বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥
নিউ ইয়র্ক: নিউ ইয়র্কে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধেই চলছে আওয়ামী লীগের অভিযান। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতিসহ কতিপয় নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজিসহ অবৈধ কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে।
গত সোমবার সন্ধ্যায় জ্যাকসন হাইটসের একটি রেস্তোরাঁয় নিউ ইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের এক সংবাদ সম্মেলনে দলের যুক্তরাষ্ট্র শাখার সভাপতির ড. সিদ্দিকুর রহমানের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তোলা হয়।
[ঢ] সংবাদ সম্মেলনে নিউ ইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি নূরনবী কমান্ডার বলেন, ‘‘এ পর্যন্ত যারাই সিদ্দিকুর রহমানের অনিয়ম ও অপকর্মের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন তারাই বহিস্কার হবার নোটিস বা হুমকি পেয়েছেন। তিনি এখন বিএনপি-জামায়াতের ভালো বন্ধু। তাই তাদের সঙ্গে যোগসাজস করে মহানগর আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের শায়েস্তা করার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছেন।’’সাম্প্রতি সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণের ষড়যন্ত্রকারী রিজভি আহমেদ সিজার সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হবেন বলে খবর পেয়ে সেখানে যান সিদ্দিকুর রহমান।
অন্যদিকে বিএনপি সংবাদ সম্মেলনস্থলের প্রবেশ পথে অবস্থান নেন নিউ ইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারাও। সিজারকে দেখলেই ধাওয়া দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাদের। ওই সময় সিদ্দিকুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা সরাসরি ঢুকে যান বিএনপির সংবাদ সম্মেলনস্থলে। সেখানেই বিএনপি নেতা আব্দুল লতিফ সম্রাটের সঙ্গে কথা হয় তাদের।
সংবাদ সম্মেলনে নূরনবী কমান্ডার যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতির বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে বলেন, সিদ্দিকুর অযাচিতভাবে নিউ ইয়র্ক মহানগর কমিটির বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছেন।
নিউ ইয়র্ক আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি জাকারিয়া চৌধুরীকে অব্যাহতির নোটিস দেওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, এর আগেও যারাই সিদ্দিকুর রহমানের অসাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করেছে, তাদেরকেই বহিষ্কারের নোটিস দেওয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে দলের সভানেত্রীর হস্তক্ষেপে ওই সব বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারে বাধ্য হন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি উল্লেখ করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল হাসিব মামুন ও মহিউদ্দিন দেওয়ান এবং প্রচার সম্পাদক হাজী এনাম ছিলেন। এই তিনজনকে সিদ্দিকুর বহিষ্কারের নোটিস দিয়েছিলেন কিন্তু পরে তা প্রত্যাহার করে নেন তিনি।
নূরনবীর দাবি, দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার অনুমোদনে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের মতোই নিউ ইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটি গঠিত হয়। ফলে এই কমিটির কারও বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহন করার ক্ষমতা নেই। একমাত্র দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনাই পারেন এই মহানগর কমিটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে।
নুরনবী বলেন, সংগঠনের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি প্রদানের আগে যে সব প্রক্রিয়া অনুসরণ করা দরকার, তার কোনোটিই সিদ্দিকুর রহমান জানেন না। সাংগঠনিক নিয়ম-কানুন সম্পর্কে তার তেমন কোন জ্ঞান নেই। থাকলে এ ধরনের তৎপরতায় লিপ্ত হতে পারতেন না। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগে স্বৈরাচার ভর করেছে। স্বৈরাচারমুক্ত না হতে পারলে সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে না বলে তিনি উল্লেখ করেন।
নুরনবী আরো বলেন, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি, রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিনের বিরুদ্ধে সিদ্দিকুর রহমান নানা ধরনের বিষোদগার করেছেন। কথায় কথায় হাই কমান্ডের দোহাই দিয়ে সহজ-সরল কর্মিদের তিনি বিভ্রান্ত করেন থাকেন সর্বদাই। নুরনবীর এ কথা প্রসঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সবাই একমত পোষনসহ তাৎক্ষনিক নানা ধরনের সমালোচনা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শাহীন আজমল, নূরুজ্জামান সর্দার, দরুদ মিয়া রনেল, আব্দুল কাদের মিয়া, সভাপতি শিবলী সাদিক শিবলু, মুর্শেদা জামান, শরাফ সরকার, মিনহাজ শরীফ রাসেল, মাসুদ হোসেন সিরাজি ও ইসমত হক।-বাংলা প্রেস।