বাংলাভূমি ডেস্ক ॥
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে পটুয়াখালী-৩ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী গোলাম মাওলা রনির বিরুদ্ধে। এ মামলার পর থেকে বাড়ি থেকে বের হতে পারছেন না বলে অভিযোগ রনির।
আলোচিত এ রাজনীতিবিদের অভিযোগ, মামলা দায়েরের পর থেকে আমি ঘর থেকেই বের হতে পারছি না। আমি এখন অবরুদ্ধ। এভাবে অবরুদ্ধ থাকার চেয়ে গ্রেফতার হওয়াই ভালো।
স্বেচ্ছায় ধরা দেবেন কিনা গণমাধ্যমের এমন প্রশ্নে রনি বলেন, না তা হবে কেন? মামলার পর থেকে আমি তো ঘর থেকে বের হতে পারছি না। নেতাকর্মীরাও কাছে ঘেঁষতে পারছে না। তাদের নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। তারা প্রতিপক্ষের হামলার শিকার হচ্ছেন। অথচ হাইকোর্ট থেকে যে আগাম জামিন নেব তাও পারছি না। অবরুদ্ধ থাকার চেয়ে গ্রেফতার হওয়াই ভালো। তাই কথাটা বললাম।
নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর কোনো চিন্তা আছে কিনা জানতে চাইলে গোলাম মাওলা রনি সাফ জানিয়ে দেন-যতকিছুই হোক ভোট থেকে সরবেন না। তার আশা সেনাবাহিনী মাঠে নামলে পরিস্থিতির বদল হবে। সেই অপেক্ষায়-ই আছে।
রনি জানান, গলাচিপা-দশমিনার ভোটাররা তাকে ব্যাপক উৎসাহ জোগাচ্ছেন। প্রচারে গিয়ে ব্যাপক সাড়া পেয়েছেন। ভোটাররা নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারলে তার জয় অবশ্যম্ভাবী। রনির আশা সেনাবাহিনী মাঠে নামলে দু’একদিনের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
গত বৃহস্পতিবার রাতে বিএনপি প্রার্থী গোলাম মাওলা রনির বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে (আইসিটি অ্যাক্ট) মামলা হয়েছে। স্থানীয় এক বিএনপি নেতার সঙ্গে রনির ‘থানা ঘেরাওয়ের’ নির্দেশনার একটি টেলিসংলাপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার ঘটনার সূত্র ধরে এ মামলা হয়েছে। রনি ছাড়াও পাঁচজনকে এ মামলায় আসামি করা হয়েছে।
মামলার বাদী পটুয়াখালী-৩ আসনের গোলাম মাওলা রনির প্রতিদ্বন্দ্বীর নির্বাচনী পরিচালনা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মেহেদী মাসুদ।
রনি ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন-পটুয়াখালী জেলা বিএনপির সহসভাপতি শাহজাহান খান, চিকনিকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শিপলু খান, রনির ভাই সরোয়ার হোসেন, শ্যালক মকবুল হোসেন ও শাহ আলম সানু।
গোলাম মাওলা রনি ২০০৮ সালে এই আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। এবারও তিনি এ আসনে নৌকার টিকিট চেয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন না পেয়ে বিএনপিতে যোগ দেন। বিএনপি তাকে এ আসনে মনোনয়ন দিয়েছে।
গত ১৫ ডিসেম্বর গলাচিপা সদরে প্রচারের সময় তার স্ত্রী কামরুন্নাহার রুনুর গাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ করেন রনি। এ ঘটনার জন্য আওয়ামী লীগকে দায়ী করেন তিনি।
ঘটনার দুদিন পর ইউটিউবে রনির একটি কথোপকথনের অডিও ছড়িয়ে পড়ে। গলাচিপা উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মো. শাহজাহান খানের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন গোলাম মাওলা রনি। এতে তিনি বলেন, ‘তোমরা আগে গাড়িটা নিয়ে থানায় যাও। থানায় গিয়ে এ সুযোগে প্রার্থীসহ সবার নামে মামলা দিয়ে দাও। আমি ওপরে প্রেসার ক্রিয়েট (চাপ সৃষ্টি) করছি। তোমরা সব নেতা থানা ঘেরাও করো। ওখানে বসে তোমার ভাবিকে বাদী করো…’। এই কথোপকথন ফেসবুকেও ছড়িয়ে পড়ে।
এ ঘটনায় করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলার এজাহারে বলা হয়, ‘গত ১৫ ডিসেম্বর দুপুরে গলাচিপা টিঅ্যান্ডটি সড়কে গোলাম মাওলা রনির স্ত্রীসহ তার পরিবারের সদস্যরা আত্মঘাতী ঘটনা ঘটিয়ে আইনশৃঙ্খলার অবনতি করে নিরাপত্তা বিঘ্নিত করে। মোবাইলে তার কথোপকথন ফেসবুকে ভাইরাল হলে জনমনে ভীতির সৃষ্টি হয়, যা আসন্ন নির্বাচনে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।’