শৃঙ্খলা আনতে উপজেলায় মাস্টারপ্ল্যান করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

বাংলাভূমি ডেস্ক ॥
অবকাঠামো নির্মাণে শৃঙ্খলা আনতে উপজেলা পর্যায়ে উন্নয়নের মাস্টার প্ল্যান করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় পরিদর্শনে এসে কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় প্রধানমন্ত্রী এই নির্দেশ দেন।

তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমি একটা নির্দেশ দিয়েছিলাম, সেটা সেভাবে কার্যকর হয়নি-উপজেলায় একটা মাস্টার প্ল্যান করে দেয়া। এখন কারও টাকা থাকলেই ধানি জমি নষ্ট করে দালান তুলছে। কোনো হিসেব-নিকেশ নেই। এখন থেকে এ বিষয়ে আমরা যদি একটা নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করি… কোথাও বসতবাড়ি হবে যেখানে ভিটেবাড়ি আছে সেটা আলাদা কথা, কিন্তু চট করে ফসলি জমি নিয়ে যখন বাড়িঘর করে ফেলে…।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখন দেখা যাচ্ছে যে, যেখান থেকে দাবি করছে সেখানে রাস্তা হচ্ছে। সেটা না করে আমরা যদি এটা পরিকল্পিতভাবে করতে পারি, তবে বেশি মানুষ এটার সুবিধা পাবে। যেহেতু প্রচুর রাস্তা হয়ে গেছে আমাদের কিছু করার নেই, সবচেয়ে মুশকিল হচ্ছে রাস্তাগুলো রক্ষণাবেক্ষণের কোনো ব্যবস্থা নেই। রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা না থাকলে এক সময় সেই রাস্তা আর কাজে লাগে না। এজন্য বলেছি, আমরা যদি তৃণমূল পর্যায়ে একটা মাস্টার প্ল্যান করে দেই তবে এখনও যেটুকু সময় আছে আমরা অনেক দ্রুত উন্নত করতে পারব।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘তৃতীয়বারের মতো এসে এটুকু সান্ত্বনা পেলাম যে আমরা কিছু কাজ করার সুযোগ পেলাম। তাই বাজেট প্রণয়নের সময় লক্ষ্য রাখতে হবে আমরা মানুষের কাছে কীভাবে পৌঁছাতে পারি।’

আগামীতেও কেন্দ্রীয়ভাবে বাজেট প্রণয়ন করা হবে জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘কিন্তু এরপর আমি চাচ্ছি যে দায়িত্ব দিয়ে দেব আমাদের প্রতিটি জেলায়। ওই অঞ্চলের কী চাহিদা, কীভাবে মানুষের কাছে সেবা পৌঁছাতে পারে, তাদের কাছ থেকে মতামত ও পরিকল্পনা আমরা নেব। এভাবে পর্যায়ক্রমে প্রত্যেকটা স্তর থেকে আমরা বাজেট কীভাবে হবে সেই ধারণাটা নিয়ে আমরা বাজেটা তৈরি করব। যাতে প্রতিটি পয়সা মানুষের কল্যাণে কাজে লাগে। সেজন্য চিন্তা-ভাবনা আমাদের আছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের ভবিষ্যত পরিকল্পনা হচ্ছে ক্ষমতাকে বিকেন্দ্রীকরণ করে স্থানীয় সরকারকে আরও শক্তিশালী করা, যাতে তারা নিজ নিজ এলাকার উন্নয়নে আরও বেশি মনোনিবেশ করতে পারে ও অবদান রাখতে পারে। বিকেন্দ্রীকরণ ছাড়া উন্নয়নও টেকসই হবে না। যারা অবৈধভাবে সংবিধান লঙ্ঘন করে বারবার ক্ষমতায় এসেছিল তাদের মধ্যে দেশগড়ার চেতনটাই ছিল না। এর ফলে দেশটা অনেক পিছিয়ে ছিল বলতে গেলে।’

এখন আমাদের কাজ হচ্ছে বাংলাদেশকে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তোলা বলে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমরা ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত যতটুকু কাজ এগিয়ে ছিলাম, মাঝখানে ৭ বছরে আমরা ছিলাম না। এ সময়ে অনেক কিছু নষ্ট হয়ে যায়। ২০০৯ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত সময় হাতে পেয়েছিলাম বলে অনেকগুলো কাজ করতে পেরেছি, আজকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে উন্নীত হয়েছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করতে গেলে আমাদের সমস্ত পরিকল্পনা নিতে হবে তৃণমূল পর্যায়ে। সেখানে যে মানুষগুলো বাস করে তাদের মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণ করা, তাদের জীবন মান উন্নত করা। এটা করতে পারলে স্বাভাবিকভাবেই আস্তে আস্তে সমস্ত দেশটাই উন্নত হবে। সেদিকে লক্ষ্য করে এই মন্ত্রণালয়টা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, বাজেটের সবচেয়ে বড় টাকার অংশটাই এই মন্ত্রণালয়ে আসে।’

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বের বিষয়টি উঠে আসে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে। তিনি বলেন, ‘অনেকগুলো কাজ রয়ে গেছে যেগুলো আমাদের করতে হবে। আমি সব সময় চিন্তা করেছি কীভাবে মানুষের কাছে যাওয়া যায় মানুষের কাজটা করা যায়। এই মন্ত্রণালয়ের কাজ হচ্ছে সুপেয় পানির নিশ্চয়তা দেয়া। স্যানিটেশনের ব্যবস্থা করা। সেই সঙ্গে সঙ্গে আবার রাস্তাগুলোকেও উন্নত করতে হয়। বহুমুখী কাজ, আবার জনস্বাস্থ্যের দিকেও গুরুত্ব দেয়া। আমি মনে করি যতগুলো মন্ত্রণালয় আছে এই মন্ত্রণালয়টা হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়।’

সকাল ১০টার দিকে সচিবালয়ে আসলে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। এসময় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য, স্থানীয় সরকার সচিব এস এম গোলাম ফারুক, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় সচিব মো. কামাল উদ্দিন তালুকদারসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত আরও সংবাদ

সাম্প্রতিক সংবাদ

আর্কাইব

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
232425262728  

প্রধান সম্পাদক : সাঈদুর রহমান রিমন
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ নজরুল ইসলাম আজহার

সার্বিক যোগাযোগ : চৌধুরী মল (৫ম তলা), ৪৩ হাটখোলা রোড, ঢাকা-১২০৩॥

গাজীপুর অফিস : এ/১৩১ (ইকবাল কুটির) হাবিব উল্লাহ স্মরণী, জয়দেবপুর, গাজীপুর-১৭০০॥

হটলাইন: ০১৭৫৭৫৫১১৪৪ ॥ সেলফোন : ০১৭১৬-৩৩৩০৯৬ ॥ E-mail: banglabhumibd@gmail.com

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত বাংলাভূমি ২০০৯-২০২৫