ডায়রিয়া রোগীর চাপে হিমশিম খাচ্ছে চিকিৎসকরা

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥ ঢাকা: মাত্রারিক্ত গরমে দেশে ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়ছে। পাশাপাশি রোগীর সংখ্যা বাড়ছে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি) হাসপাতালে। রোগীর সংখ্যা বাড়ায় হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসক ও সেবিকাদের। রোগীদের অভিযোগ চিকিৎসক ও সেবিকারা রোগীদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করেছে না।

ডায়রিয়া রোগে শিশুদের পাশাপাশি বড়রাও আক্রান্ত হচ্ছে। প্রতিবছর অন্যান্য মাসের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণের বেশি রোগী ভর্তি হয় আইসিডিডিআরবি হাসপাতালে। এবারও তার ব্যত্যয় ঘটেনি।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে রোগী ভর্তি হয়েছে ৮১২ জন। গড়ে প্রতি ঘণ্টায় ৩৪ জন। কর্তৃপক্ষের দাবি, মাত্রারিক্ত গরম এবং অনিরাপদ পানি ও খাবার গ্রহণ করার কারণেই এসময় প্রতিবছর ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।

আইসিডিডিআরবি হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের মূল ভবনে রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় বাইরে তাঁবু টানিয়ে সেবা দেয়া হচ্ছে। তবে সেবার মান খুবই নিম্নমানের।

রাজধানী ছাড়াও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাসপাতালে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীরা ছুটে আসেছেন। তবে এর মধ্যে ঢাকা ও এর আশপাশের রোগীদের সংখ্যায় বেশি।

রাজধানীর মাদারটেক থেকে শিশু অর্পিতা নিদেকে নিয়ে এসেছেন মা শুকলা নিদে। গত ৫ দিন ধরে শিশুটি ডায়রিয়ায় ভুগছে। মায়ের দাবি, অতিরিক্ত গরমের কারণেই তার সন্তানের ডায়রিয়া হয়েছে।

সাভার থেকে শিশুকে নিয়ে আসা মা হেনা বেগম অভিযোগ করেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ স্যালাইন ছাড়া আর কোনো ওষুধ দেয়নি। তারপরও নার্স ও ডাক্তাররা ভালো ব্যবহার করছে না।

নারয়ণগঞ্জ থেকে আসা নাফিযা বেগম বলেন, ‘তিন আগে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়। এখনও সুস্থ হতে পারেনি। গতকাল এখানে ভর্তি হয়েছি।’

এদিকে রোগীদের অভিযোগকে অস্বীকার করেছেন দায়িত্বরত নার্সরা।

ক্যাটরিন কস্তা নামে এক নার্স বলেন, ‘আমরা কখনই রোগীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করি না। বেশি ভিজিটর থাকার কারণে, তাদের সঙ্গে আমাদের দুএকটি কথা হয়। এছাড়া রোগীদের চাপ এতো বেশি যে কথা বলার ভঙ্গিটা হয়তো ভালো ছিল না। এ কারণে রোগীরা ভুল বুঝতে পারে।’

হাসপাতালের সূত্রে, গত দুই মাসের তুলনায় মার্চ মাসে রোগীর চাপ ছিল প্রায় দ্বিগুণ। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা ৮ হাজার ৫৩১ জন। ফেব্রুয়ারি মাসে রোগীর সংখ্যা ৮ হাজার ৮১৩ জন। মার্চ মাসে রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৩৬৮ জনে। চলতি মাসে রোগীর সংখ্যা আরও বেশি। প্রতিবছর মার্চ-এপ্রিল মাসে রোগীর সংখ্যা বেশি থাকে। তবে গত বছরে তুলনায় এ বছর রোগীর সংখ্যা বেশি।

আইসিডিডিআরবি এর ক্লিনিক্যাল সার্ভিসের ইনচার্জ (প্রধান চিকিৎসক) ডা. প্রদীপ বর্ধণ বাংলামেইলকে বলেন, ‘গরমের কারণে স্বাভাবিকভবে পানির চাহিদা বেড়ে যায়। আর বর্তমানে নিরাপদ পানি খুবই অপ্রতুল। অনেক সময় পানি ফুটিয়ে খাওয়া সম্ভব হয় না। অনিরাপদ জেনেও পান করে। এ কারণে ডায়রিয়ার মতো রোগ দেখা যায়।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমানে হাসপাতালে অন্যান্য সময়ের চেয়ে দ্বিগুণের বেশি রোগী আসছে। এরপরও আমরা কোনো রোগীকে ফিরিয়ে দিচ্ছি না। বাইরে তাঁবু টানিয়ে তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি।’

ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে গত দুই মাসে কতজন রোগী মারা গেছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে গত দুই মাসে কোনো রোগী মারা যায়নি। তবে বিভিন্ন কারণে কিছু রোগী মারা গেছে, সে হিসাব আমার জানা নেই।’

ডায়রিয়া থেকে রক্ষা পেতে ডা. প্রদীপ বর্ধণের পরামর্শ হলো, নিরাপদ পানি পান করা, টাটকা খাবার খাওয়া, টয়লেট থেকে আসার পর সাবান দিয়ে ভালো ভাবে হাত ধোয়া এবং খাওয়ার পূর্বে ভালো ভাবে হাত ধুয়ে নেয়া। বাংলামেইল ২৪ডটকম

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত আরও সংবাদ

সাম্প্রতিক সংবাদ

আর্কাইব

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
2627282930  

প্রধান সম্পাদক : সাঈদুর রহমান রিমন
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ নজরুল ইসলাম আজহার

সার্বিক যোগাযোগ : চৌধুরী মল (৫ম তলা), ৪৩ হাটখোলা রোড, ঢাকা-১২০৩॥

গাজীপুর অফিস : এ/১৩১ (ইকবাল কুটির) হাবিব উল্লাহ স্মরণী, জয়দেবপুর, গাজীপুর-১৭০০॥

হটলাইন: ০১৭৫৭৫৫১১৪৪ ॥ সেলফোন : ০১৭১৬-৩৩৩০৯৬ ॥ E-mail: banglabhumibd@gmail.com

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত বাংলাভূমি ২০০৯-২০২৫