আ.লীগের চার দাপুটে নেতার দুর্দিন

জেলা প্রতিনিধি ॥্ যশোর আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী সদ্য সাবেক চার সংসদ সদস্যের (এমপি) দুর্দিন চলছে। এক তরফা নির্বাচনের মাধ্যমে এমপিত্ব শেষ হয়ে যাওয়ার পরই তাদের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন জনসাধারণ। এজন্য তারা নিজ এলাকাতেও যান না। অথচ ছয় মাস আগেও তাদের ছিল দুর্দান্ত দাপট। প্রশাসন থেকে জনগণ সবাই তাদের পিছু পিছু ঘুরতো।

সূত্রমতে, ২০০৮ সালের নির্বাচনে যশোর-৩ (সদর) থেকে খালেদুর রহমান টিটো, যশোর-২ (ঝিকরগাছা-চৌগাছা) থেকে মোস্তফা ফারুক মোহাম্মদ, যশোর-৫ মনিরামপুর থেকে খান টিপু সুলতান ও যশোর-৬ থেকে শেখ আবদুল ওহাব এমপি নির্বাচিত হন। এর মধ্যে আবদুল ওহাব তৎকালীন জাতীয় সংসদের হুইপ ও মোস্তফা ফারুক মোহাম্মদ তথ্য ও যোগাযোগ মন্ত্রী হন।

মন্ত্রী এমপি হওয়ার পর প্রশাসন থেকে শুরু করে জনগণ এসব এমপির পিছু ছাড়তো না। শুধু তাই না, তাদের মধ্যে দু’একজন ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রশাসনকে প্রভাবিত করা শুরু করেন। কথা না শুনলে বদলি, হুমকি এমনকি লোক পাঠিয়ে নির্যাতন পর্যন্তও করেছেন। সেই ক্ষমতাধররাই এখন রয়েছে বিপদে। চলছে তাদের দুর্দিনে।

একতরফা নির্বাচনে কেউ দলের বিদ্রোহী প্রার্থীরা কাছে হেরে গিয়ে, আবার কেউবা মনোনয়ন না পাওয়ায় নির্বাচন থেকে দূরে ছিলেন। এ বাস্তবতায় খালেদুর রহমান টিটো, খান টিপু সুলতান, মোস্তফা ফারুক মোহাম্মদ ও শেখ আবদুল ওহাবের মতো চার প্রভাবশালী নেতা এবার এমপি হতে পারেননি। তাদের এমপিত্ব শেষ হয়ে যাওয়ার সাথে সাথেই থেমে গেছে সব দাপট। তাদের আশপাশে ঘোরা চেলাচামুণ্ডারাও সরে গিয়েছে।

অপরদিকে, দলের কর্মকাণ্ডেও সাবেক এই চার এমপির দেখা মিলছে না। মোস্তফা ফারুক মোহাম্মদ নিজ এলাকায় আসেন না বললেই চলে। দলের নেতারাও তার সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন না। আর দলের মধ্যে কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন অভয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক হুইপ শেখ আবদুল ওহাব। এক তরফা নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় দলের সাথে তার সুসম্পর্ক নেই।

এবিষয়ে অভয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক বাবুল বলেন, ‘তিনি (ওহাব) কোথায় থাকেন তার জানা নেই। উপজেলায় অনেক দিন মিটিং হয় নি। ইউনিয়ন পর্যায়ের সভা সমাবেশেও তাকে দেখা যায় না।

অপরদিকে খালেদুর রহমান টিটোর অবস্থা আরও বেশি সোচনীয়। গত ২৭ মে রাতে যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে আসামি ধরতে তার বাড়িতে পুলিশ গিয়েছিল। যদিও পুলিশ তার সঙ্গে কথা বলে বাড়ি সার্চ না করে ফিরে আসে। টিটোকে দলের কার্মকাণ্ডেও দেখা যায় না।

তবে খালেদুর রহমান টিটো এ বিষয়ে ভিন্নমত প্রকাশ করে বলেন ‘ভাল আছি।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ দল যখন ডাকবে তখন অংশ নেব।’ তবে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলী রেজা রাজু স্রেফ জানিয়ে দিয়েছেন, ‘খালেদুর রহমান টিটো আওয়ামী লীগের কেউ না।’

অন্যদিকে খান টিপু সুলতান দলের মনোনয়ন পেয়েও একতরফা নির্বাচনে পাশ করতে না পারায় অনেক আওয়ামী লীগ নেতাই তার কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। সাবেক এই এমপিকে আগের মতো নিজ এলাকায় দেখা যায় না বলে জানিয়েছেন মনিরামপুর উপজেলা চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা আমজাদ হোসেন লাভলু।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত আরও সংবাদ

সাম্প্রতিক সংবাদ

আর্কাইব

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  

প্রধান সম্পাদক : সাঈদুর রহমান রিমন
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ নজরুল ইসলাম আজহার

সার্বিক যোগাযোগ : চৌধুরী মল (৫ম তলা), ৪৩ হাটখোলা রোড, ঢাকা-১২০৩॥

গাজীপুর অফিস : এ/১৩১ (ইকবাল কুটির) হাবিব উল্লাহ স্মরণী, জয়দেবপুর, গাজীপুর-১৭০০॥

হটলাইন: ০১৭৫৭৫৫১১৪৪ ॥ সেলফোন : ০১৭১৬-৩৩৩০৯৬ ॥ E-mail: banglabhumibd@gmail.com

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত বাংলাভূমি ২০০৯-২০২৫