বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥
ঢাকা: রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাংকের এমডিদের ক্ষমতা না কমিয়ে নিয়োগে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থাকতে পারলেই ব্যাংকের অনিয়ম দুর্নীতি কমে যাবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট উর্ধবতন কর্মকর্তা ও অর্থনীতিবিদরা।
২০১৩ সালের সংশোধিত ব্যাংক কোম্পানি আইনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কিছু ক্ষমতা বাড়ানো হলেও ব্যাংকের চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও পরিচালক নিয়োগ করার ক্ষমতা রয়েছে সরকারের হাতেই।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সোনালী ব্যাংক, রুপালী ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, বেসিক ব্যাংক, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, বাংলাদেশ ডেভলপমেন্ট(বিডিবিএল) ব্যাংকের চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও পরিচালক নিয়োগ পায় সরকারের মন্ত্রী-এমপিদের আস্থাভাজনরা।
নিয়োগ পেয়ে এসব এমডিরা মন্ত্রী-এমপি ও তাদের আত্মীয় স্বজনদের বিপুল পরিমাণ টাকা ঋণ দিচ্ছে। তাতে মানা হচ্ছে না নিয়মনীতির শতভাগ। একারণে বছরের বছরের অনাদায়ী থাকছে হাজার হাজার কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গর্ভনর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক(এমডি) বা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার ঋণ দেওয়ার ক্ষমতা কমালেই অনিয়ম বন্ধ হবে না। নিয়োগ দেওয়ার ক্ষেত্রে যোগ্য ব্যক্তিকে মনোনীত করাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধন করে রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলোর ওপর কিছু ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ক্ষমতা বাড়ানো হলেও অনেক কিছুই এখনও নিয়ন্ত্রণ করে অর্থ মন্ত্রণালয়। এমডি ও পরিচালক নিয়োগের ক্ষেত্রে তারা রাজনৈতিক বিবেচনা করে।
সংসদীয় কমিটি কয়েকটি ব্যাংকের ঋণ কেলেঙ্কারি তদন্তের পর সামগ্রিক ব্যাংক খাতের অনিয়ম রোধে সুপারিশ করেছে। তাতে মতামত চেয়ে গত ৯ সেপ্টেম্বর অর্থ-মন্ত্রণালয় একটি চিঠি পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে।
এতে ঋণ প্রদানে ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের অনিয়ম রোধে ক্ষমতা কমিয়ে সকল ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে দেওয়াসহ বেশ কয়েকটি সুপারিশ করেছে অর্থ মন্ত্রণালয় সর্ম্পকিত সংসদীয় কমিটি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের একজন উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক একই মত দিয়ে বলেন, বাজার অর্থনীতিতে সবাইকে দিয়ে সব কাজ হয় না। ক্ষমতা কমিয়ে নয়। যোগ্য ব্যক্তিকে দিয়েই করতে হয়। চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া এমডিরা সার্ভিস বেনিফিট পায় না।
তাই ৩ বছরের জন্য এসে ইচ্ছে মত সব কিছু করেন। প্রতিষ্ঠানকে ভালো করার চিন্তা নেই। দায়সারা ভাবে কাজ করে চলে যান। পরিবর্তনশীল ব্যাংক খাতে সেবার মান উন্নয়নে প্রয়োজন দক্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে দলগত ভাবে কাজ করা।
সংসদীয় কমিটির সুপারিশে বলা হয়েছে, ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও মহাব্যবস্থাপকদের বড় অঙ্কের ঋণ দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। একক ভাবে তাদের ঋণ অনুমোদনের ক্ষমতা কোন ভাবেই যুক্তি সঙ্গত নয়।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও অর্থনীতিবিদ ড. আকবর আলী খান বলেন, ক্ষমতা না কমিয়ে, ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়োগ করার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক প্রভাব না থাকলে ঋণ প্রদানে অনিয়ম কমে যাবে। একেবারে দুর হবে এটা বলা যাবে না। এমডি ঠিক থাকলে অনেকটা কমে যাবে। ঋণ প্রদানে অনিয়মের হাজারের অধিক কারণ আছে। বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম