কাশ্মীর নিয়ে ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা তুঙ্গে

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥ কাশ্মীরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে নিয়ন্ত্রণ রেখায় ভারতীয় ৫ সেনা হত্যার ঘটনায় দু’দেশের মধ্যে উত্তেজনা তুঙ্গে। পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) নেতা নওয়াজ শরীফ প্রধানমন্ত্রী হয়ে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করার যে আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন এ ঘটনায় তা কতদূর এগুবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। ওদিকে নিয়ন্ত্রণ রেখায় ভারতীয় সেনা হত্যার পর গতকাল পাকিস্তান অভিযোগ করেছে যে, ভারতীয় সেনারা বিতর্কিত কাশ্মীর সীমান্ত দিয়ে পাকিস্তানের ভিতরে গোলা নিক্ষেপ করেছে। পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী এ দু’টি দেশের সেনাদের মধ্যে এমন অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। নিয়ন্ত্রণ রেখার কাছে ৬ই আগস্ট গোলার আঘাতে নিহত হন ভারতীয় ৫ সেনা। এ জন্য নয়াদিল্লি দায়ী করেছে পাকিস্তানি সেনাদের। তবে এ ঘটনায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে ইসলামাবাদ। নিয়ন্ত্রণ রেখায় দু’দেশের রেষারেষি নতুন কিছু নয়। মেশিন গান দিয়ে গোলা নিক্ষেপের ঘটনাও মাঝে মধ্যে ঘটে থাকে। তবে ২০০৩ সালে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার পর এখন ওই সীমান্ত বেশি উত্তেজনাকর। এ নিয়ে দু’দেশেই প্রতিবাদ হয়েছে। ভারতের পার্লামেন্ট গরম করে তুলেছে বিরোধী দল। সেখানে বিরোধীদের প্রচণ্ড চাপের মুখে সরকার প্রতিশোধ নেয়ার কথা বলেছে। গতকাল পাকিস্তানের এক সেনা কর্মকর্তা বলেছেন বাত্তাল, চিরিকোট ও সাতওয়াল সেক্টরে কোন প্ররোচনা ছাড়াই ভারতীয়রা গোলা নিক্ষেপ করেছে। এতে কমপক্ষে এক বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এর জবাবে ভারতীয় সেনারাও গুলি ছুড়েছে। ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র এ বিষয়ে একটি ভিন্ন ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ভারতীয় টহল চৌকিতে অকস্মাৎ ভারি মর্টার ও স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র দিয়ে রাতভর গুলি ছুড়েছে। ভারত কার্যকরভাবে এর জবাব দিয়েছে। এতে ভারতীয় পক্ষে কোন ক্ষয়ক্ষতি হয় নি। কাশ্মীর নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বিভক্তি দেখা দিয়েছে ১৯৪৮ সালে। দু’দেশই কাশ্মীর ও জম্মুকে তাদের নিজেদের অংশ বলে দাবি করছে। তা নিয়ে হয়ে গেছে যুদ্ধ। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে তিনটি যুদ্ধ হয়েছে। তার দুটিই হয়েছে কাশ্মীর ইস্যুকে কেন্দ্র করে। গতকালও দু’দেশের সেনাদের মধ্যে গুলি বিনিময় হচ্ছিল। এতে প্রায় এক দশকের শান্তিচুক্তি পড়েছে ঝুঁকিতে। ওদিকে কাশ্মীরে হিন্দু ও মুসলিমদের মধ্যে দাঙ্গার প্রেক্ষিতে সেখানে কমপক্ষে ৮টি শহরে জারি করা হয়েছে কারফিউ। বিরোধী দল এ দাঙ্গার সঙ্গে সীমান্ত উত্তেজনার সম্পর্ক আছে বলে অভিযোগ করেছে। বিজেপি নেতা অরুণ জেইটলি সোমবার এ জন্য সরকারকে কড়া ভাষায় ঘায়েল করেন। তিনি সোমবার দাঙ্গাকবলিত কাশ্মীর পরিদর্শনে যেতে চাইলে সরকার তাতে বাধা দেয়। এর জবাবে তিনি সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন। বলেন, জম্মু ও কাশ্মীর কারো ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়। এ বিষয়ে মিডিয়া নীরব থাকলেও তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। তিনি কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহরও সমালোচনা করেন। বলেন, কাশ্মীরের দাঙ্গায় কয়েকজন নিহত হওয়ার ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা পর সেনাদের ডাকা হয়েছে। ১৯৯০-এর দশকে কাশ্মীর যেখানে ছিল আবদুল্লাহ সেখানে নিয়ে যাচ্ছেন। ওদিকে ওমর আবদুল্লাহর পক্ষ নিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। তারা বলেছে, জেইটলিকে কাশ্মীরে যেতে না দিয়ে ঠিক কাজটি করেছেন আবদুল্লাহ। কারণ, ওই এলাকায় এখন কোন রাজনীতিক গেলে পরিস্থিতি আরও উত্তেজিত হয়ে উঠতে পারে। এরই প্রেক্ষিতে আবদুল্লাহ তাকে কাশ্মীরে যেতে দেননি।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত আরও সংবাদ

সাম্প্রতিক সংবাদ

আর্কাইব

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  

প্রধান সম্পাদক : সাঈদুর রহমান রিমন
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ নজরুল ইসলাম আজহার

সার্বিক যোগাযোগ : চৌধুরী মল (৫ম তলা), ৪৩ হাটখোলা রোড, ঢাকা-১২০৩॥

গাজীপুর অফিস : এ/১৩১ (ইকবাল কুটির) হাবিব উল্লাহ স্মরণী, জয়দেবপুর, গাজীপুর-১৭০০॥

হটলাইন: ০১৭৫৭৫৫১১৪৪ ॥ সেলফোন : ০১৭১৬-৩৩৩০৯৬ ॥ E-mail: banglabhumibd@gmail.com

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত বাংলাভূমি ২০০৯-২০২৫