ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যানের কম্পিউটার জব্দ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর রায় ফাঁস হওয়ার ঘটনায় ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীরের কম্পিউটার জব্দ করা হয়েছে। জব্দ হওয়া কম্পিউটারেই সাকা চৌধুরীর মামলার রায় লেখা হয়েছিল বলে দাবি করছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার বিকেলে ট্রাইব্যুনালে এটিএম ফজলে কবীরের কার্যালয় থেকে কম্পিউটারটি জব্দ করা হয়।

এ ব্যাপারে রাতে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, তদন্ত) আব্দুল জলিল বলেন, ‘ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা বিকেলে ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান এটিএম ফজলে কবীরের কম্পিউটারের সিপিইউ ও হার্ডডিস্ক জব্দ করেছে। তদন্তের স্বার্থে এগুলো জব্দ করা হয়েছে।’ ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (দক্ষিণ) এ তদন্ত করছে বলে তিনি জানান।

রমনা জোনের ডিসি মারুফ হোসেন সরদার জানান, এটি তথ্যপ্রযুক্তি (আইটি) সংক্রান্ত বিষয় হওয়ায় গোয়েন্দা পুলিশ তদন্ত করছে। কারণ, পুলিশের আইটি বিষেশজ্ঞ নেই। তদন্তের স্বার্থে এর বেশি কিছু আর বলতে রাজি হননি তিনি।

এদিকে গত মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে যে ফাঁসির রায় দেন তা ঘোষণার আগেই কয়েকটি অনলাইন সংবাদ মাধ্যমে তা ফাঁস হয়ে যায়। এটি আইন মন্ত্রণালয় থেকে ফাঁস হয়েছে বলে দাবি করা হয়। তবে মন্ত্রণালয় তাৎক্ষণিকভাবে তা প্রত্যাখ্যান করে। পরে ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার স্বীকার করেন, কপিটি ট্রাইব্যুনাল থেকেই ফাঁস হয়েছে, তবে আংশিক। এ ব্যাপারে ট্রাইব্যুনাল থেকে শাহবাগ থানায় সাধারণ ডায়েরিও করা হয়।

রায় ঘোষণার পর দেখা যায়, ফাঁস হওয়া ওই কপির সঙ্গে ট্রাইব্যুনালের রায়ের মিল রয়েছে। একটি অনলাইন সংবাদ মাধ্যম সাকার বিরুদ্ধে চূড়ান্ত রায়ের ১৭২ পৃষ্ঠার মধ্যে ১৬৭টি পৃষ্ঠা প্রকাশ করে। সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, রায়ের ওই কপি আইনসচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হকের অফিসের কম্পিউটারে ছিল। ওই কপিতে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে কোন কোন অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে তা লেখা থাকলেও কী দণ্ড দেয়া হয়েছে তা উল্লেখ করা হয়নি।

রায়ের কপি ফাঁস করা অনলাইনগুলো দাবি করেছে, বেলজিয়ামভিত্তিক একটি ওয়েবসাইট (িি.িঃৎরনঁহধষষবধশং.নব) প্রথম সাকার রায়ের কপি ফাঁস করে।

ওইদিন ট্রাইব্যুনাল চত্বরে রায়ের কপি দেখিয়ে সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর স্ত্রী ফরহাত কাদের চৌধুরী বলেন, ‘এ রায় কেমন করে হয়, আমার জানা নেই। রায়ের কপি আগেই ফাঁস হয়ে গেছে। জজ সাহেবরা হুবুহু এই রায় পাঠ করেছেন। ল মিনিস্ট্রি থেকে বের হওয়া রায় জজ সাহেবরা পাঠ করেন কীভাবে? তারা তো বলতে পারতেন- এটা কীভাবে ওয়েবসাইটে গেলো। কিন্তু তারা তা ইগনোর করে এ রায় পাঠ করেছেন। ল মিনিস্ট্রি থেকে বের হওয়া রায় কীভাবে রায় পাঠ করেছেন তারা এটাই আমার প্রশ্ন।’

রায় ঘোষণার সময় ট্রাইব্যুনালের এজলাসে দাঁড়িয়ে সাকা চৌধুরী বলেন, ‘দুইদিন ধরে রায়ের কপি অনলাইনে প্রকাশ পেয়েছে। এ রায় পড়া দরকার কি। রায় তো ইন্টারনেটে পাওয়া যাচ্ছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘লক্ষ লক্ষ মানুষ আমার পক্ষে রায় দিয়েছে। আমি ছয়বারের এমপি। সেই আমি ট্রাইব্যুনালের কী রায় শুনবো!’

তবে ওইদিন ট্রাইব্যুনাল ও সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, ‘বিষয়টি ষড়যন্ত্রমূলক ও সাজানো নাটক।’ পরে অবশ্য ট্রাইব্যুনাল রায় ফাঁস হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে নেন এবং দুঃখ প্রকাশ করেন। তারা জানান, এ রায় ফাঁস হওয়ার পেছনে শক্তিশালী একটি মাধ্যম কাজ করেছে। সেই সঙ্গে প্রচুর টাকা লেনদেন হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত আরও সংবাদ

সাম্প্রতিক সংবাদ

আর্কাইব

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031  

প্রধান সম্পাদক : সাঈদুর রহমান রিমন
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ নজরুল ইসলাম আজহার

সার্বিক যোগাযোগ : চৌধুরী মল (৫ম তলা), ৪৩ হাটখোলা রোড, ঢাকা-১২০৩॥

গাজীপুর অফিস : এ/১৩১ (ইকবাল কুটির) হাবিব উল্লাহ স্মরণী, জয়দেবপুর, গাজীপুর-১৭০০॥

হটলাইন: ০১৭৫৭৫৫১১৪৪ ॥ সেলফোন : ০১৭১৬-৩৩৩০৯৬ ॥ E-mail: banglabhumibd@gmail.com

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত বাংলাভূমি ২০০৯-২০২৫