বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥ এমএইচ৩৭০ এর পর এমএইচ১৭। মাত্র চারমাসের ব্যবধানে ঝরে গেল ৫৩৭টি তাজা প্রাণ। বিমান দুর্ঘটনার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ট্রাজেডি হিসেবে নাম উঠে গেছে মালয়েশিয়ার। কারণ দুর্ঘটনাকবলিত দুটো প্লেনই মালয়েশিয়ান এয়ারলাইনসের।
সর্বশেষ ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে রাশিয়ার সীমান্তের কাছে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা প্লেন বিধ্বস্ত হয়। প্লেনের ক্রুসহ ২৯৮ যাত্রীর সবাই নিহত হয়েছেন। এটা নিয়ে বিশ্বরাজনীতি এখন শোরগোল। কেউ বলছে, জঙ্গিরা ভূপাতিত করেছে আবার কেউ বলছে সামরিক কর্মকর্তারা এর সঙ্গে জড়িত।
গধষড়ংরধথ১
মালয়েশিয়া এয়ারলাইনসের উড়োজাহাজ ভূপাতিত করার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে দোনেৎস্ক অঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। তাদের একজন বলেন, ১০ কিলোমিটার উঁচু থেকে উড়োজাহাজ ভূপাতিত করার মতো কোনো অস্ত্র তাদের নেই।
তাদের অভিযোগ, ইউক্রেনের বিমানবাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান মালয়েশিয়ার উড়োজাহাটিকে আক্রমণ করে। এতে সেটি আকাশেই দ্বিখণ্ডিত হয়ে যায় এবং পরে ভূপাতিত হয়।
এদিকে গত ৮ জুলাই ২৩৯ যাত্রী নিয়ে নিখোঁজ মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের এখনও খোঁজ মিলেনি। দীর্ঘ দুইমাস কয়েকটি দেশ নানা আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করেও কোনো কূলকিনারা হয়নি সেই রহস্যের। এমএইচ৩৭০ এর ক্ষত না শুকাতেই মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সে আবারও আঘাতের চিহ্ন।
মাত্র চার মাসের ব্যবধানে পরপর দু’টি মর্মান্তিক ঘটনায় পুরো মালয়েশিয়ায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্স এখন আতঙ্কে পরিণত হয়েছে। কেনই বারবার মালয়েশীয় এয়ারলাইন্স বারবার এমন দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন তা বলতে পারছেন না কেউই।
মালয়েশিয়া এয়ারলাইন কর্তৃপক্ষ জানায়, তাদের রাডারের সঙ্গে উড়োজাহাজটির যোগাযোগ যখন বিচ্ছিন্ন হয়, তখন সেটি ইউক্রেনের আকাশসীমায় ছিল।
উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনাটি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক। আর রাশিয়ার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মালয়েশিয়ার উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হওয়ার পর এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
গধষড়ংরধথ৪
এর আগে চলতি বছরের ৮ই মার্চ রাত ১২টা ৪১ মিনিটে (গ্রেনিচ মান সময় বিকেল ৪ টা ৪১) ফ্লাইট এমএইচ৩৭০ কুয়ালালামপুর বিমানবন্দর থেকে চীনের বেইজিংগামী যাত্রা শুরু করে। মালয়েশিয়ান এ বিমানটি উড্ডয়নের এক ঘণ্টারও কম সময় পরে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
বিমানে ২৩৯জন যাত্রী ছিলেন, যাদের মধ্যে ১৫৩জন চীনের নাগরিক আর ৩৮জন মালয়েশিয়ার।
অন্যান্য যাত্রীরা ইরান, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ইন্দোনেশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, ফ্রান্স, নিউ জিল্যান্ড, ইউক্রেন, রাশিয়া, তাইওয়ান আর হল্যান্ডের নাগরিক।
বিমানটি খুঁজে পাবার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক অনুসন্ধান চালানোর পরও ব্যর্থ হয়ে ২৪ মার্চ মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক জানান, মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের নিখোঁজ বিমানটি দক্ষিণ ভারত মহাসাগরে বিধ্বস্ত হয়েছে এবং এর সব আরোহী নিহত হয়েছেন।
চার মাসের ব্যবধানে এমন দুইটি দুর্ঘটনার পর মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্স নিয়ে অনেকেই ভাবতে শুরু করেছেন।