বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥
ঢাকা: রিমান্ডে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) কাছে ফোনে যোগাযোগের কথা স্বীকার করেছেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। তবে তিনি দাবি করেছেন, লাশ ফেলার কোনো আলাপ করেননি তিনি। সেনাবাহিনীকে ‘উসকানি’ দেওয়া সেই ফোনালাপে মান্নার সঙ্গে অন্যপ্রান্তে অজ্ঞাতপরিচয় যে ব্যক্তি কথা বলেছেন তাঁর নাম শাহাদাত। অস্ট্রেলিয়াপ্রবাসী এ ব্যবসায়ী ছাত্রলীগের সাবেক নেতা। তাঁর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ হয়েছে বলে জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন মান্না। তবে তাঁর ভাষ্য মতে, বিএনপি নেতা সাদেক হোসেন খোকার সঙ্গে ফোনালাপটি একান্ত ‘একাডেমিক রাজনৈতিক’ কথোপকথন। তদন্তসংশ্লিষ্ট একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এসব তথ্য জানিয়েছেন। তদন্তকারীরা বলছেন, রিমান্ডের প্রথম কয়েক দিন মুখ খোলেননি মান্না। এখন তিনি জিজ্ঞাসাবাদে তথ্য দিতে শুরু করেছেন।
ডিবির যুগ্ম কমিশনার (ডিবি) মনিরুল ইসলাম বলেন, উসকানি দেওয়া সেই ফোনালাপটি অস্ট্রেলিয়াপ্রবাসী ব্যবসায়ী শাহাদাতের সঙ্গে ছিল বলে মান্না স্বীকার করেছেন। সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শাহাদাত আগে মালেশিয়ায় ছিলেন।
সেনাবাহিনীকে উসকানি দেওয়ার অভিযোগে গুলশান থানায় দায়ের করা মামলায় মান্নাকে ১০ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। তদন্তসংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তা জানান, রিমান্ডে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেওয়ার ক্ষেত্রে মান্না কৌশলের আশ্রয় নিচ্ছেন। ষড়যন্ত্রের বিভিন্ন তথ্য তাঁর সামনে হাজির করা হয়েছে। এতে বিব্রত হন মান্না। শাহাদাত ফোনালাপে মান্নাকে সেনাবাহিনীর কয়েকজন অফিসারের সঙ্গে বৈঠকের ব্যবস্থা করিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। তবে সেই বৈঠক আর হয়নি। মান্না তদন্তকারীদের জানান, তিন বছর আগে শাহাদাতের সঙ্গে তাঁর প্রথম কথা হয়েছিল। সম্প্রতি সেনাবাহিনীর সঙ্গে মান্নার বৈঠকের বিষয় নিয়ে কথা হয়। তবে মান্না বিএনপির ঊর্ধ্বতন নেতা ও সমমনা অনেক নেতার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন। তাঁদের সঙ্গে সরকার হটানোর ষড়যন্ত্র করতেন বলে তথ্য উপস্থাপন করে এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হয়েছে। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই প্রশ্ন এড়িয়ে যান মান্না।
গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, শাহাদাতের ব্যাপারে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। তাঁর অবস্থান শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। মান্নার সঙ্গে অডিও টেপে ওই ব্যক্তিকে সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ দুই কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠকের পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলতে শোনা যায়। ওই সূত্র ধরেও তদন্ত করছে গোয়েন্দারা। মান্না জিজ্ঞাসাবাদে দাবি করেছেন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নির্বাচন করার জন্য তাঁর প্রস্তুতি অনেক দিনের। এ নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ নাও করতে পারে। এ কারণে বিএনপির সমর্থন পেতে সাদেক হোসেন খোকাকে ফোন করেছিলেন।
গত ২৩ ফেব্রুয়ারি রাতে বনানীতে ভাইয়ের বাসা থেকে ডিবি পরিচয়ে মান্নাকে তুলে নেওয়া হয় বলে তাঁর স্বজনরা অভিযোগ করেন। তখন পুলিশের পক্ষ থেকে বিষয়টি অস্বীকার করা হয়। ২১ ঘণ্টা পর গুলশান থানায় তাঁকে হস্তান্তর করে র্যাব। র্যাব দাবি করে, ২৪ ফেব্রুয়ারি রাত ১১টার দিকে ধানমণ্ডি থেকে তাঁকে আটক করা হয়।