বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥ ঢাকা: গত দুই মাসের বন্যায় বাংলাদেশের ১ লাখ ৭০ হাজার হেক্টর ফসলি জমি প্লাবিত হয়েছে।
এসব জমিতে রোপা আমন, বোনা আমন ও আউশ ধান এবং শাক-সবজি ও মসলা জাতীয় ফসল ছিল বলে জানিয়েছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সরেজমিন উইংয়ের উপ-পরিচালক (মনিটরিং) রফিকুল ইসলাম।
উজান থেকে নেমে আসা পানিতে উত্তরাঞ্চল ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে। একে মৌসুমী বন্যা বলছেন আবহাওয়াবিদরা।
রফিকুল ইসলাম বলেন, “বন্যায় ফসলের প্রকৃত ক্ষতি কতটা হয়েছে, তা এখনও নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি। পানি নেমে গেলে চূড়ান্ত হিসাব করা হবে।
“তবে আমাদের হিসাবে (কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর) ১ লাখ ৭০ হাজার হেক্টর ফসলি জমি প্লাবিত হয়েছে।”
এই বন্যায় ধানের চেয়ে অন্য ফসলের ক্ষতির মাত্রা বেশি বলে জানান এই কৃষি কর্মকর্তা।
“ধানের বিশেষ ক্ষতি হয়ত হবে না, কারণ এখনও অনেক এলাকায় আমন রোপণ করা হচ্ছে। আবার কিছু নাবি জাতের ধান আছে যেগুলো বন্যার পানি নেমে গেলে ক্ষতিগ্রস্ত জমিতে লাগানো যাবে। তবে শাক-সবজি ও মসলা জাতীয় ফসলের ক্ষতি হয়েছে।”
বন্যায় ধানের মোট উৎপাদন কিছুটা কমলেও এর ফলে জমিতে পলি জমায় রবিশস্য উৎপাদন বাড়বে বলে আশা করছেন তিনি। “ফলে মোট কৃষি পণ্যের উৎপাদন কমবে না।”
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, চলতি মৌসুমে ৫২ লাখ ৫০ হাজার হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান চাষের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়। এ থেকে ১ কোটি ৩০ লাখ টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্য ছিল।
কিন্তু বন্যার কারণে লক্ষ্য অনুযায়ী রোপা আমন চাষ হয়নি, আবার অনেক জমি তলিয়ে এখন ধানের চারা গাছ পচে যাচ্ছে।
তিন লাখ ৯৯ হাজার হেক্টর জমিতে বোনা আমন চাষের লক্ষ্য রয়েছে সরকারের। বোনা আমন থেকে সরকার ৪ লাখ ৬০ হাজার টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে।
সারাদেশে ১০ লাখ হেক্টর জমিতে আউশের চাষ হয়েছে। এথেকে ২৪ লাখ টন চাল উৎপাদনের পরিকল্পনা ছিল সরকারের।
বন্যায় বেগুন, শিম, ঢেঁড়শ, পটল, কাঁচা মরিচ, ওল, কচু ইত্যাদি ফসলের ক্ষতি হয়েছে বলে জানান রফিকুল।
বন্যার কারণে বাজারে শাক-সবজির দাম দ্বিগুণ বেড়েছে। কাঁচা মরিচের দাম বেড়ে কেজি ১৫০ টাকায় উঠেছে।
বন্যা প্রতিরোধ বাঁধগুলো ঠিকমতো নির্মাণ না হওয়ায়ই ফসলি জমি প্লাবিত হচ্ছে বলে মনে করেন কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, হিমালয় অববাহিকা, বিশেষ করে ব্রহ্মপুত্র অববাহিকা থেকে নেমে আসা ঢলে নদীগুলোতে পানি বেড়ে বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে মৌসুমী বৃষ্টিপাত।
এই বন্যায় ২০টি জেলার বসতবাড়ি, শিক্ষা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান প্লাবিত হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, পানি বাড়ার আশঙ্কা আর নেই। এরই মধ্যে নদীগুলোতে পানি কমতে শুরু করেছে। সূত্র: বিডিনিউজ