ঐশীর ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায় আগামীকাল

স্টাফ রিপোর্টার ॥
পুলিশের বিশেষ শাখার কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান ও তাঁর স্ত্রী স্বপ্না রহমান হত্যা মামলায় তাঁদের মেয়ে মৃত্যুদ-াদেশপ্রাপ্ত ঐশী রহমানের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায় আগামীকাল সোমবার ঘোষণা করা হবে।

সুপ্রিম কোর্টের সম্পূরক কার্যতালিকায় আগামীকাল রায়ের জন্য দিন নির্ধারণ করা হয়।

এর আগে গত ৭ মে শুনানি শেষে এ বিষয়ে যেকোনো দিন রায় ঘোষণা করা হবে বলে জানান হাইকোর্ট।

বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ শুনানি শেষে মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখেন।

আদালতে ঐশীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আফজাল এইচ খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জহিরুল হক জহির ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আতিকুল হক সেলিম।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জহিরুল হক জহির বলেন, গত ১২ মার্চ ঐশীর আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শুরু হয়। আজ শুনানি শেষ হয়েছে। যেকোনো দিন তাঁর রায় ঘোষণা করা হবে।

চলতি বছরের ১০ এপ্রিল পুলিশ কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান ও তাঁর স্ত্রী হত্যায় মৃত্যুদ-াদেশ পাওয়া তাঁদের মেয়ে ঐশী রহমানের মানসিক অবস্থা পর্যবেক্ষণে হাইকোর্টে হাজির করা হয়। ওই দিন আদালতে হাজির করার পর খাস কামরায় নিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে।

ওই দিন আদালত বলেন, একটি মানবাধিকার সংস্থার পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, মেডিকেল রিপোর্টে বলা হয়েছে, ঐশী রহমান হত্যার সময় মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত ছিলেন এবং বংশগতভাবে তাঁরা মানসিক রোগী। তাঁর দাদি, চাচারা মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত। সেই মেডিকেল রিপোর্টের সত্যতা যাচাই ও পর্যবেক্ষণ করতে তাঁকে আদালতে হাজির করা হয়। পরে তাঁকে আবার কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।

গত বছরের ৬ ডিসেম্বর ২৫টি যুক্তি দেখিয়ে ঐশী রহমান হাইকোর্টে আপিল করেন।

মামলার বিবরণে জানা যায়, পুলিশ কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান ও তাঁর স্ত্রী স্বপ্না রহমানকে হত্যার দায়ে মেয়ে ঐশী রহমানকে ২০১৫ সালের ১৫ নভেম্বর দুবার মৃত্যুদ-াদেশ দেন আদালত। প্রত্যেক মৃত্যুদন্ডের সঙ্গে ২০ হাজার টাকা করে মোট ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়, অনাদায়ে দুই বছর কারাদ-াদেশ দেওয়া হয়েছে। একটি মৃত্যুদ- কার্যকর হওয়ার পর অন্যটি সরাসরি বাতিল হয়ে যাবে।

একই সঙ্গে ঐশীর বন্ধু মিজানুর রহমান রনিকে দুই বছর কারাদন্ডাদেশ ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে এক মাসের কারাদ-াদেশ দেওয়া হয়।

মামলার অপর আসামি আসাদুজ্জামান জনিকে খালাস দিয়েছেন আদালত। ঢাকার ৩ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক সাঈদ আহমেদ এ রায় ঘোষণা করেন।

ওই দিন বিচারক রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেন, ‘রাষ্ট্রপক্ষ ঐশীর প্রকৃত বয়স প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে। আর সে যে সাবালিকা, এটাও প্রমাণিত হয়েছে।’ আসামিপক্ষ ঐশীর বয়সের পক্ষে যা যুক্তি দিয়েছে, তা যথাযথ নয় বলে মন্তব্য করেন আদালত।

রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, ‘ঘটনার দিন ঐশী নেশাগ্রস্ত ছিল। তাঁর ক্রিমিনাল ইনটেন্ট (অপরাধ সংঘটনের ইচ্ছে) ছিল। হঠাৎ করেই কোনো উত্তেজনা ছিল না, পূর্বপরিকল্পিতভাবে সে তাঁর বাবা-মাকে ঠান্ডা মাথায় হত্যা করে। সে সুকৌশলে কফির সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে তার বাবা-মাকে হত্যা করেছে।’

২০১৩ সালের ১৬ আগস্ট রাজধানীর মালিবাগের চামেলীবাগের বাসা থেকে পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান ও তাঁর স্ত্রী স্বপ্না রহমানের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় পরের দিন ১৭ আগস্ট নিহত মাহফুজুর রহমানের ছোট ভাই মো. মশিউর রহমান রুবেল পল্টন থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলার দিন বিকেলে পল্টন থানায় আত্মসমর্পণ করেন ওই দম্পতির মেয়ে ঐশী রহমান।

২০১৪ সালের ৯ মার্চ ঐশীকে প্রধান আসামি করে তিনজনের বিরুদ্ধে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের পরিদর্শক আবুল খায়ের। এ মামলায় বিভিন্ন সময়ে ৪৯ সাক্ষীর মধ্যে ৩৭ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন।

সূত্র : আরটিভি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত আরও সংবাদ

সাম্প্রতিক সংবাদ

আর্কাইব

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930

প্রধান সম্পাদক : সাঈদুর রহমান রিমন
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ নজরুল ইসলাম আজহার

সার্বিক যোগাযোগ : চৌধুরী মল (৫ম তলা), ৪৩ হাটখোলা রোড, ঢাকা-১২০৩॥

গাজীপুর অফিস : এ/১৩১ (ইকবাল কুটির) হাবিব উল্লাহ স্মরণী, জয়দেবপুর, গাজীপুর-১৭০০॥

হটলাইন: ০১৭৫৭৫৫১১৪৪ ॥ সেলফোন : ০১৭১৬-৩৩৩০৯৬ ॥ E-mail: banglabhumibd@gmail.com

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত বাংলাভূমি ২০০৯-২০২৫