সোমবার , ২৭শে মে, ২০২৪ , ১৩ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ , ১৮ই জিলকদ, ১৪৪৫

হোম > খেলা > আলভেজ ৪ : ১ মোনাকো, ফাইনালে জুভেন্টাস

আলভেজ ৪ : ১ মোনাকো, ফাইনালে জুভেন্টাস

শেয়ার করুন

স্পোর্টস ডেস্ক ॥
চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে কে যাচ্ছে সেটা তো জেনেই গেলেন। নিজেদের মাঠে মোনাকোকে ২-১ গোলে হারিয়ে কার্ডিফের ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে জুভেন্টাস। দুই লেগ মিলিয়ে তাদের জয় ৪-১ ব্যবধানের।

ব্যাকরণ মানতে চাইলে এমন শিরোনাম হয়তো মেনে নেওয়া যায় না। কিন্তু ফুটবল তো দিব্যি দিয়ে বসেনি যে ব্যাকরণ মানতেই হবে সবসময়। কিংবা দানি আলভেজই বা কবে ওসবের ধার ধারতে গেছেন!

প্রথম লেগে জোড়া গোল করে গঞ্জালো হিগুয়েইন কোনো সুযোগ রাখেননি। না হলে আলভেজের গুনগান গেয়েও কিছু শিরোনাম হতে পারত সেদিন। দুটো গোলই যে এই রাইটব্যাকের বানিয়ে দেওয়া। সে কথা যেন কেউ ভুলে যাওয়ার সাহস না করে, সে ব্যবস্থাটা আজ করে রাখলেন আলভেজ। প্রথমার্ধেই ম্যাচের ফলাফলটা ঠিক করে দিয়ে। এক গোল করে ও করিয়ে দলকে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে দিলেন ৪৫ মিনিট শেষ হওয়ার আগেই।

৪৪ মিনিটে কর্নার থেকে উড়ে আসা বল ফিরিয়ে দিলেন মোনাকো গোলরক্ষক সুবাসিচ। কিন্তু সে বল গিয়ে পড়ল বক্সের বাইরে থাকা আলভেজের সামনে। সুবাসিচ জায়গায় ফেরার আগেই আলভেজের গোলার মতো শট জালে হড়িয়ে গেল। নাহলে, আজ সুবাসিচ যেভাবে খেলছিলেন, অন্য কোনো উপায়েই যে গোল করা সম্ভব হচ্ছিল না! আগের মিনিটেও পাওলো দিবালাকে গোলবঞ্চিত করেছেন অসামান্য দক্ষতায়। কিন্তু আলভেজের শটটা আর আটকাতে পারলেন না ক্রোয়েশিয়ান এই গোলরক্ষক। মোনাকোর বিদায় ঘন্টাটাও ঢং ঢং করে বেজে ওঠল।

ওই ঘন্টায় ১১ মিনিট আগেই বোল তুলেছিলেন ওই আলভেজ। প্রথম আধ ঘন্টা প্রাধান্য ধরে রাখহা মোনোকোর সব প্রচেষ্টা মিথ্যা হয়ে গেল একটা পাল্টা আক্রমণে। বুফনের থ্রো থেকে প্রথমে বল টেনে নিয়ে গেলেন অ্যালেক্স সান্দ্রো। সেটা দিবালার পা ঘুরে এল আলভেজের কাছে। রাইটব্যাকের মাপা ক্রস একদম মারিও মানজুকিচের মাথায়। স্বদেশির হেড প্রথমে ফিরিয়ে দিলেও পাল্টা শট আর আটকাতে পারেননি সুবাসিচ।

এর আগেই দুই বা তিন গোল করে ফেলতে পারত জুভেন্টাস। কিন্তু সুভাসিচের দুর্দান্ত কিপিং আশা বাচিয়ে রেখেছিল মোনাকোর। ২ মিনিট পরেই ওই আলভেজের পাস থেকে গোল করেন হিগুয়েইন। কিন্তু সেটা একটুর জন্য অফ সাইড হওয়ায় বেঁচে যায় মোনাকো।

তবে ম্যাচের ৪১ মিনিটেই সমতা ফেরাতে পারত ফ্রেঞ্চ দলটি। বাঁ প্রান্ত থেকে মেন্দির ক্রসে একটুর জন্য পা ছোঁয়াতে পারেননি কিলিয়ান এমবাপ্পে। কিন্তু পেছনেই ছিলেন রাদামেল ফ্যালকাও। কিন্তু ফ্যালকাও সুযোগই পেলেন না। তাঁর সামনে দিয়ে অবিশ্বাস্যভাবে বলটা বাইরে পাঠিয়ে কর্নার দেন কিয়েলিনি। ডাইভ দেওয়া অবস্থাতেও অমন নিয়ন্ত্রণ দেখে ধারাভাষ্যকার বলে ওঠলেন, ‘শতকরা ৯৯জন ডিফেন্ডার এটা আত্মঘাতি গোল করত!’ বাকি থাকা অন্যজন যে কিয়েলিনি, সেটা বোধ হয় না বললেও চলত!

মোনাকোর বিখ্যাত আক্রমণভাগ আজও কিছু করতে পারল না। বোনুচ্চি-বারজালি-কিয়েলিনির রক্ষণ বক্সে তাদের কোনো জায়গা দেয়নি। এমবাপ্পে বাঁ প্রান্ত দিয়ে ভয় জাগানো কয়েকটি দৌড় দিলেও আলভেজের সঙ্গে কোনোভাবেই পেরে উঠছিলেন না।

দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য পরিস্থিতি খানিকটা বদলেছে। প্রথমার্ধে গোলে কোনো শট নিতে না পারা মোনাকোও খেলায় ফিরেছে। ৬৬ মিনিটে এমবাপ্পেকে গোল হাতছাড়া করতে বাধ্য করলেও দুই মিনিট পরে আর পারেননি বুফন। জোয়াও মুতিনহোর বানিয়ে দেওয়া সহজ সুযোগটি আর হাতছাড়া করেননি এমবাপ্পে। ব্যবধানটাও নেমে আসে ২-১ (দুই লেগ মিলিয়ে ৪-১) এ। ২০ মিনিটের রোমাঞ্চের আশাও জেগেছিল কিছুক্ষণের জন্য।

কিš‘ ম্যাচের বাকি সময় আক্রমণে পাল্টা আক্রমণে শিহরণই জাগল শুধু। কোনো গোল হয়নি, ম্যাচের ভাগ্যো বদলায়নি।

এতেই এক বছর বিরতি দিয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে চলে এল জুভেন্টাস। ২০১৫ সালে বার্সেলোনার কাছে হেরে যাওয়া জুভদের সামনে আবারও স্প্যানিশ বাধা (রিয়াল মাদ্রিদ কিংবা অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ)। এবার কী সে বাধা পেরোতে পারবে ইতালিয়ান চ্যাম্পিয়নরা?

উত্তরটা হয়তো আলভেজই ভালো দিতে পারবেন!