জেলা প্রতিনিধি, মেহেরপুর ॥ টানা ৪৮ ঘণ্টা হরতালের দ্বিতীয় দিন বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৭টার মেহেরপুর সদর উপজেলার বন্দর গ্রামে জামায়াত-শিবিরের হামলায় ৫ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন ৮ পিকেটার। এদের মধ্যে এক শিবির কর্মীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
এ সময় মুজিবনগরের গৌরীপুরে পুলিশের ওপর হামলার তদন্তে যাওয়ার সময় সদর থানার পুলিশ ভর্তি পিকআপে হামলা চালানো হয়। পিকআপটিতে আগুন ধরিয়ে দেয় জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা।
আহত পুলিশদের মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে আর অন্যরা মুজিবনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন। মুজিবনগর থানার এসআই এস মান্নানের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে ঢাকায় রেফার্ডের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানা গেছে।
মেহেরপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) একেএম নাহিদউজ্জামান জানান, নিহত শিবির কর্মীকে তার সহযোগীরা টেনে নিয়ে গেছে। আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন- ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল হোসেন, উপ-পরিদর্শক (এসআই) এস মান্নান এবং ৩ কনেস্টেবল খায়রুল ইসলাম, মাজহারুল ইসলাম ও মিরুল ইসলাম। এরমধ্যে ওসি রবিউল ইসলাম ও এসআই মান্নানের অবস্থা গুরুতর বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মেহেরপুর-মুজিবনগর সড়কের বন্দরে অবরোধের সময় পুলিশ বহনকারী একটি মিনি ট্রাক (ঢাকা ন-১৪-৬৩৯৬) ঘটনাস্থলে পৌঁছালে ট্রাকটিতে আগুন দেয় পিকেটাররা।
এ ঘটনায় ট্রাকে থাকা পুলিশরা এদিক ওদিক পালিয়ে যায় বলে খবর পাওয়া গেছে।
খবর পেয়ে মেহেরপুর পুলিশ সুপার একে এম নাহিদুজ্জামান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি বর্তমানে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভোর থেকে জামায়াত শিবিরকর্মীরা সমবেত হয়ে মেহেরপুর সড়ক অবরোধের চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশ তাদের বাধা দিলে তারা পুলিশের ওপর চড়াও হয়। তারা ইটপাটকেল ও লাঠিসোটা নিয়ে পুলিশের ওপর হামালা চালায়। এ সময় উভয়ের মধ্যে গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটে। এতে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল হাশেম, উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল মান্নান, কনস্টেবল খায়রুল, আজহারুল, মিরুলসহ ২০ জন আহত হয়েছেন। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ার শেল ও ৮ রাউন্ড গুলি চালায়।
মেহেরপুর পুলিশ সুপার নাহিদুজ্জামান বলেন, মুজিবনগর ও চকশ্যামনগর এবং গৌরিপুরের পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এ সময় এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এদিকে সদর উপজেলার কায়েম কাটার মোড়ে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ফেলে ও আগুন ধরিয়ে অবরোধ করে রেখেছে। ভোর রাত থেকে কয়েক হাজার নেতাকর্মী সেখানে জড়ো হয়ে সড়ক অবরোধ করছে।