বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥
ভোটারবিহীন প্রহসনের নির্বাচনে দখলদার ফ্যাসিবাদী সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সবার অংশগ্রহনে নির্বাচনের দাবীতে ২০ দলীয় জোটের ডাকে দেশব্যাপী চলমান অবরোধ ও হরতাল কর্মসূচি সফল করায় নগরবাসীকে অভিনন্দন জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর জামায়াতের আমীর মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, নিশ্চিত পতন জেনেই সরকার বিরোধীজোটের আন্দোলনকে কলুষিত করার জন্যই বিভিন্ন স্থানে সাজানো অস্ত্র উদ্ধারের নাটক সাজিয়ে গণগ্রেফতারের পটভূমি তৈরী করছে। গোটা জাতি বিস্ময়ের সাথে লক্ষ্য করছে যে, বিরোধী দলের আন্দোলনকে দমন করতে সরকার একের পর এক বিরোধীজোটের শীর্ষনেতা ও কর্মীদের গুম করে ফেলার মতো ঘৃণ্য খেলায় মেতে উঠেছে। আইনশৃংখলা বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নিয়ে গুম করে ফেলা হচ্ছে
অথচ আইনশৃংখলা বাহিনী বলেছে তারা জানেন না। পুলিশের বাইরে কারা আইন শৃংখলা বাহিনীর পরিচয় দিয়ে হত্যা, অপহরণ, ও গুম করছে ? সরকার জানেনা , পুলিশ, র্যাব, স্পেশাল ব্রাঞ্চ, ডিটেকটিভ ব্রাঞ্চ, সিআইডি কেউ জানেনা তাহলে কারা পুলিশ পরিচয়ে সারাদেশে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ? কারা একের পর এক বিরোধী নেতা-কর্মীদের তুলে নিয়ে যাচ্ছে ? এমনতর পরিস্থিতি যে কতটা ভয়াবহতার ইঙ্গিত দিচ্ছে তা যদি সরকার অনুধাবন করতে না পারে তাহলে শাসকগোষ্ঠী এই দেশকে কোথায় নিয়ে যেতে চায় তা নিয়েই দেশবাসী চরম উদ্বিগ্ন।
মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান আরো বলেন, আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও সালাহউদ্দিন আহমেদকে পুলিশ উদ্ধার করতে না পারার বিষয়টি চরম উদ্বেগজনক।
গণতন্ত্র রক্ষা ও রাজনৈতিক সঙ্কট রাজনৈতিকভাবে মিমাংসায় ব্যর্থতার মাধ্যমেই শাসকগোষ্ঠী দেশকে ব্যর্থরাষ্ট্রের দিকে ঠেলে দিচ্ছ্। একই সাথে জনদৃষ্টি সরাতেই ২৮ এপ্রিল ঢাকা ও চট্টগ্রামে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছে। পুলিশের দেয়া টাইম লাইনের মধ্যেই নির্বাচনী তফশিল ঘোষণা করে সরকার প্রমাণ করেছে নিবাচন কমিশন স্বাধীন নয়। সকল দল-মতের প্রার্থীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার পরিবর্তে আন্দোলন দমনে পুলিশের সাজানো ছকেই এসব নির্বাচনী তফসিল। নির্বাচন কমিশন আবারো প্রমাণ করলো তারা দলদাস। দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে যাবার তাদের কোন ক্ষমতা নেই।
তিনি আরো বলেন, বিনাভোটের সরকারকে আর সময় দিলে পুরো দেশকেই তারা ব্যর্থরাষ্ট্রে পরিণত করবে। তাই দ্রুততম সময়ের মধ্যেই ফ্যাসিবাদী দখলদার সরকারের পতন ঘটাতে গণবিস্ফোরণ ঘটাতে হবে। সারাদেশে সবাইকে রাজপথে নেমে এসে এমন প্রতিরোধ সংগ্রাম গড়ে তুলতে হবে যাতে জনতার ঐক্যবদ্ধ শক্তির কাছে গণধিকৃত সরকারের পতন ঘটে। ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন যাতে গণবিরোধী, ভোটাধিকারহরণকারী দানবীয় শক্তির হাতে বন্দী হতে না পারে এজন্য নগরবাসীকে প্রতিটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে নাগরিক প্রতিরোধ সংগ্রাম জোরালো করার আহবান জানান তিনি।
সরকারের হামলা, মামলা, গুলি, গণগ্রেফতার উপেক্ষা করে নগরীর জনগণ ২০ দলীয় জোটের ঘোষিত অবরোধ ও হরতাল কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছে।
চলমান অবরোধ ও হরতাল কর্মসূচীর অংশ হিসাবে পল্টন, মতিঝিল, কমলাপুর, ধানমন্ডি, হাজারিবাগ, কাফরুল, ভাষানটেক, উত্তরা পশ্চিম, দক্ষিণখান, খিলগাঁও, যাত্রাবাড়ী, মিরপুর, শ্যামপুর, সুত্রাপুর ও কদমতলীসহ রাজধানীর বিভিন্ন থানা ও এলাকায় অবরোধ সমর্থনে জামায়াতের কর্মীরা মিছিল, পিকেটিং ও রাজপথ অবরোধ করে। জনগণ তাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর। সেই সঙ্গে সরকার পতনের চূড়ান্ত মুহূর্তে আন্দোলনকে আরো বেগবান করতে চলমান অবরোধ এবং হরতাল আগামী শুক্রবার ভোর ৬টা পর্যন্ত অব্যাহত রাখতে নগরীর সকল পেশা ও শ্রেণীর মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে নেমে আসার আহ্বান জানান। সংবাদ২৪.নেট