সরকার জনগণের মানবাধিকার সুরক্ষায় বদ্ধপরিকর: প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার ॥
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার দেশের জনগণের মানবাধিকার সুরক্ষায় বদ্ধপরিকর। মানবাধিকার উন্নয়ন ও সুরক্ষার অঙ্গীকার বাস্তবায়নকল্পে আমাদের সরকার ২০০৯ সালে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন প্রণয়ন করে। ইতোমধ্যে কমিশনকে শক্তিশালী করার জন্য জনবল ও বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধি করাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নো হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১০ ডিসেম্বর) ‘মানবাধিকার দিবস ২০২০’উপলক্ষে দেয়া এক বাণী তিনি এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের উদ্যোগে ‘জাতীয় মানবাধিকার দিবস ২০২০’ পালন করা হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। মানবাধিকার দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য ‘ঘুরে দাঁড়াবো আবার, সবার জন্য মানবাধিকার’ করোনা মহামারির এই সময়ে অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে।

তিনি বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারাজীবন শোষিত-বঞ্চিত মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য সংগ্রাম করেছেন। মানবাধিকারের প্রতি তার অঙ্গীকার ছিল অবিচল। শৈশব থেকে আমৃত্যু তিনি মানবাধিকারের প্রতি নিবেদিত ছিলেন। মানুষের রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য বারবার কারাবরণ করেছেন। বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন শোষণ ও বঞ্চনামুক্ত বাংলাদেশ গড়তে যেখানে প্রতিটি মানুষ মানবিক মর্যাদা, সাম্য ও ন্যায়বিচারের নিশ্চয়তা লাভ করবে। আমাদের স্বাধীনতা অর্জনের পর মাত্র দশ মাসের মধ্যে জাতির পিতা যে সংবিধান উপহার দিয়েছিলেন, সেই সংবিধানে ১৯৪৮ সালে জাতিসংঘ ঘোষিত ৩০টি অনুচ্ছেদ সংবলিত সর্বজনীন মানবাধিকার দর্শনের পুরোপুরি প্রতিফলন রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে মানবাধিকার কমিশন স্বাধীন এবং নিরপেক্ষভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বাংলাদেশ তিনবার জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের সদস্য পদে নির্বাচিত হয়েছে। এছাড়া আমাদের সরকার মানবাধিকার সুরক্ষার লক্ষ্যে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক কনভেনশনে স্বাক্ষর ও অনুসমর্থন করেছে। আমরা বিশ্ব মানবতার দিকে লক্ষ্য রেখে মিয়ানমারে নির্যাতিত হয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছি। নিরাপত্তাসহ তাদের জীবন ধারনের জন্য প্রয়োজনীয় সকল সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এবারের মানবাধিকার দিবস এক ভিন্ন প্রেক্ষাপটে উদ্দযাপিত হচ্ছে। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে গোটা বিশ্ব এখন বিপর্যস্ত। করোনা মোকাবিলার সকল প্রচেষ্টার মূল কেন্দ্রবিন্দু- মানবাধিকার সুরক্ষা, এই প্রত্যয় নিয়ে আমরা আমাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। আমি বিশ্বাস করি, করোনা মোকাবিলা ও সবার সমঅধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে গিয়ে চিহ্নিত সীমাবদ্ধতাগুলোকে জয় করার মাধ্যমে আমরা আমাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব।

তিনি বলেন, মুজিববর্ষ উপলক্ষে এবারের মানবাধিকার দিবসে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন সারাদেশে ‘বঙ্গবন্ধু ও মানবাধিকার’ শীর্ষক রচনা প্রতিযোগিতা আয়োজন করেছে জেনে আমি আনন্দিত। আমি মনে করি, কমিশনের এই উদ্যোগের ফলে তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকসহ মাঠ প্রশাসনে কর্মরত সকলের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর মানবাধিকার দর্শন সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি পাবে।

শেখ হাসিনা বলেন, কোভিড-১৯ মোকাবিলায় মানবাধিকার সুরক্ষার লক্ষ্যে সরকারের পাশাপাশি মানবাধিকার সুরক্ষার কাজে নিয়োজিত জাতীয় মানবাধিকার কমিশনসহ সকল সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থা, উন্নয়ন সহযোগী, সুশীল সমাজ, গণমাধ্যম, মালিক ও শ্রমিক সংগঠনসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে আরও কার্যকর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানাচ্ছি। মানবিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সকলের মধ্যে মানবাধিকার সুরক্ষায় সচেতনতা সৃষ্টিতে একযোগে কাজ করে আমরা জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সমর্থ হবো ইনশাআল্লাহ।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত আরও সংবাদ

সাম্প্রতিক সংবাদ

আর্কাইব

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031  

প্রধান সম্পাদক : সাঈদুর রহমান রিমন
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ নজরুল ইসলাম আজহার

সার্বিক যোগাযোগ : চৌধুরী মল (৫ম তলা), ৪৩ হাটখোলা রোড, ঢাকা-১২০৩॥

গাজীপুর অফিস : এ/১৩১ (ইকবাল কুটির) হাবিব উল্লাহ স্মরণী, জয়দেবপুর, গাজীপুর-১৭০০॥

হটলাইন: ০১৭৫৭৫৫১১৪৪ ॥ সেলফোন : ০১৭১৬-৩৩৩০৯৬ ॥ E-mail: banglabhumibd@gmail.com

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত বাংলাভূমি ২০০৯-২০২৫