স্টাফ রিপোর্টার:
দুই যুগের ব্যবধানে গাজীপুর জেলার পরিবেশগত পরিবর্তনের বিস্তর তথ্য নিয়ে জেলা প্রশাসকের সাথে মতবিনিময় সভা করেছে গাজীপুরের সাংবাদিক ও একাধিক পরিবেশবাদী সংগঠন। উনবিংশ শতাব্দীর সবুজের নগরী গাজীপুর এখন অপরিকল্পিত শিল্পের শহরে পরিণত হয়েছে। দুই যুগের ব্যবধানে দ্রুত শিল্প উন্নয়নের পাশাপাশি কৃষি, জলাশয় ও বনাঞ্চলের উপর বিরূপ প্রভাব পড়েছে।
বাংলাদেশের রিভার ফাউন্ডেশন ও রিভার এন্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টার এর সমন্বিত উদ্যোগে বুধবার দুপুরে জেলা প্রশাসনের ভাওয়াল সম্মেলন কক্ষে উক্ত মত বিনিময় সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। মত বিনিময় সভায় উপস্থাপিত প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০০০ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত জেলার বনভূমি কমেছে আশঙ্কা জনক হারে, নদীগুলোকে কেন্দ্র করে শিল্প স্থাপন হয়েছে, বেড়েছে দখল ও দূষণ। প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করা পর্যন্ত ৩৩৭টি কারখানার বজ্র সরাসরি নদীতে ফেলা হয়, নাগরিক বর্জ্যের পাইপলাইন রয়েছে ৪০টি, ১১৬টি স্থানে শিল্পায়নের উদ্যোগে নিম্নাঞ্চল ভরাট করা হয়েছে। ভরাট চলমান রয়েছে কমপক্ষে ৫৯টি স্থানে। অর্ধ শতকের বেশি স্থানে রয়েছে নদীতে উন্মুক্ত ময়লা ফেলার স্থান। এই সময়ে শিল্পায়ন বেড়েছে ৫২ শতাংশ, জলাভূমি ৬ দশমিক ৭৩ থেকে নেমে এসেছে ৩ দশমিক ২৭ শতাংশে। অনিয়ন্ত্রিত ও অপরিকল্পিতভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে চলেছে গাজীপুর জেলার পরিবেশ।
দূষণের কারণ ও উত্তরণ নিয়ে জেলার সুশীল ব্যক্তিরা জেলা প্রশাসকের সাথে মতবিনিময় করেছেন। বাংলাদেশ রিভার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মনির হোসেন এর সঞ্চালনায় প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেছেন রিভার ও ডেল্টা রিসার্চ সেন্টারের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এজাজ। মতামত প্রদান করেছেন ভাষা শহিদ কলেজের অধ্যক্ষ মুকুল কুমার মল্লিক, ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজের অধ্যাপক অসীম বিভাকর, বাপা প্রতিনিধি হাসান মাহমুদ, সাংবাদিক আসাদুজ্জামান সাদ, রসায়নবিদ ও কলামিস্ট সাঈদ চৌধুরী প্রমুখ।
অনুষ্ঠান শেষে জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম গাজীপুরের পরিবেশ বিপর্যয়ের বিষয়টি অকপটে স্বীকার করে বলেন, শিল্পের প্রভাবে দিন দিন এ জেলার পরিবেশের দুরবস্থা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমি শুরু থেকেই বনভূমি উদ্ধারের মাধ্যমে পরিবেশ রক্ষার যুদ্ধ শুরু করেছি, সাধারণ মানুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টা এই দুরবস্থা থেকে দ্রুত মুক্তির পথ দেখাবে৷ আমরা ইতিমধ্যে মহানগরের বিলুপ্ত হওয়া জলাশয় উদ্ধার করতে শুরু করেছি। যুদ্ধের সূচনা করেছি একদিন আলো আসবেই।