স্টাফ রিপোর্টার ॥ গত এক সপ্তাহে প্রতি কেজিতে চালের দাম বেড়েছে ৪-৫ টাকা। তবে দাম নিয়ন্ত্রণে দু-এক দিনের মধ্যে খোলাবাজারে (ওএমএস) চাল বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
রাজধানীর পাইকারি চাল ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ঈদের আগে প্রতি কেজি মিনিকেট চালের দাম ছিল ৪১-৪২ টাকা। বর্তমানে তা ৪৫-৪৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ৪৬-৪৮ টাকার নাজিরশাইল এখন ৫১-৫২ টাকা, ৩২-৩৩ টাকার বিআর-২৮ এখন ৩৭-৩৮, ৩২-৩৩ টাকার বিআর-২৯ ও গুটি চাল ৩৫-৩৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক আহমেদ হোসেন খান বলেন, ‘চালের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে আজ অথবা কাল বৃহস্পতিবার খোলাবাজারে চাল বিক্রি শুরু হবে। দেশের বিভাগীয় শহর ও শ্রমঘন এলাকা, বিশেষ করে ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ এলাকায় খোলাবাজারে চাল বিক্রি হবে।’
পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান, চলতি বছর বোরো মৌসুমের পর থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত চালের দাম মণপ্রতি ৪৫০-৫০০ টাকা বেড়েছে।
মিলমালিকরা বলছেন, চলতি বছর বোরোর আবাদ ভালো হলেও চাহিদার তুলনায় কিছুটা ঘাটতি ছিল। আউশ মৌসুমে খরায় উত্পাদন কম হয়েছে। আমন আবাদও ব্যাহত হচ্ছে। একদিকে বোরোর কিছুটা ঘাটতি, অন্যদিকে আউশ উত্পাদন কম ও আমনের আবাদ ব্যাহত হওয়ায় অনেকেই বোরো মৌসুমের ধান ভালো দাম পাওয়ার আশায় ধরে রাখার চেষ্টা করছেন।
নওগাঁ ধান-চাল আড়তদার সমিতির সভাপতি নিরোধ চন্দ্র সাহা বলেন, ধান-চালের ক্রয়মূল্য আরো ২ টাকা বাড়ানোর সিদ্ধান্তের কথা শোনা যাচ্ছে। এ মুহূর্তে সরকার দাম বাড়ালে প্রান্তিক কৃষক লাভবান হবেন না। এতে মাঝারি ও বড় মিলাররাই লাভবান হবেন।
রাজধানীর বৃহৎ চালের পাইকারি বাজার পুরান ঢাকার বাবুবাজার-বাদামতলী। ওই এলাকার চাল ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, রোজার সময় সাধারণ চালের চাহিদা কম থাকে। তখন দামও কিছুটা নিয়ন্ত্রণে থাকে। কিন্তু এ বছর তেমনটি হয়নি। মিলমালিকরা বাজার চাঙ্গা রাখতে সরবরাহ কমিয়ে দেন এবং চড়া দামে বিক্রি করতে নির্দেশ দেন। তারা মিলারদের কথা অনুযায়ী দাম বাড়াতে বাধ্য হন। রোজায় চাহিদা কম থাকায় তেমন বাড়িয়ে বিক্রি করা সম্ভব না হলেও ঈদের পর বাজার ধরে রাখা সম্ভব হয়নি।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, দেশে বর্তমানে চালকল রয়েছে ১৬ হাজার ৩৫০টি। এর মধ্যে অটো রাইস মিল রয়েছে ৩৮১টি, ২৮৩টি সেমি অটো ও ১৫ হাজার ৬৮৬টি ছোট চালের মিল রয়েছে। চাহিদার কারণে প্রতি বছরই দেশে অটো রাইস মিল বাড়ছে। এসব অটো মিল চালু রাখতে বিপুল পরিমাণ ধানের প্রয়োজন। তাই অটো রাইস মিলাররা তাদের ধারণাক্ষমতার চেয়ে বেশি পরিমাণ ধান মজুদ করেছেন। পরে তারা সুযোগমতো দামে বিক্রি করবেন বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।