ইউক্রেনের পক্ষে যুদ্ধে লড়ছে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কাপাসিয়ার যুবক তায়েব


আকরাম হোসেন রিপন
কাপাসিয়া থেকে:
গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার কাপাসিয়া ইউনিয়নের পাবুর গ্রামের মৃত ছামিরউদ্দিন আকন্দের বড় ছেলে হাবিবুর রহমান আইয়ুবের ছেলে মোহাম্মদ তায়েব। ইউক্রেনের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক পড়ুয়া বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এই যুবক সম্প্রতি রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক হামলা চালালে ঘরে বসে থাকতে পারেনি বাঙালির রক্তবাহী টগবগে এই তরুণ। পিতা মাতার শত বাঁধা উপেক্ষা করে ইউক্রেনের পক্ষে যুদ্ধে অংশ নিয়েছে সে। এ যুদ্ধে বিজয়ী হয়ে পিতামাতার কাছে ফিরে আসার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে প্রথম দিনেই ঘর ছেড়েছে সে জানায় তার পরিবার।


আইয়ুবের বড় বোন মরিয়ম জানান, তায়েব নিপ্রস্কি শহরের কিয়েভেস্কি টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটির স্নাতক শ্রেণির শিক্ষার্থী। গত কয়েকদিন আগে রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করলে তায়েব যুদ্ধ অংশ নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে। কিন্তু তার পিতা মাতা তাতে রাজি ছিলেন না। কিন্তু ছেলের দৃঢ় সিদ্ধান্তের কাছে পিতার মাতার আপত্তি কোনো কাজে আসে নি। তায়েব বলেছে, দেশের এই সংকটময় সময়ে দেশ ছেড়ে কোন দেশে আশ্রয় নেওয়া তার পক্ষে সম্ভম নয়। এমনকি দেশের পক্ষে যুদ্ধ করে মৃত্যু হলেও তার কোনো ভয় নেই। এ যুদ্ধে ইউক্রেনকে শত্রুমুক্ত করে বিজয়ের মালা পরে তবেই ঘরে ফিরবে বলে আশা প্রকাশ করেছে সে। এ কারণে প্রতিবেশি বিভিন্ন দেশ থেকে স্বজনদের আমন্ত্রণ পাওয়ার পরও ছেলের মায়ায় ইউক্রেন ছেড়ে কোথাও যাননি তায়েবের পিতা মাতা। খেয়ে না খেয়ে জীবন বাজি রেখে রাতের বেলা মাটির নিচের বাংকারে এবং দিনের বেলা কিছুটা নিরাপদ স্থানে আত্মগোপনে চলে যান তারা। তিনি আরো জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরেও আইয়ুবের সাথে তাদের কথা হয়েছে। সেখানে তাদের দুঃখ কষ্টের বিবরণ দিয়ে আইয়ুব জানিয়েছে তায়েব প্রতিদিনই ফোনে তাদের সাথে কথা বলছে এবং সে ভালো আছে।
আইয়ুবের ছোট ভাই রাসেল জানান, তিনি নিজেও দুই বছরের বেশি সময় ইউক্রেনে বসবাস করেছেন। তারা তিন ভাই ও দুই বোন। তার বড় ভাই হাবিবুর রহমান আইয়ুব প্রায় বত্রিশ বছর আগে স্টুডেন্ড ভিসায় ইউক্রেন গিয়েছিলেন। পড়াশোনার ফাঁকে অবসর সময়ে কাজ করে অল্প কয়েক বছরের মধ্যেই রাজধানী কিয়েভের নিপ্রস্কি জেলায় তৈরি পোশাকের নিজস্ব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে[ তুলেছেন তিনি। প্রায় বিশ বছর আগে ওই দেশের পাসপোর্ট পেলে সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাসের সিদ্ধান্ত নেন আইয়ুব। এ সময় ইউক্রেনের নাগরিক এলোনার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি। পরে মোহাম্মদ তায়েব (১৮) ও মোহাম্মদ কারীম (১৫) নামে তাদের দুটি ছেলে সন্তান জন্ম নেয়। পিতা আইয়ুব দুই ছেলে এবং স্ত্রীকে বাংলা ভাষা শিখিয়েছেন এবং স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে দু দফায় বেশ কয়েক মাস ধরে দেশে সময় কাটিয়ে গেছেন। দেশের স্বজনদের সাথে ঘনিষ্টভাবে মিশে গেছেন এলোনা, তায়েব ও কারীম।
আইয়ুবের চাচাতো ভাই আব্দুল আলীম জানান, তাদের ভাতিজা তায়েব ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ নিয়ে যে বীরত্বের পরিচয় দিয়েছে তাতে তারা গর্বিত। তাই গতকাল পাবুর গ্রামের প্রায় শতাধিক লোক মিলিত হয়ে মিলাদ মাহফিল করে তায়েবের জন্য দোয়া করেছেন।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত আরও সংবাদ

সাম্প্রতিক সংবাদ

আর্কাইব

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031  

প্রধান সম্পাদক : সাঈদুর রহমান রিমন
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ নজরুল ইসলাম আজহার

সার্বিক যোগাযোগ : চৌধুরী মল (৫ম তলা), ৪৩ হাটখোলা রোড, ঢাকা-১২০৩॥

গাজীপুর অফিস : এ/১৩১ (ইকবাল কুটির) হাবিব উল্লাহ স্মরণী, জয়দেবপুর, গাজীপুর-১৭০০॥

হটলাইন: ০১৭৫৭৫৫১১৪৪ ॥ সেলফোন : ০১৭১৬-৩৩৩০৯৬ ॥ E-mail: banglabhumibd@gmail.com

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত বাংলাভূমি ২০০৯-২০২৫