রবিবার , ১৯শে মে, ২০২৪ , ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ , ১০ই জিলকদ, ১৪৪৫

হোম > রাজনীতি > সরকারের কোনো মন্ত্রী যায়নি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় অভিযোগ মির্জা ফখরুলের

সরকারের কোনো মন্ত্রী যায়নি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় অভিযোগ মির্জা ফখরুলের

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি ডেস্ক ॥
এপ্রিল মাসের ৪/৫ তারিখ থেকে উজান থেকে নেমে আসা পানির ঢল, অকাল, অতিবৃষ্টি এবং বিভিন্ন বাঁধ সংস্কার না করার ফলে ভেঙ্গে যাওয়ায় নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ জেলার বিভিন্ন হাওড় এলাকার লক্ষ লক্ষ হেক্টর জমির ফসল বিনষ্ট হয়। যাতে প্রায় ১০ লক্ষ টন চাল উৎপাদন হতো। নিরবে এসব এলাকায় বড় ধরণের বির্পয ঘটে গেছে যা এদেশের মানুষের অজানা রয়ে গেছে।

এসব জেলায় লক্ষ লক্ষ পরিবার ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে চরম মানবিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হচ্ছে। এসব এলাকায় মানুষ অর্ধহারে অনাহারে দিনাপতিপাত করছে। সরকারের ত্রাণ সামগ্রী অপ্রতুল। আবার এসব ত্রাণ সামগ্রী বিতরণে ক্ষমতাসিন লোকজনের দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। ইতিমধ্যে সেখানে একজন আত্মহত্যা করেছে এবং একজন হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছে। হাওড় এলাকা এতো বড় পর্যায়ের পরেও সেখানে সরকারের কোনো মন্ত্রী যাননি। এসব অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন।

ক্ষতিগ্রস্থ হাওড় এলাকা পরিদর্শন শেষে মির্জা ফখরুল সংবাদ সম্মেলনে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার মানুষের দুঃখ দুর্দশার চিত্র তুলে ধরে বলেন, সেখানে যে কি অবস্থা বিরাজ করছে তা স্বচক্ষে না দেখলে বোঝার উপায় নেই। আর ভেতরে ভেতরে এতবড় একটা বির্পয় ঘটে গেলো তা গণমাধ্যমে সেভাবে উঠে আসেনি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, হাওড় এলাকায় বন্যায় ফসল বিনষ্টের সংবাদে উদ্বিগ্ন হয়ে বিএনপি চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের পাশে দাঁড়াবার জন্য নির্দেশ প্রদান করেন। পরবর্তীতে দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভায়ও হাওড় অঞ্চলের দুর্দাশাগ্রস্থ মানুষের পাশে দাঁড়াবার জন্য দলের পক্ষ থেকে প্রতিনিধি দল প্রেরণের সিদ্ধান্ত হয়।

সরকারী ত্রাণ তৎপরতা একেবারেই অপ্রতুল এবং লোক দেখানো এ অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল সংবাদ সম্মেলনে বলেন, খোলা বাজারে চাল ও আটা বিক্রির কথা বলা হলেও তা দৃশ্যমান নয় এবং এনিয়ে চরম দুর্নীতি হচ্ছে। বর্তমান সরকার জনগণ দ্বারা নির্বাচিত নয় বলেই জনগণের প্রতি এদের কোন দায়বদ্ধতা নেই। আর সে কারণেই তারা হাওড় অঞ্চলের জনগণের দুর্দশায় নির্বিকার।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ১৯৯১ সালে বিএনপি সরকারের আমলেই প্রথম সরকারী ভাবে হাওড় অঞ্চলে ফসল রক্ষার জন্য বাঁধ নির্মাণ করা হয়। এরপর থেকেই প্রতি বছর ফাল্গুন মাসের আগেই বাঁধগুলো সরকারী খরচে সংস্কার  করা হতো। কিন্তু এবছর বাঁধগুলো দুর্নীতি ও লুটপাটের কারণে যথাযথভাবে সংস্কার না হওয়ায় উজানের পানির ঢলে দুর্বল বাঁধগুলো ভেঙে গিয়ে ফসল নষ্ট করে।
ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাকে অবিলম্বে দুর্গত এলাকা ঘোষণার দাবি

*প্রশাসনের উদ্যোগে দলমত নির্বিশেষে সকলকে নিয়ে কমিটি গঠনের মাধ্যমে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্থদের  নির্ভুল এবং দলীয় প্রভাবমুক্ত তালিকা করে আগামী ফসল না উঠা পর্যন্ত ত্রাণ তৎপরতা চালানোর দাবি করছি।

*  পুরাতন কৃষি ঋণ মত্তকুফ।

*  আগামী ফসলের জন্য সুদবিহীন নতুন কৃষি ঋণ দেয়া।

*  আগামী ফসল উৎপাদনের জন্য কৃষকদের মাঝে বিনামুল্যে সার,বীজ, কিটনাশক, তেল সহ কৃষি উপকরণ দেয়া।

*এলাকায় ক্ষতিগ্রস্থ বাঁধগুলো আগামী ফাল্গুন মাসের আগেই পুনঃনির্মাণ/সংস্কার করতে হবে। সেখানে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নিতে হবে।

*  একইভাবে আগামী বোরো ফসল উঠার আগেই এলাকার নদীসমুহের যথাযথ ড্রেজিং করার দাবি জানাচ্ছি।

*  ভারত থেকে আগত  বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত ৫৪টি অভিন্ন নদীসমুহে পানি প্রবাহের ন্যায্য চুক্তি করতে হবে। উজানে বাঁধ দিয়ে ভারত এসব নদীর পানি নিয়ন্ত্রণ করছে। যার ফলে বর্ষা মৌসুমে পানি ছেড়ে দেয়ায় বাংলাদেশের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। অন্যদিকে শুষ্ক মৌসুমে পানি আটকিয়ে দিচ্ছে। আমাদের সময়.কম