বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥
ঢাকা: যেকোনো অপরাধীর ২০০ ধরণের তথ্য, ১০ আঙ্গুলের বায়োমেট্রিক ছাপ এবং দুই চোখের বায়োমেট্রিক ইমেজ নিয়ে তৈরি করা হয়েছে র্যাব-প্রিজন ইনমেট ডাটাবেজ।
র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) কর্ণেল জিয়াউল আহসানের তত্বাবধানে র্যাব ক্রিমিনাল ডাটাবেজের অনুকরণে এটি তৈরি করা হয়েছে। এটি পরিচালনায় থাকবে র্যাব ও কারাগার কর্তৃপক্ষ।
রাজধানীর র্যাব সদরদপ্তরে রোববার দুপুরে র্যাব-প্রিজন ইনমেট ডাটাবেজটি উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
র্যাব ও কারাগার থেকে দক্ষ অপারেটর তৈরি করা, ৬৮ টি কারাগারে ওয়ার্ক স্টেশন পৌছানো এবং ৬৮টি কারাগারে ফাইবার অপটিকস্ ল্যান নেটওয়ার্কের ব্যবস্থার চ্যালেঞ্জ নিয়ে র্যাব-প্রিজন ইনমেট ডাটাবেজ তৈরি করা হয়েছে। র্যাব-প্রিজন ইনমেট এনরোলমেন্ট ওয়ার্কস্টেশন ল্যাপটপ, ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার, আইরিশ স্ক্যানার, ডিজিটাল এসএলআর ক্যামেরা, সফ্টওয়্যার ও একজন দক্ষ অপারেটর নিয়ে গঠিত।
র্যাব-প্রিজন ইনমেট ডাটাবেজ
প্রতিদিন প্রতিটি কারাগারে যে সংখ্যক অপরাধী প্রবেশ হয়, দিন শেষে তার পরিসংখ্যান প্রতিটি কারাগারের নামে ডাটাবেজে সংগৃহীত হয়। প্রতিদিন যে সংখ্যক অপরাধী কারাগার থেকে জামিনে মুক্ত হন এবং কারাগার ট্রান্সফার হন, তা ডাটাবেজে সংগৃহীত হয়। প্রতিদিন যে সংখ্যক অপরাধী প্রতি কারাগার থেকে কোর্ট ভিজিটে এবং সিভিল হাসপাতালে যায়, তার ডাটাবেজ সংগৃহীত হয়।
যেকোনো অপরাধী কারাগারে এনরোলমেন্টের সময় ফিঙ্গার প্রিন্ট ম্যাচিংয়ের মাধ্যমে অন্যান্য কারাগারে অথবা একই কারাগারে কতবার তিনি আটক হয়েছে তার বিস্তারিত জানা যায়। অপরাধের ধরণ অনুযায়ী এ ডাটাবেজ থেকে সার্চ করে প্রতি কারাগারে অপরাধীর সংখ্যা সহজে নিরূপণ করা যায়। অপরাধীর কারাগার ট্রান্সফার, জামিন, হাসপাতাল ভিজিট, বিশেষ কোনো তথ্য কারাগার থেকে মোবাইলে মেসেজ আকারে তাৎক্ষনিকভাবে কর্তৃপক্ষকে জানানো যায়। এমনকি অপরাধীর কারাগার ট্রান্সফার বা বিশেষ গমনাগমন কর্তৃপক্ষ চাইলে ডাটাবেজ থেকে মোবাইল মেসেজের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে অপরাধীর নিকট আত্মীয়কে জানানো যায়।
এই ডাটাবেজ থেকে র্যাবের ক্রিমিনাল ডাটাবেজে তথ্য আদান-প্রদান সম্ভব এবং অপরাধীর তথ্য জাতীয় পরিচয়পত্র ডাটাবেজের সঙ্গে ম্যাচিং করানো সম্ভব।
র্যাবের লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উইংয়ের উপ-পরিচালক মেজর রুম্মান মাহমুদ দ্য রিপোর্টকে জানান, কোনো অপরাধীকে গ্রেফতারের পর তার পরিচয় শনাক্ত ও অতীত অপরাধ রেকর্ড (পিসিআর) জানতেই অনেক সময় চলে যায়। জিজ্ঞাসাবাদে অপরাধীরা নিজেদের আড়াল করতে মিথ্যা তথ্যও দিয়ে থাকে। মামলার তদন্তের ক্ষেত্রে বিলম্বে এটি অন্যতম একটি বড় কারণ। আবার দণ্ডপ্রাপ্ত অপরাধীরা কারাগার থেকে ছাড়া পেয়ে ফের অপরাধ করে। বেশিরভাগ সময় তারা স্থান পরিবর্তন করায় তাদের চিহ্নিত করা দুস্কর হয়ে যায়।
তিনি আরও জানান, কিন্তু সম্পূর্ণ ডিজিটাল ফরম্যাটে প্রস্তুত এ তথ্যভান্ডার থেকে কম্পিউটারের মাধ্যমে মুহুর্তে একজন অপরাধীর বিস্তারিত তথ্য জানা সম্ভব। অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে এ তথ্যভাণ্ডার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এর বাইরে ছবি, অতীত অপরাধ সংঘটনের সংখ্যা, অপরাধের ধরণ, দণ্ড সংক্রান্ত তথ্যও সন্নিবেশ করা হয়েছে। এসব তথ্যের সঙ্গে অপরাধীর নাম, ঠিকানা, পেশা ইত্যাদি ব্যক্তিগত বিস্তারিত তথ্য রাখা হয়েছে।