সোমবার , ১৩ই মে, ২০২৪ , ৩০শে বৈশাখ, ১৪৩১ , ৪ঠা জিলকদ, ১৪৪৫

হোম > গ্যালারীর খবর > রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে বাংলাদেশ মিয়ানমারের মধ্যে মধ্যস্ততা করবে চীন

রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে বাংলাদেশ মিয়ানমারের মধ্যে মধ্যস্ততা করবে চীন

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি ডেস্ক ॥
রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে সংকট নিরসনে মধ্যস্ততা করতে উদ্যোগ নিচ্ছে চীন। চীন এধরনের প্রস্তাব দিয়েছে গত মঙ্গলবার। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের দুই কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেছে দি ওয়্যারকে।

বৌদ্ধ অধ্যুষিত মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর নির্যাতনের ফলে গত বছরের অক্টোবর থেকে অন্তত ৬৯ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এছাড়া আরো ৪ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম একই কারণে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিলেও বারবার বাংলাদেশের অনুরোধি সত্ত্বেও মিয়ানমার তাদের ফেরত নেয়নি। জাতি পরিচয়হীন রোহিঙ্গাদের অন্য জাতির সমস্যা হিসেবে দেখছে মিয়ানমার।

চীনের বিশেষ দূত সান গুয়োঝিয়াং চারদিনের সফরে বাংলাদেশে এলে তাকে মিয়ানমারের সঙ্গে রোহিঙ্গা সংকট দূর করার জন্যে উদ্যোগ নিতে বলে ঢাকা। এর পাশাপাশি চীনও চায় এ সংকট নিরসনে উদ্যোগী ভূমিকা নিতে। চীনের বিশেষ দূত সান রয়টার্সকে জানান, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হকের সঙ্গে বৈঠকের সময় এধরনের আহবান জানানো হয়। তবে এব্যাপারে বিস্তারিত বলতে রাজি হননি সান। কারণ মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলার কোনো এখতিয়ার তার নেই।

বিষয়টি স্পর্শকাতর বলে, বিস্তারিত কিছু বলতে রাজি হননি বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের এক কর্তা। তবে আরেক কর্তা জানান, চীন এব্যাপারে উদ্যোগ নিতে প্রস্তুত রয়েছে। প্রয়োজন হলে তারা আমাদের সাহায্য করতে চায়।

বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সঙ্গে চীনের গভীর সম্পর্ক রয়েছে। দুটি দেশের অবকাঠামো নির্মাণে চীনের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। প্রায় এক দশকের আলোচনার পর চীনের সঙ্গে মিয়ানমার পাইপলাইন স্থাপন করে আশেপাশের প্রতিবেশি দেশগুলোতে জালানি তেল রফতানিতে রাজি হলে দুটি দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরো গভীর হয়। অন্যদিকে বেইজিং বাংলাদেশে সড়ক, বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ ও অস্ত্র বিক্রিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করছে।
গত মঙ্গলবার চীনের বিশেষ দূত সানের সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হক চীনকে রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে উদ্যোগের ক্ষেত্রে সহায়তার কথা বলেন। অব্যাহতভাবে রোহিঙ্গা মুসলমানদের বাংলাদেশে পালিয়ে আসায় শহিদুল হক উদ্বেগ প্রকাশ করেন। ঢাকার পক্ষ থেকে চীনের এই বিশেষ দূতকে কক্সবাজারে রোহিঙ্গা মুসলমানদের দুর্দশা দেখার জন্যে অনুরোধ করা হয়। বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত মা মিংকিয়াং গত মার্চে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন।

আন্তর্জাতিকভাবে মিয়ানমারকে গভীর সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে রোহিঙ্গা নির্যাতনের জন্যে। রোহিঙ্গাদের ওপর হত্যাযজ্ঞ, নারীদের ধর্ষণ, তাদের বাড়ি ঘরে অগ্নিসংযোগের বিষয়টি মিয়ানমার সরকার আংশিক স্বীকার করলেও তাদের বিরুদ্ধে জাতিগত নিধনের বিষয়টি অস্বীকার করে আসছে। মিয়ানমার সরকার বলছে সেনাবাহিনীর কেউ কেউ এধরনের কাজের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে। তবে মিয়ানমার সেনাবাহিনী ধর্ষণকে একটি অস্ত্র হিসেবে দীর্ঘদিন ধরেই ব্যবহার করে আসছে।