বিবাদীদের কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। তবে আদালতের নির্দেশনা হাতে না পাবার কথা বলে এতদিন আন্দোলন অব্যাহত রেখেছিলেন শিক্ষক নেতারা।