বিয়ে আর ভালোবাসা পরস্পরের পরিপূরক

লাইফস্টাইল ডেস্ক ॥ বিয়ে আর ভালোবাসা পরস্পরের পরিপূরক। দেখা যায়, অনেকে ভালোবাসায় আবদ্ধ হলেও বিয়ে করেন না। অন্যদিকে ভালোবাসার অভাবে অনেক দম্পতি অসুখী জীবনযাপন করেন। ফলে অনেক সন্তান বঞ্চিত হয় বাবা অথবা মায়ের স্নেহ থেকে। একবিংশ শতাব্দীর পারিবারিক জীবনের এ বড়সড় পরিবর্তনটির কথা বলতে গেলে সমাজ, অর্থনীতি ও মনোবিজ্ঞানের ব্যাপারগুলো চলে আসে। তবে বিয়ের পর অনেক ধরনের পারিবারিক অভ্যাসের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বেশ বড় একটা প্রভাব আসে দম্পতির শরীর-স্বাস্থ্যে।

বিয়ে এবং মৃত্যু: আমেরিকার প্রায় এক লাখ পুরুষের ওপর করা এক জরিপে দেখা গেছে, বিবাহিত পুরুষরা অবিবাহিতদের চেয়ে অধিক সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হন। আরো দেখা গেছে, যেসব পুরুষ সস্ত্রীক জীবনযাপন করেন, তারা অবিবাহিতদের চেয়ে বেশি বছর বাঁচেন। এক্ষেত্রে যারা ২৫ বছরের পর বিয়ের পিঁড়িতে বসেন, তাদের জীবন দীর্ঘ হয়।

তাহলে কি বেশি দিন বাঁচার পুরো কৃতিত্ব বৈবাহিক জীবনের? মার্কিন জরিপের এ ফল যদিও তা-ই বলে। অনেকে মনে করেন, যাদের শরীর-স্বাস্থ্য ভালো, তারাই বিয়ে আগে করেন এবং বিয়ের পরও সুস্বাস্থ্য বজায় থাকে। কিন্তু এ কথা পুরোপুরি সত্য নয়। ব্যাপারটা একটু খটকার মনে হলেও কার্যকারণ খুঁজতে গিয়ে দেখা যায়, যেসব পুরুষ শারীরিক সমস্যায় ভোগেন, তারাই সুস্থদের তুলনায় আগে বিয়ে করেন। আরো একটি ব্যাপার হলো একাকিত্ব; সুস্বাস্থ্যের সঙ্গে বিয়ে-পরবর্তী দাম্পত্য জীবনের রীতিনীতি সরাসরি সম্পর্কিত নাকি শুধু দুজনে মিলে বসবাস করলেই সুস্বাস্থ্য অর্জিত হয়, সেটাও চিন্তা করা দরকার। গবেষণায় দেখা গেছে, লিভ টুগেদার বনাম বিয়ে, এ দুয়ের মধ্যে যারা পারিবারিকভাবে বিবাহিত জীবনযাপন বেছে নেন, তারাই শারীরিকভাবে সবচেয়ে ভালো থাকেন।

বিয়ে ও হূিপণ্ড: বিবাহিত জীবনযাপন যদি সত্যিই সুস্বাস্থ্যের অনুকূলে হয়, তবে খুব সম্ভবত হূিপণ্ডটাও ভালো থাকার কথা। জাপানের একদল বিজ্ঞানী গবেষণা করে জানতে পেরেছিলেন অবিবাহিতদের চেয়ে বিবাহিতদের কার্ডিওভাস্কুলার রোগ কম হয়। আরো অনেক গবেষণা বলে, সুখী দম্পতিদের হূিপণ্ড সুস্থ ও সবল থাকে। এ রকমও দেখা গেছে, বিয়ের পর পুরুষের হূিপণ্ড-সম্পর্কিত সমস্যা কমতে শুরু করেছে। সুতরাং দেখা যাচ্ছে, হূদয়ের সুস্বাস্থ্যের জন্য সময়মতো বিয়ে করে ফেলাটা জরুরি।

বিয়ে ও ক্যান্সার: সুখী দাম্পত্য জীবন যে হূিপণ্ড ভালো রাখবে, তাতে সন্দেহ নেই; তবে ক্যান্সার আলাদা ব্যাপার। তারপরও দেখা গেছে, বিবাহিত জীবন ক্যান্সারের সার্বিক ঝুঁকি কিছুটা হলেও কমিয়ে দেয়। একবার প্রায় তিরিশ হাজার ক্যান্সারের রোগীর ওপর জরিপ চালিয়ে দেখা গিয়েছিল, অবিবাহিতদের মধ্যেই ক্যান্সারের মাত্রা বেশি। প্রস্টেট ক্যান্সার বিশেষত পুরুষেরই হয়ে থাকে। এ ক্যান্সারে আক্রান্তদের নিয়ে করা এক জরিপে আমেরিকার চিকিত্সকরা জানতে পেরেছিলেন, ক্যান্সার আক্রান্তদের মধ্যে বেশি দিন টিকে থাকার ক্ষেত্রে এগিয়ে বিবাহিতরা।

সুতরাং বিশ্বজুড়ে নানা গবেষণা ও জরিপ জানাচ্ছে, বিয়ের মাধ্যমে সুস্বাস্থ্য ও বেশি দিন বাঁচা— এ দুই-ই পেয়ে থাকেন পুরুষ। অনেক পুরুষ বিয়ে করেন ভালোবাসার পরিণতি ঘটাতে, অনেকে করেন যৌতুকের লোভে আবার অনেকের করতে হয় পরিবারের চাপে। তবে কারণ যেটাই হোক, সময়মতো বিয়ের পিঁড়িতে বসা জরুরি।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত আরও সংবাদ

সাম্প্রতিক সংবাদ

আর্কাইব

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  

প্রধান সম্পাদক : সাঈদুর রহমান রিমন
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ নজরুল ইসলাম আজহার

সার্বিক যোগাযোগ : চৌধুরী মল (৫ম তলা), ৪৩ হাটখোলা রোড, ঢাকা-১২০৩॥

গাজীপুর অফিস : এ/১৩১ (ইকবাল কুটির) হাবিব উল্লাহ স্মরণী, জয়দেবপুর, গাজীপুর-১৭০০॥

হটলাইন: ০১৭৫৭৫৫১১৪৪ ॥ সেলফোন : ০১৭১৬-৩৩৩০৯৬ ॥ E-mail: banglabhumibd@gmail.com

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত বাংলাভূমি ২০০৯-২০২৫