সাতক্ষীরা প্রতিনিধি ॥ ভারতের বরাক নদীর মোহনায় টিপাইমুখ বাঁধ দিতে ৮২ লাখ গাছ কেটে ফেলবে ভারত সরকার। তিনশ’ বর্গকিলোমিটার বিস্তৃত মনিপুর এ বনাঞ্চলে থাকা চেনা-অচেনা হরেক রকম প্রাণী-পশুপাখির অভয়ারণ্যও ভেঙে ফেলা হবে। এ নিয়ে অচিরেই ভারতের দু’টি মন্ত্রণালয় বৈঠক বসছে।
শনিবার কলকাতার প্রভাবশালী দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা এ খবর প্রকাশ করেছে।
প্রকাশিত খবরে বলা হয়, জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়তে মনিপুর ও মিজোরাম জোড়া বিশাল আয়তনের জঙ্গল কেটে ফেলা হবে। সেখানে নির্মান করা হবে টিপাইমুখ বাঁধ, যা নিয়ে বাংলাদেশের সাথে টানাপোড়েন চলছে। এ ব্যাপারে ছাড়পত্র নিতে ভারতের বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় বৈঠকে বসবে।
টিপাইমুখ বাঁধ বিরোধী এ্যাকশন কমিটির বরাত দিয়ে আনন্দবাজার পত্রিকা আরও জানায়, জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়তে সচরাচর যতটা সবুজ ধ্বংস হয় এক্ষেত্রে তার ১০০ গুন বেশী ক্ষতি হবে। বাঘ, চিতাবাঘ, মেঘলা চিতাবাঘ , কালো চিতা বাঘ, ভালুক, মলয় ভালুক, ঘড়িয়াল ,পাইথন ও ধনেশের মতো বিরল প্রাণীর আবাসস্থল এই অরণ্য নষ্ট হলে তার বিরুপ প্রভাব পড়বে মনিপুরে।
একই সাথে এসব বিরল প্রজাতির প্রাণী ও উদ্ভিদের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়বে। অরণ্যের বাঁশের ওপর নির্ভরশীল হাজার হাজার মানুষের জীবনজীবিকা বিঘিœত হবে। টিপাইমুখ বাঁধ দিতে মনিপুরের ৮২ লাখ গাছ কাটা ছাড়াও মিজোরামের ১৫৫২ হেক্টর বনভূমি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যাবে বলে এ্যাকশন কমিটি জানিয়েছে।
পত্রিকার রিপোর্টে আরও বলা হয় দেড় হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম ওই প্রকল্পের প্রস্তাব ১৯৮৪ সালে গৃহীত হয়। এতে ব্যয় ধরা হয় ৯২১১ কোটি টাকা। ২০০৮ সালে ভারতের পরিবেশ মন্ত্রণালয় বরাক ও তুইভাই নদীর ওপরকার এই প্রকল্পের ছাড়পত্র দেয়। এরপর ২০১১ সালে কেন্দ্রের সাথে মনিপুরের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
টিপাইমুখ বাঁধ দেয়ার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের মানুষ এখনও সোচ্চার রয়েছে। অপরদিকে ভারতেও টিপাইমুখ বিরোধী এ্যাকশন কমিটি তাদের আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে।