স্টাফ রিপোর্টার ॥ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের যোগাযোগ মন্ত্রণালয় যখন সড়ক থেকে অবৈধ দোকানীদের সরিয়ে ফুটপাত মুক্ত করার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। ঠিক সেই মুহুর্তে উক্ত মন্ত্রণালয়কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে জয়দেবপুর থানার পুলিশের কিলো-১ ও স্থানীয় ফাঁড়ি পুলিশের কতিপয় অসাধু পুলিশ সদস্যরা গাজীপুর মহানগরের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের সাইবোর্ড এলাকার ফুটপাতের দোকানীদের না সরিয়ে উল্টো তাদের পৃষ্ঠপোষকতা করছে চাঁদা নেয়ার পরিবর্তে। এতে করে এ এলাকায় দিনদিন বিভিন্ন রকমের দোকানপাট বৃদ্ধি পাওয়ায় সংকোচিত হচ্ছে মহাসড়ক। ঝুঁকি বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনার।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাইনবোর্ড এলাকার ঢাকাগামী সড়কপথ দখল করে প্রায় ৪ শতাধিক কাঁচা বাজারসহ বিভিন্ন মালামাল নিয়ে হকাররা ফুটপাত দখল করে নেয়। আর ঐ সকল দোকান থেকে পুলিশের নিয়োগকৃত দালাল তৌহিদ, রাজু ও লিটন পুলিশের নাম করে প্রতি দোকান থেকে ৪০-৫০ টাকা হারে চাঁদা আদায় করে। যারা ঠিকমতো পুলিশের নিয়োজিত দালালদের টাকা দেয় তারা বুক ফুলিয়ে নির্বিঘেœ ব্যবসা করছে। আর যারা টাকা দিতে গড়িমসি করে তাদের উপর নিয়োগকৃত দালালরা বিভিন্ন রকম হুমকি-দামকি প্রদান করে।
এ ব্যাপারে স্থানীয় এক ব্যবসায়ি বাংলাভূমিকে জানান, পুলিশের নিয়োজিত দালালরা উক্ত বাজার থেকে সারাদিন যে চাঁদা আদায় করে থাকে তা বিকালে বা সন্ধ্যার আগে জয়দেবপুর থানায় টহলরত পুলিশের কিলো-১ এ দায়িত্বরত দারোগাকে ৩ হাজার, পুলিশের ড্রাইভারকে ১ হাজার ৫’শ, পুলিশ ফাঁড়িতে ১ হাজার ৫’শ টাকা করে দিয়ে থাকেন। চাঁদার টাকা দিলে ফুটপাতের দোকানীরা শান্তিতে ব্যবসা করতে পারে। আর পুলিশকে টাকা না দিলে ভাংচুর ও মালামাল নিয়ে যায় বলে তিনি জানান।
এক হিসাবে দেখা যায়, চারশত দোকানীদের কাছ থেকে প্রতিদিন দালালরা উত্তোলন করে ১৬-২০ হাজার টাকা। এর মধ্যে পুলিশ পাচ্ছে নির্ধারিত ৬ হাজার টাকা; বাকী ১০-১৫ হাজার টাকা যাচ্ছে দালালরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনৈক ফুটপাতের এক দোকানী বলেন, ‘আমার প্রতিদিন কাঁচামালা বিক্রি করে ৩০০-৩৫০ টাকা লাভ হয়। যা আমার সংসার চালাতে কোন সমস্যা হয় না। কিন্তু উক্ত লাভের টাকা থেকে আমাকে পুলিশকে ৫০ টাকা চাঁদা দিতে হয়। চাঁদা না দিলে আমার ব্যবসা করতে দেবে না। যার কারণে আমাকে উক্ত টাকা বাধ্য হয়ে দিতে হয়’।
এ বিষয়ে ভোগড়া ফাঁড়ি ইনচার্জ একরামুল হক বলেন, ‘আমি এখানে চার মাস যাবৎ দায়িত্ব পালন করে আসছি; ফাঁড়ি পুলিশ সাইনবোর্ড এলাকা থেকে এ বিষয়ে কোন টাকা নেয় না’।
এ বিষয়ে জয়দেবপুর থানার ইনচার্জ মোঃ কামরুজ্জামান পিপিএম বলেন, ‘পুলিশের নামে যদি কেউ ফুটপাত থেকে টাকা তোলে তবে তাদের আমি গ্রেফতার করবো। এ বিষয়ে আমরা স্টিকলী ভূমিকা পালন করছি’।