সোমবার , ২৭শে মে, ২০২৪ , ১৩ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ , ১৮ই জিলকদ, ১৪৪৫

হোম > Uncategorized > এনজিও’তে নিষিদ্ধ সংগঠনের হিসাব পরিচালনায় শাস্তি

এনজিও’তে নিষিদ্ধ সংগঠনের হিসাব পরিচালনায় শাস্তি

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥
ঢাকা: ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মতো বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা (এনজিও) এবং অলাভজনক প্রতিষ্ঠান বা সংস্থাগুলোকেও (এনপিও) জাতিসংঘ বা বাংলাদেশ সরকারের নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন বা ব্যক্তির কোনো আমানত বা ঋণ হিসাব পরিচালনা করা যাবে না।

কোনো প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের হিসাব পরিচালিত হলে মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে অর্থায়ন প্রতিরোধ আইনের আওতায় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।

বিএফআইইউ থেকে চলতি বছরের ২ সেপ্টেম্বর এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে এনজিও এবং এনপিওদের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, এসব প্রতিষ্ঠানের প্রত্যেক কর্মকর্তাকে মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ বিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রদান ও রেকর্ড সংরক্ষণ করতে হবে। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ সন্ত্রাস, সন্ত্রাসী কাজে অর্থায়ন বা ধ্বংসাত্মক অস্ত্র বিস্তারে অর্থায়নে জড়িত সন্দেহে তালিকাভুক্ত কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা সত্তা থেকে কোনো ঋণ বা অনুদান নেওয়া যাবে না।

নিরাপত্তা পরিষদের বিভিন্ন রেজুলেশনের আওতায় সন্ত্রাস, সন্ত্রাসী কাজে অর্থায়ন বা ধ্বংসাত্মক অস্ত্র বিস্তারে অর্থায়নে জড়িত সন্দেহে তালিকাভুক্ত কোনো ব্যক্তি বা সত্তা এবং বাংলাদেশ সরকারের তালিকাভুক্ত ব্যক্তি বা নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের হালনাগাদ তথ্য সংরক্ষণ করতে হবে।

একই সঙ্গে এ ধরনের কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা সত্তার কোনো আমানত বা ঋণ হিসাব পরিচালনা করা বা কোনো তহবিল গ্রহণ বা তাদের দেওয়া যাবে না।

সন্ত্রাসে অর্থায়ন ছাড়াও দুর্নীতি, ঘুষ, প্রতারণা, জালিয়াতি বা অন্য কোনো অপরাধের মাধ্যমে পাওয়া অর্থ এসব প্রতিষ্ঠানে বৈধ করার চেষ্টা করেছে বলে সন্দেহ হলে বিএফআইইউতে প্রতিবেদন করতে হবে। কোনো গ্রাহকের লেনদেন বা কার্যক্রম সন্দেহজনক মনে হলে সেটাও জানাতে হবে।

প্রজ্ঞাপনে এনজিও বা এনপিওর পরিচালনা পর্ষদ, বোর্ড অব ট্রাস্টি বা সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী কমিটি থেকে অনুমোদিত মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধবিষয়ক নীতিমালা করতে বলা হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীর সরাসরি তত্ত্বাবধানে একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নেতৃত্বে প্রধান কার্যালয়ে একটি ‘কেন্দ্রীয় পরিচালন ইউনিট’ প্রতিষ্ঠার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

প্রজ্ঞাপানে আরও বলা হয়েছে, এনজিওতে এক লাখ টাকা বা এর বেশি পরিমাণের অর্থ লেনদেনের ক্ষেত্রে ব্যাংকিং চ্যানেল ব্যবহার করতে হবে। কোনো কারণে ব্যতিক্রম হলে এনজিওর নিজস্ব কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিতে হবে।

আর প্রতিষ্ঠানগুলোর সুবিধাভোগী, টার্গেট গ্রুপ, ব্যক্তি, সংগঠন বা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে যারা এক বছরে ২০ হাজার টাকার বেশি নগদ অর্থ, পণ্য বা সেবা নিয়েছে তাদের সঠিক ও পূর্ণাঙ্গ পরিচিতি (কেওয়াইসি) সংরক্ষণ করতে হবে।

যে সব গ্রাহকের ঋণ বা আমানতস্থিতি এক লাখ টাকা বা এর বেশি রয়েছে তাদেরও কেওয়াইসি সংগ্রহ ও তথ্যের সঠিকতা নিশ্চিত করতে হবে। আর সহযোগী প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য, কার্যক্রম, আয়ের উৎস, সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করতে হবে। কর্মকর্তা বা কর্মচারী নিয়োগের আগে প্রার্থীর পরিচিতির তথ্য, সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা যাচাই করতে বলা হয়েছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে অর্থায়ন প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী বাংলাদেশের অবস্থান পরীক্ষার ক্ষেত্রে বর্তমানে তৃতীয় পর্বের মূল্যায়ন প্রক্রিয়া চলছে। মানি লন্ডারিং প্রতিরোধে তথ্য যাচাইয়ের জন্য এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপ অন মানি লন্ডারিংয়ের একটি দল আগামী অক্টোবর মাসে বাংলাদেশে আসবে।

বিষয়টি সফল করতে এনজিও রেগুলেটরি সংস্থাগুলোর অংশগ্রহণে সম্প্রতি বিএফআইইউ ‘এনজিও সেক্টর এ্যাসেসমেন্ট অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক একটি গবেষণা কাজ সম্পন্ন করেছে।

এছাড়া, অন্যান্য খাতের মতো এনজিও বা এনপিওর মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে অর্থায়ন প্রতিরোধে বিএফআইইউ অন-সাইট ও অফ-সাইট মনিটরিং পরিচালনা করে থাকে। বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম