বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় যমটুপি পরিয়ে দিয়েছে সরকার

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥
ঢাকা: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেছেন, ‘বিচার বিভাগের মাথার ওপর ফাঁসির আসামির মতো যমটুপি পরিয়ে দিয়েছে সরকার।’
তিনি বলেন, দেশের ৭০ থেকে ৮০ ভাগ পত্রিকা আওয়ামী লীগের নিয়ন্ত্রণে থাকলেও তারা গণমাধ্যমকে ভয় পায়। এ কারণে সংবাদপত্রের সম্পাদকদের সরকার ‘আসো আসো’ বলে ডেকে নিয়ে সোনার খাঁচায় বন্দি করে ফেলেছে।
রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ‘সমৃদ্ধ বাংলাদেশ ও উন্নয়ন ভাবনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।
জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন এ সভার আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ডা. ফরহাদ হোসেন ডোনার।
তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘আজ বিচার বিভাগের মাথার ওপর ফাঁসির আসামির মতো যমটুপি পরিয়ে দিয়েছে আওয়ামী লীগ সরকার। সংবাদমাধ্যমকে সোনার খাঁচায় বন্দি করা হয়েছে। এভাবে সরকার দেশকে কারাগারে পরিণত করে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে নিতে চায়।’
তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষ বুকভরে একটু নিঃশ্বাসও নিতে পারছে না। তারা এ দুঃসহ অবস্থা থেকে মুক্তি চায়।’
তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘বিএনপিকে সাধারণ মানুষের মধ্যে আস্থার জায়গা তৈরি করতে হবে। মানুষের মধ্যে বিশ্বাসবোধ তৈরি করতে হবে। তারা যেন বিশ্বাস করে আওয়ামী লীগ যে সব অপকর্ম করছে, ভবিষ্যতে বিএনপি ক্ষমতায় এলে তা করবে না। বিএনপি ক্ষমতায় এলে বিচার বিভাগ থাকবে সম্পূর্ণ স্বাধীন। সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান স্বাধীনভাবে চলবে। টেন্ডারবাজি চলবে না। মেধার ভিত্তিতে চাকরি হবে। দেশের প্রশাসন থেকে শুরু করে সকল রাষ্ট্রীয় যন্ত্র আইন ও নিয়মানুযায়ী চলবে। মানুষকে দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হবে না।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘তারেক রহমান এ সব চিন্তা করেছেন। তিনি দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি লন্ডনে পড়াশোনা করছেন। তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করছেন। আমাদের সকলকে মেধার চর্চা করতে হবে। আজ আমাদের অঙ্গীকার হবে, আমরা সংশোধন হব। ভবিষ্যতে জনগণ আমাদের কাছ থেকে কোনো অন্যায় পাবে না।’
তিনি বলেন, ‘জীবনে অনেক আন্দোলন দেখেছি, অনেক আন্দোলন করেছিও। কিন্তু এবারের আন্দোলনের মতো এমন আন্দোলন আর দেখিনি। আওয়ামী লীগ তারেক রহমানের ছায়ার সঙ্গে যুদ্ধ করছে। দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে তারেক রহমানের ইমেজকে ধ্বংস করার জন্য হেন কোনো কাজ নেই, যা তারা করছে না।’
বিএনপির সিনিয়র এই নেতা বলেন, তারেক রহমান বাংলাদেশের আগামী দিনের সম্ভাব্য রাষ্ট্রনায়ক। তাই তাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই। কী পেলাম, কী পেলাম না; এ সব ভুলে যেতে হবে। সমস্ত বিভেদ ভুলে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘অতীতে আওয়ামী লীগ কিছু করলে আমরা বিএনপি শুধু রি-অ্যাকশন করতাম। আমরা এমন কিছু করতে পারিনি যে, আওয়ামী লীগ রি-অ্যাক্ট করবে। সেই ধারা তারেক রহমান ভেঙে ফেলেছেন। এখন আওয়ামী লীগই রি-অ্যাক্ট করছে, যা তাদের ক্ষতি করছে।’
তিনি বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীদের পড়তে হবে। একই সঙ্গে ফেসবুক, টুইটার ব্যবহার করতে হবে।
আমীর খসরু মাহমুদ বলেন, ‘আন্দোলন প্রশ্নে আমরা জনগণের কাছে আসামি হয়ে গেছি। মানুষ যেখানে চলে গেছে, সেখানে আমরা যেতে পারিনি। মানুষ জানতে চায় আপনারা কি কিছু করবেন না?’
তিনি বলেন, সারা বাংলাদেশ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। সবকিছু অচল হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ঢাকায় কিছু হয়নি। দেশ অচল হলেও ঢাকা সচল ছিল। তাই স্লোগান আর চাই না। আগামী দিনে দেখতে চাই ভিন্ন ধারার রাজনীতি।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, বিএনপির অনেক সমস্যা। প্রধান সমস্যা দলটির লোকজন পড়তে চায় না। তারেক রহমানের স্তুতি গাইলে সমস্যার সমাধান হবে না।
তিনি বলেন, আন্দোলন আকাশ থেকে আসে না। মেঘে মেঘে ঘর্ষণে বৃষ্টির মতো আন্দোলন নেমে আসবে না। আন্দোলন মাঠে করতে হয়। কিন্তু বিএনপির আন্দোলন হবে কেমনে? যে ছাত্রদলের নেতৃত্ব ৪৭ বছর বয়সী লোকদের হাতে। যাদের সন্তানতো আছেই, অনেকের নাতি-পুতিও আছে। আন্দোলন করতে হলে ছাত্রদলকে ২৫ বছর বয়সী প্রকৃত ছাত্রদের মধ্য থেকে গড়তে হবে।
আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক এমাজ উদ্দিন আহমদ, অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, প্রফেসর আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, তাজমেরী এস এ ইসলাম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি খন্দকার মোস্তাহিদুর রহমান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শামসুল আলম সরকার, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. পিয়াস করীম, সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সৈয়দ আলমগীর, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় গাজীপুরের শিক্ষক অধ্যাপক আবদুল করিম, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক মহাসচিব অধ্যাপক গাজী আবদুল হক, সিনিয়র সাংবাদিক শওকত মাহমুদ, দিনকালের সম্পাদক ড. রেজোয়ান সিদ্দিকী, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি কামালউদ্দিন সবুজ, বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান প্রমুখ।
দর্শক সারিতে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. ওসমান ফারুক, অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, এম এ মান্নান, যুগ্ম-মহাসচিব আমানউল্লাহ আমান, বিএনপি নেতা ফজলুল হক মিলন, খায়রুল কবির খোকন, হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, নিতাই রায় চৌধুরী, হাবিবুর রহমান হাবিব, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, আবুদল লতিফ জনি, শামীমুর রহমান শামীম, প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদ, কায়সার কামাল, শিরিন সুলতানা, আব্দুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল, হাবিবুর রশীদ হাবিবসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান দলের নিজস্ব প্রচারমাধ্যম িি.িনহঢ়ষরাব.পড়স এ আলোচনা সভা পর্যবেক্ষণ করছেন বলে সংবাদ প্রচারিত হওয়ায় নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক শোডাউনের তৎপরতা দেখা যায়। এ কারণে মূলত ঘরোয়া এই আলোচনা সভা জনসভায় রূপ নেয়।
বেঙ্গলিনিউজটোয়েন্টিফোর.কম ডেস্ক

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত আরও সংবাদ

সাম্প্রতিক সংবাদ

আর্কাইব

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930  

প্রধান সম্পাদক : সাঈদুর রহমান রিমন
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ নজরুল ইসলাম আজহার

সার্বিক যোগাযোগ : চৌধুরী মল (৫ম তলা), ৪৩ হাটখোলা রোড, ঢাকা-১২০৩॥

গাজীপুর অফিস : এ/১৩১ (ইকবাল কুটির) হাবিব উল্লাহ স্মরণী, জয়দেবপুর, গাজীপুর-১৭০০॥

হটলাইন: ০১৭৫৭৫৫১১৪৪ ॥ সেলফোন : ০১৭১৬-৩৩৩০৯৬ ॥ E-mail: banglabhumibd@gmail.com

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত বাংলাভূমি ২০০৯-২০২৫