বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥
ঢাকা: কোন বর্বরোচিত আক্রমণই বিরোধী দলের চলমান আন্দোলনকে স্তব্ধ করতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে গণমাধ্যমে দেওয়া বিবৃতিতে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রিজভী বলেন, অমানবিক নাশকতা সৃষ্টি করে বিরোধী দলের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালালেও জনগণ তা কখনোই বিশ্বাস করবে না। যদিও ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী সকল গণমাধ্যম দখল করে সেগুলোকে নিজেদের ব্যক্তিগত সম্পত্তির ন্যায় যখন যা ইচ্ছা তাই বলছেন, তথাপিও জনগণই হচ্ছে শ্রেষ্ঠ বিচারক, জনগণ এই দু:শাসনের অত্যাচারীদের বিচার করবেই।
ভোটারবিহীন সরকারের নিত্য সঙ্গী হচ্ছে অবিরাম মিথ্যাচার এই মন্তব্য করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী প্রতিদিন বলছেন দেশে নাকি তিনি গণতন্ত্র দিয়েছেন, এক অদ্ভুত মানবী হচ্ছেন আমাদের ভোটারবিহীন প্রধানমন্ত্রী। বিএনপির প্রধান কার্যালয়ে তালা লাগিয়ে, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে তাঁর নিজ কার্যালয়ে বালুর ট্রাক, ইটের ট্রাকসহ আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দিয়ে অবরুদ্ধ করে রেখে দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবসহ অসংখ্য কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে কারারুদ্ধ করে দেশব্যাপী নির্বিচারে গ্রেফতার আর ব্যাপক মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা দায়ের করে, গণমাধ্যমে বিরোধীদের বক্তব্য বন্ধ করে দিয়ে এক নতুন ধরণের গণতন্ত্র চালু করেছেন প্রধানমন্ত্রী। অবশ্য এ ধরণের একদলীয় গণতন্ত্র তাদের ঐতিহ্য।
বিবৃতিতে দলের যুগ্ম মহাসচিব বলেন, যারা শতকরা ৫ ভাগ ভোটের ওপর ভিত্তি করে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করে তাদেরকে নাশকতা, সন্ত্রাস, হানাহানী, খুনোখুনীর ওপর নির্ভর করেই দেশ চালাতে হয়। কারণ তাদের পেছনে জনগণের কোনো ম্যান্ডেট নেই। এই অবৈধ সরকারের কোনো বৈধতা নেই, আর এ কারণেই বিরোধী মত, সমালোচনা এবং বিরোধী দল উচ্ছেদ অভিযানে এরা এখন সকল শক্তি নিয়োগ করেছে। এজন্য তারা নিজেদের অবৈধ স্বত্ত্বাকে রক্ষা করার জন্য আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জনগণের মুখোমুখী দাঁড় করিয়েছে।
রিজভী আহমেদ বলেন, দেশের জনগণ এখন শ্বাসরুদ্ধ। চারিদিকে ভয় ও আতঙ্কের পরিবেশ। দেশের প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে সবচেয়ে বেশী সময় অতিবাহিত করেছেন বিএনপি ও জিয়াউর রহমানের পরিবারের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে। এই অবৈধ সরকার শান্তি, সম্প্রীতি ও শুভেচ্ছা নির্বাসনে পাঠিয়ে নিজের দেশের লোককেই লাঠিপেটা করতে বেশী পারঙ্গম হয়ে উঠেছে।
রিজভী বলেন, বিরোধী দলের চলমান আন্দোলন দমাতে শতকরা ৫ ভাগ জনসমর্থনের এই সরকার নিষ্ঠুর জুলুমের বিষাক্ত দাঁত নিয়ে জনগণের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে। বিএনপি’র সিনিয়র নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করে রিমান্ডের নামে চালানো হচ্ছে অবর্ণনীয় জুলুম। দেশব্যাপী জনগণকে নিপীড়ণের এই দু:সহ যন্ত্রণা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী নিজে এবং তাঁর উচ্ছিষ্টভোগীদের কুৎসা ও অরুচিকর বক্তব্যের বাকস্বাধীনতার গণতন্ত্রই এখন চালু রয়েছে।
তাই রক্তাক্ত হানাহানি আর নাশকতা উৎপাদনের কারখানা হচ্ছে এই অবৈধ ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী। এর বহু দৃষ্টান্ত জনগণের সামনে জাজ্জল্যমান। নারায়ণগঞ্জে ৭ খুন এবং ফেনীর ফুলগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান একরামকে হত্যা করে আগুনে পুড়িয়ে ফেলাটা আর বর্তমানে যাত্রীবাহী বাসে আগুন নিক্ষেপ করা একেবারে হুবুহু মিলে যায়। সুতরাং নাশকতার চর্চাকারী আওয়ামী ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর তীব্র হিংসাপরায়ণতাই এদের ধর্ম, আর তাই এই অবৈধ শক্তির বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা চলমান আন্দোলন অজ¯্র নির্দয় দলন-পীড়ণের মধ্যেও দমিয়ে রাখতে না পেরে তারা আবারও ৫ জানুয়ারীর পূর্বাপর নিজেরাই নাশকতা সৃষ্টি করে সেটি আন্দোলনকারী বিরোধীদের বিরুদ্ধে ঢালাও ভাবে অপপ্রচারের ঢাকঢোল পিটিয়ে যাচ্ছে।
চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবেক মন্ত্রী রিয়াজ রহমানকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলিবিদ্ধ করার প্রতিবাদে দেশব্যাপী আজকের ১২ ঘন্টার হরতাল আবারও সফল করার জন্য রিজভী দেশের আপামর জনসাধারণকে আহবান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত চলমান অবরোধ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। বেঙ্গলিনিউজটোয়েন্টিফোর.কম ডেস্ক