স্টাফ রিপোর্টার ॥ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ৯০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত জামায়াতের সাবেক আমির অধ্যাপক গোলাম আযমের ফাঁসি চেয়ে আপিল করতে যাচ্ছে সরকার।
সোমবার সকালে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এম কে রহমান জানান, দুপুরে সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আপিল আবেদন জমা দেবে।
যুদাধাপরাধের দায়ে সাজাপ্রাপ্ত জামায়াতের সাবেক আমির গোলাম আযম গত সোমবার রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছেন।
গত ১৫ জুলাই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে করীরের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল জনাকীর্ণ ট্রাইব্যুনালে গোলাম আযমকে ৯০ বছর কারাদণ্ড দেন।
ট্রাইব্যুনাল-১ এর অপর দুই সদস্য হচ্ছেন বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি আনোয়ারুল হক ।
গোলাম আযমের বিরুদ্ধে আনা পাঁচ ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধের ৬১টির সবগুলো অভিযোগই প্রমাণিত হয়েছে উল্লেখ করে এ রায় প্রদান করে ট্রাইব্যুনাল। এগুলো হলো ষড়যন্ত্র, পরিকল্পনা, উস্কানি, সংশ্লিষ্টতা এবং হত্যা ও নির্যাতন।
জামায়াত নেতা গোলাম আযমের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগে তাকে সুপরিয়র রেসপনসিবিলিটি ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বের দায়) হিসেবে বর্তায়।
গোলাম আযমের বিরুদ্ধে আনীত পাঁচ ধরনের অভিযোগের মধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় অভিযোগে ১০ বছর করে, তৃতীয় ও চতুর্থ অভিযোগে ২০ বছর করে ও পঞ্চম অভিযোগে ৩০ বছর মোট ৯০ বছর কারাদণ্ড দিয়েছে।
গোলাম আযমের বিরুদ্ধে পাকিস্থানি বাহিনীর সঙ্গে পরিকল্পনা ও ষড়যন্ত্র সংক্রান্ত ছয়টি, সহযোগিতা সংক্রান্ত তিনটি, উস্কানির ২৮টি, সম্পৃক্ততার ২৩টি এবং ব্যক্তিগতভাবে হত্যা-নির্যাতনের ১টিসহ মোট ৬১টি অভিযোগ আনা হয়েছিল।
রায়ে ট্রাইব্যুনাল বলেন, গোলাম আযম যে অপরাধ করেছেন তা মৃত্যুদণ্ডতুল্য। কিন্তু তার বয়স ৯১ বছর। এ বিবেচেনা করে তাকে ৯০ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হল। এ রায়ের মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধকালে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি মামলার বিচার শেষ হল।
এর আগে ঘোষিত চারটি রায়ের মধ্যে ট্রাইব্যুনাল-১ দিয়েছে একটি, বাকি তিনটি রায় দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল-২। এর তিনটিই বর্তমানে সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগে বিচারাধীন।
ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বলেন, “২৪৩ পৃষ্টার রায়ের মধ্যে রায়ের সংক্ষিপ্ত অংশ ৭৫ পৃষ্ঠা পাঠ করা হয়।”
সোমবার বেলা ১১টা ৫ মিনিট থেকে দুপুর ১টা ৫৫ মিনিট পর্যন্ত রায় পাঠ করেন ট্রাইব্যুনাল।