বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥
ঢাকা : যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের সাবেক কর্মকর্তা জুলহাজ মান্নান ও তার বন্ধু মাহবুব রাব্বী তনয়কে হত্যার পর পালানোর সময় খুনিদের যে ব্যাগটি আটক করা হয়, সেখানে পাওয়া মোবাইল ফোন দু’টি নিহতদেরই।
হত্যার পর দুর্বৃত্তরা জুলহাজ ও তনয়ের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। তদন্ত সংশ্লিষ্টরা এ ব্যাপারে তথ্য পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন। তবে মঙ্গলবার (৩ এপ্রিল) পর্যন্ত সন্দেহভাজন আনসারুল্লাহ বাংলাটিমের (এবিটি) কোনো সদস্যকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেছেন, জুলহাজ ও তনয়কে খুন করার পর তাদের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়া হয়েছিল। পরে সেই মোবাইল ফোন দুটি উদ্ধার করা হয়েছে।
এ ছাড়া ঘটনাস্থল থেকে সংগ্রহ করা ভিডিও ফুটেজসহ খুনিদের কাছ থেকে যেসব আলামত জব্দ করা হয়েছে তা তদন্তকাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।
জানা যায়, জুলহাজ ও তনয়কে হত্যার পর কলাবাগান এলাকার ডলফিন গলির মুখে টহল পুলিশের একটি দল ছিল। চাপাতি নিয়ে দৌড়ানোর সময় খুনিদের বাধা দেয় পুলিশ। ওই সময় চাপাতির কোপে আহত হন কলাবাগান থানার এএসআই মমতাজ উদ্দিন। এ ছাড়া ওই সময় রাস্তায় দুর্বৃত্তদের বাধা দিতে গিয়ে আইডিয়াল কলেজের উচ্চমাধ্যমিক ছাত্র আনোয়ার হোসেন লিংকন আহত হন। এর আগে পারভেজ নামে ওই বাসার এক নিরাপত্তাকর্মীও খুনিদের চাপাতির কোপে গুরুতর আহত হন। তবে এএসআই মমতাজই ব্যাগটি কেড়ে রাখেন।
গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, গত ২৫ এপ্রিল বিকেলে কলাবাগানে জোড়া খুনের পর ঘটনাস্থলের আশপাশ থেকে তিনটি সিসি ক্যামেরার ভিডিও চিত্রসহ অন্তত ১০টি গুরুত্বপূর্ণ আলামত জব্দ করা হয়েছে। খুনিদের ফেলে যাওয়া ব্যাগ থেকেও বেশ কিছু ধারণা মিলেছে। আর ফুটেজের বিভিন্ন দৃশ্য মিলিয়ে তদন্ত এগিয়ে নেয়া হচ্ছে। কিন্তু সন্দেহভাজনদের গ্রেপ্তারে অগ্রগতি নেই। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে গোয়েন্দা পুলিশ এবং কাউন্টার টেরোরিজমের পাঁচটি টিম খুনিদের ধরতে কাজ করছে।
সূত্র জানিয়েছে, নিহত জুলহাজের বড় ভাই মিনহাজ মান্নান বাদী হয়ে কলাবাগান থানায় অজ্ঞাতপরিচয় পাঁচ-ছয়জনকে আসামি করে মামলা করেছিলেন। আরেকটি মামলা করেছে পুলিশ। এ সংক্রান্ত দুটি মামলারই তদন্ত করছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। মামলা দুটির ১০টি আলামত পরীক্ষার জন্য অনুমতি চেয়ে আদালতে গত বৃহস্পতিবার আবেদন করেছিলেন পরিদর্শক কে এম আশরাফউদ্দিন ও এসআই আনসার আলী। আদালত পুলিশের সিআইডিকে আলামত পরীক্ষার অনুমতি দিয়েছেন।
তদন্তসংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, সমকামীদের সংগঠিত করতে মূল ভূমিকা পালন করায় খুনিদের টার্গেটে ছিলেন জুলহাজ মান্নান। জঙ্গিরা পরিকল্পনা করেই জোড়া খুনের ঘটনা ঘটিয়েছে। ঘটনার আগে ও পরে তাদের যোগাযোগ যাচাই করা হচ্ছে। প্রযুক্তির সহায়তায় দ্রুতই খুনিদের নাগাল পাওয়া যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বাংলামেইল২৪ডটকম