বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥
ঢাকা: আসন্ন রমজান মাসের আগেই ঢাকা সিটি কর্পোরেশন (ডিসিসি) উত্তর-দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) নির্বাচন অনুষ্ঠানের আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ। পাশাপাশি চলতি মার্চ মাসের মধ্যেই সিটি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হতে পারে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (১২ মার্চ) নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
সিইসি বলেন, হয়তো চলতি মাসেই ঢাকা সিটি কর্পোরেশন (ডিসিসি) ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) নির্বাচনের তফসিল দিতে হবে। কারণ রোজার আগেই নির্বাচন করতে হবে। সেক্ষেত্রে তফসিল ঘোষণার পর ভোটগ্রহণের জন্য অন্তত ৩৭ দিন সময় লাগবে।
সিইসি বলেন, এসএসসিতে কিছু বিষয়ের পরীক্ষা পিছিয়ে গেছে। আবার ১ এপ্রিল থেকে ১১ জুন পর্যন্ত এসএসসি পরীক্ষা রয়েছে। এদিকে ১৮ বা ১৯ জুন থেকে রোজা শুরু হবে। তাই রোজার শুরু হওয়ার আগেই আমরা নির্বাচন করে ফেলবো।
তিনি জানান, জুনের দিকে বেশি দেরিতে আমরা নির্বাচন করবো না। কারণ এর আগে চসিক নির্বাচন জুনের দিকে একটু দেরি করা হয়েছিলো। তখন বৃষ্টিতে ভোটকেন্দ্র পানির নিচে চলে যায়। পরে পানি সেচে ভোটকেন্দ্র প্রস্তুত করতে হয়েছিলো।
তিনি বলেন, ১ এপ্রিল থেকে ৬ এপ্রিল আবার ১১ জুনের দিকে গ্যাপ আছে। এমন আরও কিছু গ্যাপ আছে। যে কোনো একটি গ্যাপের মধ্যেই আমরা নির্বাচন করে ফেলবো। নির্বাচনের জন্য অন্তত ৫ দিনের গ্যাপ দরকার। শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে শুক্রবার ও শনিবার এসএসসি পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। এমন অবস্থা যদি চলতে থাকে তবে যেন শুক্রবার ও শনিবার ছাড়া ভোটের দিন নির্ধারণ করা হয়। কমিশন তাই শুক্রবার ও শনিবার বাদ দিয়ে নির্বাচন করবে।
কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ বলেন, আমরা এখন নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। নির্বাচনের জন্য সমস্ত কাজ গুছিয়ে ফেলেছি। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও বলেছে, পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। ভবিষতে আরও উন্নতি হবে। নির্বাচনের জন্য কোনো বাধা থাকবে না।
প্রয়োজনে সেনাবাহিনী
কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ বলেন, পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই। অবস্থা কেমন হবে তার উপর নির্ভর করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। প্রয়োজন হলে সেনাবাহিনীকে ডাকা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে ইসি সচিব সিরাজুল ইসলাম, যুগ্মসচিব জেসমিন টুলী ও জনসংযোগ পরিচালক এসএম আসাদুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সকালে সিইসি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠক করেন।
ওই বৈঠকে নির্বাচন কমিশনার আব্দুল মোবারক, আবু হাফিজ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) জাবেদ আলী, মো. শাহ নেওয়াজ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব ড. মো. মোজাম্মেল হক খান, ইসি সচিব সিরাজুল ইসলাম, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব স্বপন কুমার সর্দার, সশস্ত্র বাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লে. জে আবু বেলাল মো. শফিউল হক, কোস্ট কার্ডের মহাপরিচালক রিয়ার এডমিরাল এম মকবুল হোসেন, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. শামসুল হক পিএসসি, অতিরিক্ত মহা পুলিশ পরিদর্শক (স্পেশাল ব্রাঞ্চ) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, অতিরিক্ত মহা পুলিশ পরিদর্শক (পুলিশ হেডকোয়ার্টার) মো. মোখলেসুর রহমান, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়নের (র্যাব) মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় কমিশনার ও নির্বাচন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা সিটি কর্পোরেশন
বিভক্ত হওয়ার আগে ডিসিসিতে সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছিলো ২০০২ সালের ২৫ এপ্রিল। সে সময় ভোটার ছিলো ২৮ লাখ ৬৯ হাজার ২৮ জন। বর্তমানে উত্তর-দক্ষিণ মিলিয়ে দুই সিটি কর্পোরেশন মোট ভোটার রয়েছে ৪২ লাখ ১৯ হাজার ৬৭৬ জন।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন
চসিক নির্বাচনের সর্বশেষ ভোট হয়েছিলো ২০১০ সালের ১৭ জুন। তখন ভোটার ছিলো ১৬ লাখ ৮৮ হাজার ৬৭৬ জন। বর্তমানে এ সিটির মোট ভোটার ১৮ লাখ ২২ হাজার ৮৯২জন। বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম