সিএএ-এনআরসি ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়, বাংলাদেশে প্রভাব পড়বে না: শ্রিংলা

বাংলাভূমি ডেস্ক ॥
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) ও নাগরিকপঞ্জির (এনআরসি) ফলে বাংলাদেশে কোনো প্রভাব পড়বে না বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা।

সোমবার রাজধানী ঢাকায় ‘বাংলাদেশ-ভারত: একটি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক এক সেমিনারে অংশ নিয়ে এ মন্তব্য করেন শ্রিংলা।

শ্রিংলা বলেন, এটি সরকার কর্তৃক কোনো বিষয় নয়, এটি আদালতের বিষয়। এনআরসির আপডেটেড তালিকায় যাদের নাম নেই, তাদের মধ্যে সব ধর্মের মানুষ আছে। তাদের অধিকার আছে আদালতে আপিল করার। সরকার এ ব্যাপারে তাদের সহযোগিতা করবে।

‘এর ফলে বাংলাদেশে কোনো প্রভাব পড়বে না। এটি একটি অভ্যন্তরীণ বিষয়। এ ছাড়া এটি অনেক দীর্ঘ জুডিশিয়াল প্রসেস।’

তিনি আরও বলেন, অনেকেরই এ আইন নিয়ে ভুল ধারণা রয়েছে। এটি মানবিক কারণেই করা হয়েছে। যাঁরা রাজনৈতিকভাবে নির্যাতনের শিকার হয়ে পালিয়ে ভারতে এসেছেন, তারা নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন। কোনো ইস্যুই আমাদের (বাংলাদেশ-ভারত) সম্পর্কে প্রভাব ফেলবে না। যারা নির্যাতনের শিকার হয়ে ভারতে এসেছেন, তাদের ক্ষেত্রে মানবিকতার জন্য এটা করা হচ্ছে, যেন তারা দ্রুত নাগরিকত্ব পান।

শ্রিংলা বলেন, সিএএ ধর্মীয় বিষয়কে কেন্দ্র করে নয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজেই বলেছেন, সিএএ ভারতের কোনো নাগরিক অথবা ধর্মের ওপর প্রভাব ফেলবে না।

এর আগে শুরুতেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে একজন প্রবাদপুরুষ উল্লেখ করে আসন্ন মুজিববর্ষের অনুষ্ঠান ঘিরে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা।

এ সময় শ্রিংলা বলেন, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করার পর আমার মনে হয়েছে, আমি বাড়িতে ফিরে এসেছি। আমি যাওয়ার পরও যোগাযোগ রেখেছিলাম। আমাদের বন্ধুত্ব অটুট রয়েছে।

মুজিববর্ষ উপলক্ষে ভারতের এই পররাষ্ট্র সচিব বলেন, আপনারা জানেন, মুজিববর্ষ উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বিশেষভাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আমরা এই অনুষ্ঠান ঘিরে আশাবাদী। বঙ্গবন্ধু একজন প্রবাদপুরুষ, সারা বিশ্বেই তিনি পরিচিত। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রতীক। বাংলাদেশের মতো ভারতেও তাকে স্মরণ করা হয়। নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, ‘শেখ মুজিবুর রহমান আমাদেরও একজন জাতীয় নায়ক’।

শ্রিংলা আরো বলেন, ‘আমরা ইতিহাস, সংস্কৃতি ও আত্মত্যাগের সঙ্গে যুক্ত। বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক অন্য দেশের জন্য একটি মডেল।’

এ সময় সীমান্তে হত্যাকাণ্ড নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেন, ‘সীমান্ত এলাকায় অপরাধ কর্মকাণ্ডের জন্যও এমনটা ঘটছে। সীমান্ত এলাকা নিরাপদ রাখা উভয় দেশের সীমান্তে নিয়োজিত বিজিবি ও বিএসএফের দায়িত্ব। সীমান্তে প্রতিটি মৃত্যুই দুর্ভাগ্যজনক ব্যাপার। আমরা অবশ্যই এটা চাই না। আমাদের সীমান্তে নিয়োজিত বাহিনীদের অনেক চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। উভয় দেশের বাহিনীদের ওপর বিভিন্ন আক্রমণও ঘটেছে।’

সীমান্ত এলাকায় ভারতীয় নাগরিকের মৃত্যু হয়—এমন মন্তব্য করে শ্রিংলা বলেন, ‘সীমান্তে যে শুধু বাংলাদেশি নাগরিকই মারা যাচ্ছে, তা না। সমান সংখ্যক ভারতীয় নাগরিকও মারা যাচ্ছে। আপনাদের কাছে হয়তো শুধু বাংলাদেশি নাগরিকের সংখ্যা আছে। তবে আমার কাছে যে পরিসংখ্যান আছে, সেখানে বাংলাদেশ ও ভারতের সমান সংখ্যক নাগরিক সীমান্তে মারা যাচ্ছে বলে তথ্য আছে।’

এ ব্যাপারে শ্রিংলা আরো বলেন, ‘আমাদের সীমান্তে নিয়োজিত বিএসএফের ওপর অনেক আক্রমণ হয়েছে। এ ছাড়া ২০১৯ সালে ১২ জন ভারতীয় নাগরিক মারা যান, চারজন আহত হন। আহত হয়েছেন ৮৩ জন বিএসএফ সদস্যও, তাঁদের মধ্যে একজন নিহত হয়েছেন।’

ভারতের পররাষ্ট্র সচিব জানান, সীমান্তকে ‘জিরো ক্রিমিনাল অ্যাকটিভিটি জোন’ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য উভয় দেশের সীমান্তে নিয়োজিত বাহিনী একসঙ্গে কাজ করছে। এ ছাড়া বর্ডারে নিহতের সংখ্যা যেন কম ঘটে, এ ব্যাপারে কাজ হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

এ সময় অন্যদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভীসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিক ছাড়াও আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত আরও সংবাদ

সাম্প্রতিক সংবাদ

আর্কাইব

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031  

প্রধান সম্পাদক : সাঈদুর রহমান রিমন
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ নজরুল ইসলাম আজহার

সার্বিক যোগাযোগ : চৌধুরী মল (৫ম তলা), ৪৩ হাটখোলা রোড, ঢাকা-১২০৩॥

গাজীপুর অফিস : এ/১৩১ (ইকবাল কুটির) হাবিব উল্লাহ স্মরণী, জয়দেবপুর, গাজীপুর-১৭০০॥

হটলাইন: ০১৭৫৭৫৫১১৪৪ ॥ সেলফোন : ০১৭১৬-৩৩৩০৯৬ ॥ E-mail: banglabhumibd@gmail.com

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত বাংলাভূমি ২০০৯-২০২৫