চালের দাম কেজি ৫০ টাকা হলে ধানের দাম ১২ টাকা কেন

বাংলাভূমি ডেস্ক ॥
ধানের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত না করে কৃষকের ধান কেটে দেয়ার উদ্যোগকে সমালোচনা করেছে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ। ন্যাপ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সম্প্রতি শাসকদলের কিছু শীর্ষনেতা ছাত্রলীগকে কৃষকের ধান কাটতে বলেছেন আর ওমনি জেলা, উপজেলা, নগর, মহানগরের নেতারা ছাত্রলীগের ধান কাটার নির্দেশনা ফলাও করে প্রচার চালাচ্ছেন। যার কোনো উপকার কৃষকরা পায়নি।

সোমবার বাংলাদেশ ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গনি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়। নেতারা আরও বলেন, প্রচার-প্রচারণার জন্য নতুন লুঙ্গি-গেঞ্জি পড়ে ছাত্রলীগ নেতাদের কৃষকের ধান কাটার প্রয়োজন নেই, আমরা ধানের ন্যায্যমূল্য চাই।

বিবৃতিতে নেতারা বলেন, সরকার নিজেকে কৃষকবান্ধব বলে দাবি করলেও কোনো পদক্ষেপের মাধ্যমেই এ দাবি প্রমাণ হয় না। এবার ধানের বাম্পার ফলনের পর দেখা গেছে, সরকার প্রকৃতপক্ষে কৃষকের শত্রুই। কৃষকের জন্য তাদের কোনো মমতা নেই।

তারা বলেন, ‘এবার কৃষক ধান ফলিয়ে তা ঘরে তুলতে পারছেন না। এক মণ ধানের দাম ৫০০ টাকা। অপরদিকে একজন মজুরের দৈনিক মজুরি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা। অন্যান্য সময় কৃষক শ্রমিকের মজুরি দিতেন ধানের আনুপাতিক হিসাবে। কিন্তু এবার মজুরের সঙ্কট প্রকট হওয়ায় শ্রমিক মজুরি চাইছেন নগদ টাকায়। ফলে বিপাকে পড়েছেন কৃষক। বিপন্ন কৃষক কোথাও কোথাও পাকা ধানের ক্ষেতে আগুন লাগিয়ে দিয়েছেন। কোথাও কোথাও রাস্তায় ধান ছিটিয়ে দিয়ে প্রতিবাদ করেছেন।’

চাল ও ধানের দামে বিরাট ব্যবধান রয়েছে জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, এক কেজি চালের দাম যদি ৫০ টাকা হয়, তাহলে এক কেজি ধানের দাম ১২ টাকা হবে কেন? সরকার এ প্রশ্নের কোনো জবাব দেয়নি। জবাব না দিয়ে তারা এমন সব বক্তব্য দিচ্ছেন যে, গা শিউরে উঠছে।

সরকার ধানের সঠিক মূল্য কৃষকদের হাতে পৌঁছে দিতে না পারায় কৃষকরা আজ অর্থনৈতিক কষাঘাতে জর্জরিত হয়েছেন উল্লেখ করে ন্যাপ নেতারা বলেন, এর দায়-দায়িত্ব অবশ্যই সরকারকে নিতে হবে।

সরকারের সমালোচনা করে ন্যাপ নেতারা আরও বলেন, ‘যেখানে কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার, ব্যাংক থেকে লুটপাট হচ্ছে, সেখানে জনপ্রতি মাত্র ৫-৬ হাজার টাকা ঋণের জন্য লাখ লাখ কৃষকের নামে মামলা, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি সরকারের কৃষক নিধনের হাতিয়ার ছাড়া কিছুই নয়। কৃষকের ধান এখন চালকলের কাঁচামালে পরিণত হওয়ায় কৃষক মহাবিপদে পড়েছে।’

কৃষকদের এনজিওসহ সব ঋণ মওকুফের দাবি জানিয়ে ন্যাপ চেয়ারম্যান ও মহাসচিব বলেন, কৃষকের ধান কেনার জন্য সরকারের কাছে টাকা নেই, কিন্তু কৃষি কর্মকর্তাদের গাড়ি কেনার জন্য যথেষ্ট টাকা আছে। এ কেমন বিচার! অন্যদিকে আরও উদ্বেগের খবর হলো ধান নিয়ে বাংলাদেশের কৃষক যখন এতটা বিপন্ন তখন ভারত থেকে বেসরকারিভাবে ২০ লাখ টনেরও বেশি চাল আমদানির অনুমোদন দিল সরকার। ফলে বিভিন্ন স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশের বাজারে আসতে শুরু করল ভারতীয় চাল। এটা যেন ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’।

নেতারা অবিলম্বে সরকারিভাবে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ন্যায্যমূল্যে ধান কেনার দাবি জানান।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত আরও সংবাদ

সাম্প্রতিক সংবাদ

আর্কাইব

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031

প্রধান সম্পাদক : সাঈদুর রহমান রিমন
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ নজরুল ইসলাম আজহার

সার্বিক যোগাযোগ : চৌধুরী মল (৫ম তলা), ৪৩ হাটখোলা রোড, ঢাকা-১২০৩॥

গাজীপুর অফিস : এ/১৩১ (ইকবাল কুটির) হাবিব উল্লাহ স্মরণী, জয়দেবপুর, গাজীপুর-১৭০০॥

হটলাইন: ০১৭৫৭৫৫১১৪৪ ॥ সেলফোন : ০১৭১৬-৩৩৩০৯৬ ॥ E-mail: banglabhumibd@gmail.com

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত বাংলাভূমি ২০০৯-২০২৫