শুক্রবার , ২৯শে মার্চ, ২০২৪ , ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ , ১৮ই রমজান, ১৪৪৫

হোম > গ্যালারীর খবর > ৫৭ ধারা থেকেও নিকৃষ্ট ৩২ ধারা : আসিফ নজরুল

৫৭ ধারা থেকেও নিকৃষ্ট ৩২ ধারা : আসিফ নজরুল

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি ডেস্ক ॥
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর ৩২ ধারা নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, কারো বিরুদ্ধে কোনো কথা বলা হলেই এই আইন প্রয়োগ করা হবে। ৫৭ ধারা বিএনপি ও সরকারের বিরুদ্ধে যারা ভিন্ন মত প্রকাশ করেছিল তাদের ওপর প্রয়োগ করা হয়ছে। জিম্বাবুয়ে ও উত্তর কোরিয়া ছাড়া অন্যকোনো দেশে এমন আইন নেই। ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের নিয়মিত অনুষ্ঠান আজকের বাংলাদেশ এ ‘নিরাপত্তা কার?’ বিষয়ক আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।

আসিফ নজরুল বলেন, আইনমন্ত্রী বলেছেন, ৫৭ ধারা অগণতান্ত্রিক ছিল। তার মধ্যে অনেক আপত্তিকর প্রয়োগ ছিল, সেটার মধ্যে আপত্তিকর জিনিস ছিল। সেই এক জিনিস আপনি কেন ডিজিটাল সিকিউরিটিতে আনবেন?। ডিজিটাল সিকিউরিটিতে এখানে শাস্তির মাত্রা কমানো হয়েছে। কিছু কিছু অপরাধ অজামিন যোগ্য করা হয়েছে, এটা কোনো প্রতিকার নয়। বরং এই বিষয়টিকে যদি উল্টো দিক থেকে দেখা হয়, এটা সত্য কিছু কিছু অপরাধের শাস্তি কমানো হয়েছে।

তিনি বলেন, আপনি যদি কোনো মন্ত্রীর বিরুদ্ধে কোনো কথা বলেন ডিজিটাল মাধ্যমে, প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকেও কেউ যদি মনে করেন যে সে কথাটি মানহানি হয়েছে এবং ঐ মন্ত্রী ক্ষুব্ধ হলে তখন দেখলেন সারা দেশের ৬৪টি জেলা থেকে মামলা করা শুরু করলো। তখন ঐ মামলায় যদি আপনি গ্রেফতার নাও হন, মামলায় হাজিরা দিতে দিতে জীবন শেষ হয়ে যাবে। এই আইনে অস্পটতা ডিজিটাল সিকিউরিটিতে রয়েছে। অন্যায্য মামলা করার সুযোগ, সরকারের প্রতি ভিন্ন মত পোষণকারিদের হেনস্তা করার সুযোগ ডিজিটাল সিকিউরিটিতে রয়েছে।ি

আসিফ নজরুল বলেন, ৫৭ ধারাতে শাস্তির বিধান করা হয়েছিল তাও ডিজিটাল সিকিউরিটিতে রয়েছে। তার সাথে যুক্ত হয়েছে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে তৈরি ৩২ ধারা। ৩২ ধারার মানে হচ্ছে দুর্নীতি, অনিয়ম ও অবিচারের বিরুদ্ধে কোনো সূত্রের মাধ্যমে কোনো রিপোর্ট দিতে পারবেন না। যদি এটার অনুমোদন না থাকে। ৩২ ধারা এটা বলছে, কোনো মন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে বা কোনো সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে তাকে গিয়ে বলতে হবে যে ভাই আপনার বিরুদ্ধে দুর্নীতির যে অভিযোগ আছে তার একটি নথিপত্র দেন। তিনি কি বলবেন যে তথ্যগুলো দিলাম আপনি প্রচার করেন? এটি কখনও হবে না।

সাংবাদিকতার সূত্রই হচ্ছে গোপন রাখা। তবে একটি জিনিস মনে রাখতে হবে আপনি যে জিনিসটি প্রকাশ করছেন তা সত্য কিনা। একটি দেশ ও সরকার শুধু এই জিনিসটি দেখতে পারে। কিন্তু আপনি কোনো জিনিসটি কোন সূত্রে পেলে সরকারের অনুমতি ছাড়া কোনো নথি ছাড়া আপনি নিতে পারবেন না। আমাদের সাবকন্টিনেন্টে এই ধরনের কোন আইন নেই। এতো জঘন্য আইন নেই। এটি ৫৭ ধারা থেকেও নিকৃষ্ট আইন। ৩২ ধারা একটি নতুন এলিম্যাণ্ট যোগ করেছে। এখন শাস্তির ১০ বছর থেকে ৭ বছর করেছে কিনা, কিছু কিছু অপরাধ জামিন যোগ্য করা হয়েছে কিনা। এটি খুবই ছোট খাট একটি ইতিবাচক দিক।

 

আমাদের সময়.কম