স্টাফ রিপোর্টার ॥ শ্রীশ্রী সরস্বতী পূজা আজ। প্রতিবছর মাঘ মাসের পঞ্চমী তিথিতে বিদ্যাদেবী সরস্বতীর এই পূজা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। জ্ঞান ও ললিতকলার অধিষ্ঠার্থী দেবী সরস্বতীর চরণে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষানুরাগী ভক্তরা দেবীর পায়ে অঞ্জলি দেন। অজ্ঞতার অন্ধকার থেকে নিজেকে আলোর পথে উৎসারিত করতে দেবীর পায়ে প্রণতি জানান।
সরস্বতী পূজা উপলক্ষে দেশের হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষ বিশেষ করে শিক্ষার্থীরা আজ বাণী-অর্চনাসহ নানা কর্মসূচির আয়োজন করেছে। রাজধানীসহ সারা দেশের বিভিন্ন মন্দির, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালত, ব্যাংক-বীমা প্রতিষ্ঠান ও পারিবারিকভাবে পূজা-অর্চনা ছাড়াও নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। এসবের মধ্যে রয়েছে পুষ্পাঞ্জলি প্রদান, প্রসাদ বিতরণ, ধর্মীয় আলোচনাসভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সন্ধ্যাআরতি, আলোকসজ্জা, আলোচনাসভা প্রভৃতি। পূজা উপলক্ষে আজ সব সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে বলেও জানা যায়।
সরস্বতী পূজা উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ, বাংলাদেশ সর্বজনীন পূজা কমিটি, মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটিসহ হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারা বাণী দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর বাণীতে হিন্দু সম্প্রদায়ের সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, ‘ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে আবহমানকাল ধরে এ দেশের মানুষ মিলেমিশে বসবাস করে আসছেন। তাঁরা ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান নির্বিঘ্নে পালন করছেন। আমি বিশ্বাস করি পারস্পরিক এ সম্প্রীতি সামনের দিনগুলোতে আরো সুদৃঢ় হবে।’
প্রতিবারের মতো এবারও ঢাকা মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটি ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির মেলাঙ্গনে সরস্বতী পূজার আয়োজন করেছে। এখানে সকালে প্রতিমা স্থাপন, মন্ত্রপাঠ, পুষ্পাঞ্জলি প্রদান, প্রসাদ বিতরণ এবং সন্ধ্যায় রয়েছে আরতির আয়োজন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলসহ বিভিন্ন ছাত্রীহলে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে সরস্বতী পূজার আয়োজন করা হয়েছে। জগন্নাথ হলের কেন্দ্রীয় পূজামণ্ডপসহ বিভিন্ন বিভাগের উদ্যোগে পৃথকভাবে পূজামণ্ডপ তৈরি করা হয়েছে। জগন্নাথ হলের পুকুরের ভেতরে চারুকলা বিভাগের উদ্যোগে তৈরি করা হয়েছে ৩২ ফুট উচ্চতাসম্পন্ন দেবীর প্রতিমা। এ ছাড়া বেগম রোকেয়া হল, শামসুন্নাহার হল, কুয়েত মৈত্রী হলসহ অন্যান্য ছাত্রীহলেও পৃথকভাবে পূজামণ্ডপ স্থাপন করা হয়েছে। আজ ভোরের মধ্যে প্রতিমা স্থাপন শেষে সকাল ৮টা থেকে পূজা ও অঞ্জলি প্রদান শুরু হবে। এ ছাড়া রয়েছে দিনব্যাপী প্রসাদ বিতরণ এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।