বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক॥্ চীন সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশে চীনের বিনিয়োগ লাভজনক হবে, বিশেষ করে ম্যানুফ্যাকচারিং ও সেবা খাতে।
মঙ্গলবার বেইজিং প্রেসিডেন্টসিয়াল হোটেলে বাংলাদেশ-চীন অর্থনেতিক ও বাণিজ্যিক সহযোগিতা ফোরামে ভাষণে এ কথা বলেন তিনি। চায়না কাউন্সিল ফর দ্যা প্রমোশন অব ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড (সিসিপিআইটি) এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কুনমিং থেকে ঢাকায় দুই ঘণ্টার ফ্লাইটে আপনারা বাংলাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের যে সম্ভাবনা রয়েছে তা দেখে আসতে পারেন।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ দক্ষিণ ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়া এবং চীনের বাজারগুলোর মধ্যে একটি চমৎকার জায়গা। বাংলাদেশ একটি আঞ্চলিক অর্থনৈতিক শক্তিতে পরিণত হয়েছে। শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ-চীন-ভারত-মায়ানমার অর্থনৈতিক করিডোরের (বিসিআইএম-ইসি) দ্রুত অগ্রগতির অপেক্ষায় রয়েছে বাংলাদেশ।
বিদেশী বিনিয়োগের জন্য সরকারের দেয়া সুযোগ-সুবিধার বর্ণনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, চীনের বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশের উদ্যোক্তাদের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগেও অংশ নিতে পারে। তারা ফার্মাসিউটিক্যাল, সিরামিকস, পর্যটন, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, সড়ক ও রেল যোগাযোগ, পেট্রোক্যামিকেলস এবং কৃষিভিত্তিক শিল্পে বিনিয়োগ করতে পারেন।
তিনি বলেন, চীনের ব্যাপক অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে বাংলাদেশ অভিভূত। চীন এখন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনৈতিক শক্তি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, চীন বাংলাদেশে অন্যতম প্রধান উন্নয়ন ও সহযোগিতার অংশীদার। চীন আমাদের অবকাঠামো নির্মাণ প্রচেষ্টায় সমর্থন দিচ্ছে। এছাড়া আমাদের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে সহজ শর্তে ঋণ দিয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, এসব উদ্যোগ ‘রুপকল্প-২০২১’ বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করতে অবদান রাখছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়নে এ রুপকল্প প্রণয়ন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, সা¤প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের প্রতি চীনের সমর্থন ও সহযোগিতা গতি অর্জন করেছে। তিনি আরো বলেন, ২০১৪-১৮ মেয়াদে আমরা বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন খাতে চীনের সহযোগিতা চেয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের বেশ কয়েকটি মেগা প্রকল্পে চীনের অংশগ্রহণ ও সহায়তা কামনা করেছি, যা আমাদের যৌথ বিবৃতিতে উলে¬খ রয়েছে। তিনি বলেন, বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ, রিভার টানেল নির্মাণ এবং একটি চীনা অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনসহ আমরা দু’পক্ষ বেশ কয়েকটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছি।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন একটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণেও আমরা চীনের কোম্পানিগুলোর সঙ্গে যুক্ত হয়েছি।
সিসিপিআইটি’র চেয়ারম্যান জিয়াং জেংউই অনুষ্ঠঅনে সভাপতিত্ব করেন। চীনের ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ এবং কর্পোরেট বডি, ম্যানুফ্যাকচারিং ও বাণিজ্যিক কোম্পানি, বিনিয়োগ গ্রুপ, নির্মাণ, বিদ্যুৎ উৎপাদন ও প্রকৌশল কোম্পানিগুলোর প্রধানরা এতে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বাংলাদেশের ইআরডি সচিব মোহাম্মদ মেজবাহউদ্দিন, বেইজিংয়ে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ আজিজুল হক, এফবিসিসিআই সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ, বিজিএমইএ সভাপতি আতিকুল ইসলাম, চীনের সেনি হেভি ইন্ডাস্ট্রি কোম্পানী লিমিটেডের জেনারেল ম্যানেজার চুই ইয়ংগিয়ান এবং নিংবো ফোর সিজন ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট কোম্পানি লিমিটেডের জেনারেল ম্যানেজার বাও বুইবং বক্তৃতা করেন।