বিশেষ প্রতিনিধি ॥
গাজীপুর: কাপাসিয়ায় সরকারি ‘ক’ তফসিলের (খাস) জমি খারিজ প্রদান করা হয়েছে। পরবর্তীতে খারিজটি বাতিল হলেও অসাধু ভূমি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেই।
সরেজমিনে জানা যায়, কাপাসিয়া উপজেলা সনমানিয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিস থেকে নামজারি জমাভাগের নথি নং- ১১৩/১৫-১৬, খারিজের জন্য প্রস্তাব পাঠান উপজেলা ভূমি অফিসে। এ নথির আবেদনকারী নজরুল ইসলাম, মোঃ কাউসার উভয় পিতামৃত: আঃ বাতেন, মোসা: জড়িনা বেগম, স্বামী: হুমায়ুন কবির। বিগত ২২/১২/২০১৫ খ্রিস্টাব্দে ওই নথিটি খারিজের জন্য প্রস্তাব পাঠান তৎকালীন উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা গিয়াস উদ্দিন ও সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আব্দুল হাই সিকদার। নথিটি উপজেলা ভূমি অফিস থেকে অনুমোদন পায়; যার জোত নং- ৮১১, তারিখ: ৩০/১২/২০১৫ খ্রিস্টাব্দ। জোতটি খোলেন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আব্দুল হাই সিকদার।
ওই নথিটিতে সোনাপুর মৌজার খতিয়ান নং: ১২৯/৪৪৪, দাগ নং: ১০৩৪/১৪২৭, প্রস্তাবিত জমির পরিমাণ (দুই দাগে) শূন্য দশমিক ৬৬৫০ একর। এর মধ্যে একটি দাগে ৩৫ শতাংশ জমি ‘ক’ তফসিলের; বাকী জমি ‘খ’ তফসিলের অন্তর্ভূক্ত।
এ অনিয়মের বিষয়টি কাপাসিয়া উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) নাজমুস সাকিবের দৃষ্টি গোচর হলে গত ১৬/০৮/১৮ খ্রিস্টাব্দে খারিজটি বাতিলের আদেশ প্রদান করেন।
ওই অফিসের তৎকালীন উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা গিয়াস উদ্দিন বর্তমানে গাজীপুর মহানগরের সালনা ভূমি অফিস এবং সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আব্দুল হাই সিকদার কাপাসিয়া উপজেলার কড়িহাতা ইউনিয়ন ভূমি অফিসে কর্মরত আছেন।
একটি বিশ্বস্থ সূত্র জানায়, মোটা অংকের ঘুষের টাকায় এ খারিজটি সম্পন্ন হয়ে ছিল।
এ বিষয়ে উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা গিয়াস উদ্দিন স্বীকার করে বলেন, হ্যাঁ, একটি খারিজ হয়েছিল; পরে বাতিল হয়েছে।
সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আব্দুল হাই সিকদার বলেন, ওই সময় আমি কাপাসিয়ার রাণীগঞ্জ ইউনিয়ন ভূমি অফিসে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন কালে ওই অফিসে (রাণীগঞ্জে) গিয়ে আমার প্রতিস্বাক্ষর নেয়।
এ বিষয়ে কাপাসিয়া উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) নীলিমা রায়হানা উক্ত খারিজটি বাতিল করা হয়েছে বলে জানান। অসাধু ভূমি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়ে ছিল কী না জানতে চাইলে তিনি গত রবিবার দৈনিক বাংলাভূমিকে বলেন, আমি এখানে এসেছি তিন মাস হয়েছে। তবে আমার জানামতে এ বিষয়ে কোন বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব ও এলএ) সঞ্জীব কুমার দেবনাথ বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে কাপাসিয়ার এসিল্যান্ড সাহেবকে বলবো- এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নেয়ার; সঠিক হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যে।