সোমবার , ১৩ই মে, ২০২৪ , ৩০শে বৈশাখ, ১৪৩১ , ৪ঠা জিলকদ, ১৪৪৫

হোম > জাতীয় > গাজীপুরের লবনদহ নদী খননের নামে কোটি টাকা লোপাট

গাজীপুরের লবনদহ নদী খননের নামে কোটি টাকা লোপাট

শেয়ার করুন

সাদিকুর রহমান
স্টাফ রিপোর্টার:
দেশের সবচেয়ে দূষিত নদীর খেতাব প্রাপ্ত গাজীপুরের লবনদহ নদী খননের নামে সরকারী অর্থ অপচয়ের অভিযোগ উঠছে। নদীটি রক্ষার লক্ষ্যে এক কোটি টাকার খনন প্রকল্প গ্রহণের চার বছর পর কাজ অসমাপ্ত রেখে প্রকল্প সমাপ্ত করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড, নরসিংদী। কথিত খনন কাজ শেষ হলেও এর কোন সুবিধা এখনো পরিলক্ষিত হয়নি। সাধারণ মানুষ এমন খনন প্রকল্পকে সরকারের টাকা লোপাট হিসেবে আখ্যা দিচ্ছেন।
স্থানীয় ঠিকাদারদের মতে সর্ব্বোচ্চ ছ’মাসের কাজ তারা তিন-চার বছরে করেছে। এতটা সময়ের পরেও সেটি যথোপযুক্ত হয়নি, এমনকি পার বাধা ও গভীরতার পরিবর্তনও ঘটেনি। নদী খননের নামে কোদাল দিয়ে আবর্জনা পরিষ্কার করার ছবি ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
পাউবো, নরসিংদির দেওয়া তথ্যমতে ২০১৯-২০ অর্থ বছরে লবনদহ খালের ১১ কিলোমিটার খননের প্রকল্প গ্রহণ করা হয়, এ.সি.এল ডেজার্স এর তত্ত¡াবধানে খনন কাজ শুরু হয়। সাধারণ এক্সাভেটর দিয়ে কিছুদিন চলমান থাকার পর বিভিন্ন অজুহাতে কাজটি থেমে যায়, শ্রীপুরের সলিং মোড় থেকে দক্ষিণে ৩-৪ কিলোমিটার খালের কাঁদা মাটি নদীর পারের জমিতে ফেলে রাখে, অপরিবর্তিত থাকে নদীর গভীরতা এ প্রস্থ্য। প্রায় বছর দু’য়েক পর কবরঘাটা এলাকায় লিথি গ্রæপের ১৪শ ফুট নিম্ন অঞ্চল থেকে উত্তর দিকে খনন শুরু করে ঠিকাদার, নানা ধরিবাজীর পথ ধরে এক্সাভেটর রেখে কোদাল আর শ্রমিক দিয়ে কর্মযজ্ঞ প্রকাশ করে তারা। সে সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টিকে নিয়ে কোদালী খনন নামে ব্যাঙ্গাত্মক পোস্টও হয় অনেক। কাজের কাজ কিছুই না হলেও জানা গেছে এই প্রকল্প শেষ, কাজ সমাপ্ত ও শতভাগ বিল প্রদান সহ সকল ফরমালিটি শেষ করা হয়েছে।
খননের বিষয়ে পাউবো, নরসিংদীর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী হুমায়ুন কবির মুঠোফোনে বাংলাভূমিকে জানান, প্রকল্পটি শেষ হয়েছে ২০২২ সালের জুন মাসে। চকলেট কারখানা এলাকায় নদী দখলের কারণে ওই এলাকায় খনন করা যায়নি।
তিনি আরো বলেন, খনন চলাকালে দখলদাররা বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছিল, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও এসিল্যান্ড বিষয় গুলো অবগত আছেন। ওই এলাকাতে সকল নাগরিক বর্জ্য নদীতে ফেলা হয়। তাই খননের সুফল পাওয়া কঠিন।
এমনই মন্তব্য নির্বাহী প্রকৌশলী বিজয় ইন্দ্র শঙ্কর চক্রবর্তীর। তিনি বলেন, যেভাবে শিল্প ও নাগরিক বর্জন নদীতে ফেলা হয় তাতে এই নদী খননের সুফল পাওয়ার কথা না। খননের সুফল পাওয়ার আগেই নদী ভরাটের কথা শুনে মনে হচ্ছে নদীকে গলা টিপে হত্যা করা হচ্ছে। জনসাধারণের সচেতনতা ছাড়া এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে না।
গাজীপুর জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম কে এ বিষয়ে অবগত করলে তিনি লবনদহ নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তিনি আরো জানান, এই নদীকে রক্ষা করতে আরো কাজ করার প্রয়োজন থাকলে সে বিষয়েও মন্ত্রণালয় ও সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করব।